খেলার খবর
মুখে বাঁশি, সাইডলাইন ধরে
দৌড়চ্ছেন জিরাটের দেবযানী

মাঠে প্রতিদিন ঝামেলা। সামান্য বিষয় নিয়ে দু’দলে হাতাহাতি। মাঠে নেমে পড়ছে দর্শক। লিগ কী ভাবে শেষ হবে ভেবে কূল পাচ্ছেন না জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্তারা। ঠিক হল রেফারি আনা হবে জেলার বাইরে থেকে। বর্ধমানের বাইরে থেকে বেশ কিছু রেফারি এলেন জেলা ও মহকুমা ফুটবল লিগ পরিচালনা করতে। তাঁদের মধ্যে এক জনকে জেলা ফুটবল লিগে রাধারানি স্টেডিয়ামে আরএইউসি বনাম পুলিশ এসির ‘হাই ভোল্টেজ’ ম্যাচে বাঁশি হাতে এক তরুণীকে লাইন্সম্যানের ভুমিকায় দেখে দু’দলের সমর্থকেরা বেশ চমকে উঠেছিলেন। জেলার ফুটবল ইতিহাসে সেই প্রথম কোনও মহিলা কালো জার্সি পড়ে সাইড লাইন ঘেঁষে দৌড়াচ্ছেন।
জেলা ফুটবলে ইতিহাস সৃষ্টি করা এই মহিলার নাম দেবযানী অধিকারী। বয়স বাইশ। বাড়ি হুগলির জিরাটে। কয়েক বছর আগে সিআরএর (ক্যালকাটা রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশন) পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। কলকাতার তৃতীয় ও চতুর্থ ডিভিশন ফুটবল লিগেও রেফারিং করেছেন তিনি। রাজ্যের মহিলা ফুটবল যখন প্রচার ও পরিকাঠামোর অভাবে রীতিমতো ধুঁকছে তখন রেফারি হতে গেলেন কেন? দেবযানীদেবী জানান, তাঁর পরিবারে ফুটবলের রেওয়াজ আছে। জ্যাঠার হাত ধরে ছোট থেকেই ফুটবল মাঠে যাতায়াত করছেন তিনি। তখন থেকেই ভাল লেগে যায় এই খেলাটাকে। মাঠে ৯০ মিনিট দৌড়াতে সমস্যা হয় না? দেবযানীদেবী বলেন, “অ্যাথলেটিক্স করতাম। নানা দুরত্বের দৌড়ে নিয়মিত যোগ দিয়েছি। শটপাট ছুড়তাম। অনেক পুরষ্কারও পেয়েছি। দৌড়টা আমার আয়ত্তেই রয়েছে।”


মাঠে দেবযানী। —নিজস্ব চিত্র।
রেফারিং কখনওই গোলাপ বিছানো পেশা নয়। মাঠের মধ্যে ও বাইরের বিভিন্ন চাপ, কখনও কখনও গালিগালাজ নিয়মিত সহ্য করতে হয় কালো জার্সির মালিককে। দেবযানীদেবীকেও মাঝে মাঝেই মাঠে বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। তাঁর কথায়, “মাঠে সামনাসামনি গালিগালাজ করতে কাউকে দেখিনি। যদি দেয় তা হলে সরাসরি লাল কার্ড দেখিয়ে তাকে মাঠ থেকে বের করেই দেব। তবে মাঠের বাইরে থেকে কিছু অশালীন কথাবার্তা উড়ে আসে। সে সব তো উপেক্ষাই করতে হয়।”
গত মরসুমের পরে এই মরসুমেও তিনি বাঁশি মুখে মাঠে নেমেছেন। চলতি নভেম্বরে বর্ধমানের স্পন্দন মাঠে রেফারি হয়ে আন্তঃজেলা স্কুল ফুটবলের ম্যাচ পরিচালনা করেন তিনি। উচ্চমাধ্যমিক, মাধ্যমিকের ছাত্রদেরও কড়া হাতে পরিচালনা করেন তিনি। ছাত্রদের হাজার আবেদনেও বদলাননি নিজের সিদ্ধান্ত।
মাঠের ভিতর ও বাইরের এত চাপের মধ্যে নিজেকে ঠিক রাখেন কী করে? দেবযানীর উত্তর, “ফুটবল তো উত্তেজনারই খেলা। মাঠে তো আর নীরবতা পালিত হবে না! সব কিছুর মধ্যেই ম্যাচ খেলাতে হবে।”
বর্ধমান জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্তারা ইতিমধ্যেই এই তরুণীকে ‘লম্বা রেসের ঘোড়া’ বলতে শুরু করেছেন। প্রচার বিমুখ দেবযানী অবশ্য সে সব কিছু নিয়ে ভাবতে নারাজ। ভবিষ্যতে তিনি বাঁশি মুখে ওডাফা-চিডিকে সামলাতে চান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.