বিদ্যাধরী নদী থেকে বেরিয়ে এসেছে খালটি। খালের একদিকে হাড়োয়া এবং অপরদিকে মিনাখাঁ। উত্তর ২৪ পরগনার এই দুই ব্লকের দু’টি পঞ্চায়েতের দু’টি গ্রামের মধ্যে যোগাযোগ বলতে বাঁশের নড়বড়ে একটা সাঁকো। শীত-গ্রীষ্মে খাল জল কম থাকায় পারাপারে তেমন সমস্যা হয় না। কিন্তু বর্ষা পড়লেই প্রমাদ গোনেন দুই গ্রামের মানুষ। কানায় কানায় ভরে ওঠা খালের জল প্রায় ছুঁয়ে থাকে সাঁকো। নড়বড়ে ওই সাঁকো দিয়ে তখন ইষ্টনাম জপতে জপতে পারাপার করেন এলাকার মানুষ। বলাবাহুল্য দুর্ঘটনাও ঘটে। সমস্যার সমাধানে স্থানীয় বাসিন্দারা ওই বাঁশের সাঁকোর পরিবর্তে কংক্রিটের সেতু অন্যথায় কাঠের সেতুর দাবি জানিয়েছেন। ব্লক প্রশাসনের তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। |
ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যধরী নদী থেকে বেরিয়ে আসা জগন্নাথ খালের একদিকে হাড়োয়া ব্লকের খাসবালান্দা পঞ্চায়েতের শ্যামলা বিহারী গ্রাম, অপরদিকে মিনাখাঁ ব্লকের আটপুকুর পঞ্চায়েতের আটপুকুরবিহারী গ্রাম। দু’টি গ্রামের মাঝেপ্রায় দু’শো ফুট লম্বা বাঁসের সাঁকো গ্রামদু’টিকে জুড়েছে। শুধু ওই দুই গ্রামই নয়, আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষও ওই সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করেন। হাড়োয়া হাট, থানা, হাসপাতাল এমনকী বসিরহাট শহর ও কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে গেলে ওই বাঁশের সাঁকোই ভরসা গ্রামবাসীদের। উচিলদহ, গড়, আটপুকুর, মাঝেরপাড়া, ষষ্ঠীতলা, কুয়াটি ইত্যাদি গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, রাতবিরেতে কোনও অসুস্থকে হাসপাতালে ভর্তির জন্য বাঁশের সাঁকো দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় প্রচণ্ড সমস্যায় পড়তে হয়। আটপুকুর বিহারী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মুকিদ গোলদার, শ্যামলাবিহারী গ্রামের মোজামেমল দফাদারের কথায়, “নামে খাল হলে কী হবে, বেশ চওড়া। খালের উপর বাঁশের সাঁকো দু’চার মাসের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়। তখন ওই অবস্থায় পারাপার বেশ কঠিন ও বিপদসঙ্কুল হয়ে পড়ে। তাই ওখানে কংক্রিটের, নিদেনপক্ষে কাঠের সেতু হলেও সমস্যার অনেকটা সুরাহা হয়।”
মিনাখাঁ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মোর্তাজা মোল্লা বলেন, “জগন্নাথ খালের উপরে কংক্রিটের সেতু জরুরি। বিশেষ করে থানা ও ব্লক-সহ সরকারি দফতরে যোগাযোগের জন্য এই সেতুটি এলাকার মানুষের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিষয়টি সুন্দরবন উন্নয়ন দফতর এবং সাংসদ ও স্থানীয় বিধায়ককে জানানো হয়েছে। আশা করি কংক্রিটের সেতুর কাজ শীঘ্রই শুরু করতে পারব।” |