|
|
|
|
সম্পাদক সমীপেষু |
‘উত্তম তো আমাদের আটকে রাখেনি’ |
নিঃশব্দে অনিল চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয় জীবনের ষাট বছর পার হল। বাঙালির স্মরণে তিনি এলেন না। ১৯৫২-য় ঋত্বিকের নাগরিক-এ প্রথম অভিনয়। সে ছবি মুক্তি পায়নি তখন। তাই ১৯৫৩ সালে মুক্তি-পাওয়া ‘যোগবিয়োগ’ ছবিতেই প্রথম অভিনয় বলা যেতে পারে অনিল চট্টোপাধ্যায়ের। নায়কের ভূমিকায় প্রথম অভিনয় প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘ময়লা কাগজ’ ছবিতে। তখন পরিচালক অর্ধেন্দু মুখোপাধ্যায়ের প্রোডাকশন হাউসে তিনি সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। এর আগে সেন্ট জেভিয়ার্স থেকে গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন। উৎপল দত্তের সঙ্গে কলেজে ইংরেজি নাটকে অংশগ্রহণ করেছেন। আকাশবাণীতে অডিশন দিয়েছেন সৌমিত্রর সঙ্গে।
অভিনয় জীবন শুরু নায়কের বন্ধু গোছের চরিত্র দিয়ে। তখন উত্তম-সুচিত্রা মধ্যগগনে। তারই মধ্যে অগ্নিসংস্কার ছবিতে সাইকোপ্যাথ ভিলেনের ভূমিকায় অভিনয় করে নজর কাড়লেন অনিল চট্টোপাধ্যায়। প্রেস শো দেখে উত্তমকুমার বলেছিলেন, ‘অনিল, তুই দেখিস, এ ছবিতে তোর খুব নাম হবে।’ তার পর বেশ কিছু ছবিতে নায়কের ভূমিকায়: আহ্বান, উল্কা, বালুচরী, নতুন জীবন, সোনাবউদি। |
|
‘প্রথম বসন্ত’। সঙ্গে মাধবী মুখোপাধ্যায়। |
অসংখ্য ভাল ভাল চরিত্র জীবন্ত করে রেখে গেছেন সেলুলয়েডে। কে ভুলবে মেঘে ঢাকা তারা-র দাদাকে। আগুন ছবির পরোপকারী তিন বন্ধুর এক বন্ধু। সাগিনা মাহাতোর শ্রমিক লিডার, কাচের স্বর্গ-তে ডাক্তার, বনপলাশির পদাবলীতে এক পা খোঁড়া রগচটা ডাক্তার, নির্জন সৈকতে’র যুবকটি, আঁধার পেরিয়ে-তে সাংবাদিক, অমানুষ-এ পুলিশ অফিসার, মহানগর-এর চাকরি চলে যাওয়া নায়ক, পোস্টমাস্টার চরিত্র, কাঞ্চনজঙ্ঘায় প্লেবয় কত বিভিন্ন এবং বিচিত্র চরিত্রকে তিনি ফুটিয়েছিলেন অনবদ্য অভিনয়ে।
বসুশ্রী কফিহাউসে দীর্ঘ দিনের আড্ডা ছিল অনিলদার সঙ্গে আমাদের। এমন সব কথা বলতেন যা আমাদের অবাক করে দিত।
এক দিন প্রশ্ন করেছিলাম, অনেক হিট ছবির হিরো হয়েও উত্তমকুমারের ইমেজটা ছুঁতে পারলেন না কেন? বললেন, ‘সেটা আমাদের অপারগতা। উত্তম তো আমাদের হাত দিয়ে আটকে রাখেনি। হলের সামনে দাঁড়িয়ে বলেনি, অনিলের ছবি দেখবেন না। তা ছাড়া, সেই সময়ে আমি অনেক অফ বিট ছবি করেছিলাম যেগুলো সময়ের চেয়ে এগিয়ে ছিল। মেঘে ঢাকা তারা, আহ্বান, অগ্নিসংস্কার, আগুন, মরুতীর্থ হিংলাজ এগুলো সো-কলড উত্তম-সুচিত্রার গল্পের অনেক বাইরের গল্প।’
আরও একটা কথা বলেছিলেন, ‘তবে কী জানিস, হলিউড ছবিতে দেখবি, সব সময় সেকেন্ড লিডে খুব জবরদস্ত অভিনেতাকে নেয়, যাতে হিরোর স্টার ইমেজের সঙ্গে টক্কর দিতে পারে। সে দিক থেকে আমি বাংলা সিনেমার কাছে ঋণী। ওরা আমাকে সেকেন্ড লিড চরিত্রটাতে সুযোগ দিয়ে এসেছে। উত্তমের সঙ্গে অগ্নিসংস্কার, আমি সে ও সখা, জতুগৃহ, বনপলাশির পদাবলী এগুলো তো প্যারালাল রোল। আতঙ্ক, এক যে ছিল দেশ, রাজা, আঁধার পেরিয়ে, সাগিনা মাহাতো তপন সিংহ কত ভাল ভাল চরিত্রে আমায় সুযোগ দিয়েছে ভাব। মানিকদার দেবী-তে ছোট্ট এক সিন সৌমিত্র’র বন্ধু হিসেবে। সেখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা হয়ে মহানগর-এ নায়ক।
অথচ এমন এক জনের কথা কারও মনে পড়ল না!
