ইন্দিরা আবাস যোজনায় ঘর বিলির তালিকা তৈরিকে কেন্দ্র করে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে তৃণমূলের এক সমর্থকের। মৃতের নাম মহিদ শেখ (৪০)। আউশগ্রামের নওদা গ্রামের বাসিন্দা তিনি। ওই ঘটনায় এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে গ্রামে ইন্দিরা আবাসের ঘর বিলির তালিকা তৈরি নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারামারি বাধে। দিনভর চলতে থাকা সংঘর্ষে মহিদ শেখ-সহ কয়েকজন আহতও হন। রাতেই এক মহিলা-সহ আটজনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার সকাল ৭টা নাগাদ হাসপাতালে মারা যান মহিদ। তাঁর মাথায় টাঙির আঘাত ছিল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। মহিদ শেখের এক আত্মীয় জাহানারা বেগম হাসপাতালে বসেই অভিযোগ করেন, “কয়েকদিন আগে গ্রামে ইন্দিরা আবাস যোজনায় ঘর বিলির তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়। সেই নিয়েই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মারামারি বাধে। তাতে জড়িয়ে পড়তেই আমার ভাইয়ের মাথায় টাঙির কোপ মারা হয়।” |
তবে হাসপাতালে হতাহতদের খবর নিতে এসে আউশগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি শেখ সালেখ ওরফে টগর দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, “সোমবার দুপুরে শিবদে গ্রামে গুসকরা ২ পঞ্চায়েত ভবনের দখল নিতে গিয়েছিল সিপিএমের একদল লোক। গ্রামের মানুষ তথা তৃণমূলের সমর্থকেরা আক্রমণ প্রতিরোধ করেন। বিকেলে ঝামেলা মিটে যায়। শিবদে গ্রামের পঞ্চায়েত অফিস থেকে নওদার বাসিন্দারা গ্রামে ফেরার সময় ঝোপেঝাড়ে লুকিয়ে থাকা সিপিএমের লোকেরা লাঠি, টাঙি, বল্লম নিয়ে তাদের আক্রমণ করেন। তাতেই মহিদ-সহ কয়েকজন আহত হন।” তবে সিপিএমের গুসকরা জোনাল কমিটির সম্পাদক অচিন্ত্য মজুমদারের পাল্টা অভিযোগ, “এটা দিনের আলোর মতই স্পষ্ট যে পঞ্চায়েতের ঘর বিলির তালিকা তৈরি করাকে কেন্দ্র করেই ওই গ্রামে তৃণমূলের মল্লিকা চোঙদার ও টগর শেখের লোকজনদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে সিপিএমের কেউ জড়িত নয়।” তবে মল্লিকা চোঙদারের দাবি, “ওই গ্রামে আমার কোনও সমর্থক নেই। যেটুকু আছে তারা টগরের লোক। ওরাই সিপিএম থেকে তৃণমূলে এসেছে। তাদের সঙ্গেই টগরের পুরনো সমর্থক বা দলের জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূল করে আসা লোকেদের মারপিট হয়েছে। এই ঘটনা ধামাচাপা দিতেই আমার নামে মিথ্যে বদনাম রটানো হচ্ছে।”
বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনন্দ রায় বলেন, “আউশগ্রামের নওদা গ্রামে সংঘর্ষের জেরে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। আরও কয়েকজনকে গ্রেফতার করতে গ্রামে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।” তবে এই ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক কোনও যোগ আছে কি না সে ব্যাপারে আনন্দবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি। |