দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের বাগনান স্টেশনের পাশেই রয়েছে বাগনান বাসস্ট্যান্ড। কিন্তু সেখানে নয়, স্থানাভাবে রাস্তার পাশেই দাঁড়িয়ে থাকছে বাস। নিট ফল, নিত্য যানজট। অফিস-কাছারি বা স্কুল-কলেজ পৌঁছতে নাকাল হচ্ছেন চাকুরিজীবী ও পড়ুয়ারা।
১৯৮০ সালের গোড়ায় রেলের কাছ থেকে বিঘা দু’য়েক জমি নিয়ে বাগনান-১ পঞ্চয়েত সমিতির তত্ত্বাবধানে তৈরি হয় এই বাসস্ট্যান্ড। বাস ছাড়াও এখানে দাঁড়ায় ম্যাজিক গাড়ি, ভ্যানো, অটো-ট্রেকার-সহ প্রায় শতাধিক যান। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে সেই সংখ্যাটা। কিন্তু সম্প্রসারিত হয়নি বাসস্ট্যান্ডের জমি। উপরন্তু রয়েছে হকারের সমস্যা। ফলে বাস অনেক সময়েই দাঁড়িয়ে থাকছে স্ট্যান্ডের বাইরে। যার ফলে স্টেশন থেকে বেরিয়েই বাস ধরতে গিয়ে নাজেহাল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
বাসস্ট্যান্ডের এক কিলোমিটারের মধ্যেই পড়ে বাগনান থানা, গ্রামীণ হাসপাতাল, বাগনান কলেজ এবং বাগনান হাইস্কুল। এ ছাড়াও, রয়েছে পঞ্চায়েত অফিস, ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য বহু গুরুত্বপূর্ণ অফিস। হাওড়ার শ্যামপুর, কমলপুর, গাদিয়াড়া, আমতা, বাকসি ছাড়াও মেচেদা, কলকাতার ধর্মতলা এবং হাওড়া থেকে বহু বাস এসে দাঁড়ায় এই স্ট্যান্ডে। |
স্কুলছাত্রী সুমনা দেব, পাপিয়া ঘোষরা বলেন, “বাস এবং অন্যান্য গাড়ি উল্টোপাল্টা ভাবে দাঁড়িয়ে থাকায় স্ট্যান্ড থেকে গাড়ি বেরোতে ঢুকতে-অসুবিধা হয়। হাতে বেশি সময় না নিয়ে বেরোলে স্কুলে পৌঁছতে দেরি হবেই।” একই বক্তব্য বাগনান এলাকার বাসিন্দা সৌমেন রায়ের। তাঁর কথায়, “অফিস যাওয়ার সময়ে বাস ধরাটা এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা।”
ওই বাসস্ট্যান্ডে যে সব যাত্রিবাহী গাড়ি দাঁড়ায়, তাদের কাছ থেকে দৈনিক টাকা করে নেয় বাগনান-১ পঞ্চায়েত সমিতি। সেই টাকাতেই তারা বছরভর বাসস্ট্যান্ডের রক্ষণাবেক্ষণ করে। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, দিনের পর দিন গাড়ির সংখ্যা বেড়ে চললেও বাসস্ট্যান্ড সম্প্রসারণের কাজে তারা কোনও আগ্রহ দেখায়নি। বাসস্ট্যান্ডের সমস্যার কথা স্বীকার করে বাগনান-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নয়ন হালদার বলেন, “জমির অভাবের কারণে বর্তমান বাসস্ট্যান্ডটি সম্প্রসারণের কোনও সুযোগ নেই। তবে বাগনান রেলওয়ে উড়ালপুলের কাজ শেষ হয়ে গেলে উড়ালপুল-সংলগ্ন জমিতে আরও একটি বাসস্ট্যান্ড করার পরিকল্পনা আছে। তা হলে বর্তমান বাসস্ট্যান্ডের উপরে গাড়ির চাপ অনেকটাই কমবে।” অন্য দিকে, বাগনানের তৃণমূল বিধায়ক রাজা সেন দাবি করেন, উড়ালপুল সংলগ্ন জমিটি পূর্ত (সড়ক) দফতরের অধীনে। তাঁর কথায়, “ইতিমধ্যেই আমরা ওই জমিটি যাতে বাসস্ট্যান্ড করার জন্য দেওয়া হয়, সে জন্য পূর্ত (সড়ক) দফতরে প্রস্তাব দিয়েছি। আশা করি সমস্যার সুষ্ঠ সমাধান হয়ে যাবে।” |