তাপস চক্রবর্তী। কলকাতা-২৬
|
কৃষি আমাদের ভিত্তি |
রাজ্য সরকারের সম্প্রতি ঘোষিত শিল্পনীতিতে সঙ্গত কারণেই জোর দেওয়া হয়েছে মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পের সঙ্গে বাজারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনের উপর। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও বিকল্প ব্যবস্থার সাহায্য নিয়ে কর্মসংস্থানের জোয়ার আনতে কুটিরশিল্প ও হস্তশিল্পের গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলে তাঁর সদিচ্ছা ও তৎপরতা দেখিয়েছেন।
কৃষিভিত্তিক ব্যবসার সাহায্যে গ্রামবাংলায় বেকার যুবকযুবতীদের উৎপাদনমুখী কাজের সুযোগ তৈরি করে আত্মনির্ভর করা যায়। এই উদ্দেশ্যে পঞ্চায়েত ও ব্লক স্তরে স্থানীয় চাহিদা ও সম্পদকে কাজে লাগিয়ে গ্রামীণ শিল্প ও কৃষিসংক্রান্ত বিকাশ সম্ভব। আজকের দিনে তা জরুরিও বটে। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতর পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে যথাযথ উদ্যোগ নিলে গ্রাম বাংলায় বিভিন্ন ধরনের গ্রামীণ শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যায়। এমন অনেক কৃষিভিত্তিক শিল্প আছে, যেখানে মূলধন কম লাগে কিন্তু তার জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি জ্ঞান সহজেই অর্জন করা যায়। যেখানে কাঁচামাল সহজলভ্য ও যে সব দ্রব্যের স্থানীয় বাজার আছে, বিপণনের ঝুঁকিও কম, সেই সব কৃষি-নির্ভর শিল্পে তরুণতরুণীদের উৎসাহিত করতে দরকার তৃণমূল স্তরে প্রশাসনিক উদ্যোগ, উপযুক্ত স্থান নির্বাচন, সুসংহত পরিকল্পনা আর কারিগরি প্রশিক্ষণ।
কাজের সংস্থানের জন্য কৃষি-ভিত্তিক শিল্প গড়ে তুলতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ও সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে ঠিকমত আর্থিক সহায়তা পাওয়াও লক্ষ্য হওয়া উচিত। গ্রামাঞ্চলে এখন কৃষি ব্যবস্থার রূপ দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। দিনে দিনে বাড়ছে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার। কৃষিকাজের জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির চাহিদাও বহুল। বেড়েছে পণ্য বৈচিত্র। চাষির সামনে এখন প্রযুক্তি, সার, সেচ ও বীজের বিচিত্র সম্ভার। সেগুলির সুসংহত প্রয়োগের মাধ্যমে অতি অল্প খরচে ও সময়ে কৃষিতে উন্নতি সম্ভব। এ ছাড়া আছে কৃষিজাত পণ্যকে কাজে লাগিয়ে শিল্পজাত দ্রব্য তৈরি, হাঁস-মুরগির খামার, উদ্যান পালন, পান চাষ, ফুল-ফলের চাষ, মাছের চাষ, বাঁশের কাজ, খেলনা, মৃৎশিল্প, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রভৃতি। কৃষিভিত্তিক এই সব শিল্প বিকাশের মাধ্যমে গ্রামীণ স্বনির্ভরতা অর্জন বহুলাংশে সম্ভব।
চৈতন্যময় নন্দ। মুগবেড়িয়া, পূর্ব মেদিনীপুর
|
সাইকেল |
নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রীকে সাইকেল চেপে অফিস যেতে দেখেছেন দেবকুমার চট্টোপাধ্যায় (‘সাইকেল’, সম্পাদক সমীপেষু, ৩০-১০)। ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের অনেক শহরেই রাস্তায় সাইকেলের জন্য আলাদা লেন রয়েছে। ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহাগেনে পার্লামেন্ট চত্বরে চোখে পড়ল শতাধিক সাইকেল। খোঁজ নিয়ে জানলাম, সে দেশে জনপ্রতিনিধিদের অধিকাংশই সাইকেলে চড়ে পার্লামেন্টে যান। মনে পড়ল স্বদেশের ছবি।
বীরেন চট্টোপাধ্যায়। হাওড়া-৭১১১০৩ |
|
|
|
|
|