গোসাবার বিভিন্ন দ্বীপে একেই বহু দিন পাকা রাস্তা নেই। যাও বা রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে, নিম্নমানের জিনিসপত্র দিয়ে সেই রাস্তা তৈরি হচ্ছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। তাঁদের বক্তব্য, “অত্যন্ত নিম্নমানের জিনিসপত্র দিয়ে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পের রাস্তা তৈরি হচ্ছে। রাস্তা তৈরির আগে যে সব জিনিস ব্যবহার করা হবে বলে বলা হয়েছিল, তা আদৌ ব্যবহার করা হচ্ছে না।” যতটুকু কাজ হয়েছে, ইতিমধ্যেই তা ভেঙে পড়ছে বলে অভিযোগ। যদিও ঠিকাদার সংস্থা এমন দাবি অস্বীকার করেছে।
গোসাবা বিধানসভা এলাকার বেলতলি থেকে শম্ভুনগর প্রায় ৮ কিলোমিটার রাস্তা, বিরাজনগর থেকে মথুরাপুর প্রায় ২২ কিলোমিটার রাস্তা, সাতজেলিয়া থেকে দত্তের অফিস প্রায় ১৬ কিলোমিটার রাস্তা, দয়াপুর থেকে লাহিড়ীপুর (পিপলিসেরি বাজার) প্রায় ১২ কিলোমিটার, হেতালখালি থেকে ছোট মোল্লাখালি প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তা প্রধান মন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে তৈরি হচ্ছে। নিয়ম মতো ওই রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে প্রথমে রাস্তার দু’ধারে ইট দিয়ে গাঁথার কথা। তারপর বালি, ইটের খোয়ার সঙ্গে আরবিআই কেমিক্যাল মিশিয়ে রোলার দিয়ে রোলিং করিয়ে তার উপর বালি, সিমেন্ট, স্টোন চিপ দিয়ে ঢালাই করার কথা। ৬ ইঞ্চি পুরু ঢালাই হবে। তবে সাধারণ মানুষের অভিযোগ, এসব কিছুই না করে কংক্রিটের ঢালাই করা হচ্ছে। |
স্থানীয় বাসিন্দা সিদ্দিক মোল্লা, বাদল মণ্ডলেরা বলেন, “যেভাবে রাস্তা তৈরির কথা বলা হয়েছিল, আদৌ তা হচ্ছে না। বালি, পাথরের সঙ্গে কম সিমেন্ট দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যেই অনেক জায়গায় রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না।” তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদার সংস্থার তরফে জামাল সাহা বলেন, “প্রথম পর্যায়ে বিরাজনগর থেকে মথুরাখণ্ডের রাস্তার ৭ কিলোমিটার অংশ তৈরির অনুমতি পেয়েছি। ওয়ার্ক অর্ডারে যে ভাবে রাস্তা তৈরির কথা বলা হয়েছে, সেই ভাবেই কাজ হচ্ছে।”
কিন্তু সে কথা মানছেন না প্রশাসনিক কর্তা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতারাও। গোসাবার আরএসপির জেলা পরিষদ সদস্য উত্তম সাহা বলেন, “নিম্নমানের জিনিস দিয়ে রাস্তা তৈরি হচ্ছে বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিতে আমরা চাই না। যাতে ভালভাবে রাস্তা তৈরি করা যায়, তা স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েছি।”
গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরে সরেজমিনে বিষয়টি দেখতে যাই। রাস্তা তৈরির ধরন দেখে আমারও পছন্দ হয়নি। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি।”
বিডিও সুমন চক্রবর্তী বলেন, রাস্তা তৈরির দেখভাল জেলা পরিষদের করার কথা। বিষয়টি জেলা স্তরে জানিয়েছি।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি সামিমা শেখ বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।” |