ধান খেত, মাঠঘাট পুকুর, সুপারি বাগান পেরিয়ে নদীর কাছে। চোখের আয়নায় নীলাকাশ। নদী, তার বুকে জেগে ওঠা চর। উত্তুরে হাওয়া বইতে শুরু করলেই এই সব দ্বীপ হয়ে যায় পরিযায়ীদের আস্তানা। গাইডের সতর্ক তর্জনীতে হরিণ, বাইসন কিংবা ময়ূরের দর্শনলাভ। দৃষ্টিসীমায় বাধা পড়ে থাকে টলটলে জলে পালতোলা নৌকার সারি। পাড়ে দাঁড়িয়ে এ সব জলছবি দেখতে দেখতেই গড়িয়ে যাবে বেলা। জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকে ভ্রমণার্থীদের নতুন ঠিকানা। পানবাড়ি বাজার ছাড়িয়ে ৩ কিমি পথ পার হলে গাড়ির চাকা ছায়াঘন যে পথ ধরে এগিয়ে চলে নাম তার চোপরামারি। সওয়াড়ি নিয়েই পার হয়ে যায় পায়ের পাতা ডোবানো জলের ‘ধাড়োহাতি’ নদী। গতি কমিয়ে থমকে দাঁড়িয়ে গেছি। দৃষ্টি বিনিময় হয় জলঢাকা, মূর্তি, ডায়না নদীর সঙ্গমের স্রোতের সঙ্গে। পাড় বরাবর কদম গাছের ছায়ায় ছায়ায় খড়ের চালার নীচে খানিক বিশ্রাম। |
পর্যটকদের দেখভালের দায়িত্ব তুলে নিয়েছে ‘মূর্তি জলঢাকা ডায়না স্বনির্ভর গোষ্ঠী’। অনন্ত, পরিমল, মদন, জিতেন আর ফুলেন, ঝন্টু, অতুলদের মতো নদীর ঘাটের মাঝি মিলিয়ে জনা বারোর দল। গোষ্ঠীর পরিচালক মানিক সরকার বলেন, “জায়গাটা আমাদের ভাল লেগে যায়। মনে হয় পর্যটকরা এখানে এলে নতুন কিছুর স্বাদ পাবেন। সে ভাবনা থেকে এটাকে সাজিয়েছি।” শুধু নদীর কাছে যাওয়া নয়, নৌবিহার করার মজাও উপভোগ করতে পারেন। জলের বুকে ভাসতে ভাসতে নৌকা ভিড়বে লালপাট্টা, নজরকুঠি দ্বীপে। খয়ের, লালি, শিশু গাছের মাঝে বা লালপাট্টার ঘাসবনে বুনোদের আমনে-সামনে। শীত পড়তে না পড়তে দ্বীপে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে পরিযায়ীরা। নৌকায় দোতারায় তখন লোকগীতিতে মাটির সুরের সুবাস, গহীন জলের বুকে মন হারানোর বেলা।
|
৯-১০ নভেম্বর বক্সিরহাটে বশিষ্ঠ ইনস্টিটিউট ফর নর্থ বেঙ্গল অ্যান্ড নর্থ-ইস্ট ডেভেলপমেন্টাল স্টাডিজ জাতীয় স্তরের সেমিনারের আয়োজন করে। ২ দিনের সেমিনারে বিষয় ছিল, উত্তরবঙ্গ ও উত্তর-পূর্ব ভারতে অনগ্রসর গোষ্ঠীর সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিবর্তনের রূপরেখা। প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজ-বিজ্ঞানী অজিত বরুয়া। হাজির ছিলেন সংস্থা সভাপতি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক আনন্দগোপাল ঘোষ। তিনি জানান, আলোচনাচক্রে অসম ও পশ্চিমবঙ্গের ৩০ গবেষক-অধ্যাপক অংশ নেন। সেমিনারে আর্থিক সহায়তা পাওয়া গিয়েছে ভারত সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়ন দফতরের ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ সোশ্যাল রিসার্চ-এর থেকে। তিনি আরও জানান, সংস্থার নিজস্ব ভবন নেই। তবে ভবন নির্মাণের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচ্চ শিক্ষ দফতর থেকে ২৮ লক্ষ টাকার অনুদান পাওয়া গেছে। এই মাসেই ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে। |