হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া মৌসম
ত লোকসভায় উত্তর মালদহ আসনে মৌসম বেনজির নুর জেতেন প্রায় ৭০ হাজার ভোটে। কিন্তু কয়েক মাস আগের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁর খাসতালুক গাজল, চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুরে পায়ের তলা থেকে কংগ্রেসের মাটি সরে গিয়েছে। উত্তর মালদহের সাতটি বিধানসভা এলাকা মিলিয়ে ৩০ হাজার ভোটে পিছিয়ে কংগ্রেস। মৌসমের খাস তালুকে চারটি পঞ্চায়েত সমিতি দখল করে সিপিএম। সেই সঙ্গে চাঁচল ১ ব্লকের কংগ্রেস সভাপতি সচ্চিদানন্দ চক্রবর্তী, পুরাতন মালদহ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিভূতি ঘোষ-সহ দলের একাধিক কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় সমস্যায় কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে আসন টিকিয়ে রাখা যাবে কি না, তা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন কংগ্রেস। মৌসম নিজে বলছেন, “পঞ্চায়েত ভোট ও লোকসভা ভোট এক নয়। যাঁরা লোকসভায় আমাকে সমর্থন করেছিলেন, লোকসভা নির্বাচনে তাঁরা ফের আমাকে সমর্থন করবেন।”
কংগ্রেস কর্মীদের বক্তব্য, সম্প্রতি মৌসমকে সক্রিয় রাজনীতিতে বেশি পাওয়াও যায় না। জনগণের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে এলাকার কংগ্রেস কর্মীরাই জানাচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতে জমি পুনরুদ্ধারে অবশেষে সংসার ছেড়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়েছেন মৌসম। এক মাস ধরে দিনে রাতে বুথে বুথে ঘুরে জনসংযোগ বাড়াচ্ছেন তিনি। অভিযোগ উঠেছিল, এত দিন ধরে নিজের সাংসদ কোটার টাকায় কী কাজ হচ্ছে, তারও কোনও খোঁজ রাখতেন না তিনি। বাসিন্দাদের দাবি, সাংসদ কোটার টাকায় এলাকার উন্নয়নের কাজ না হওয়ায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল। মৌসম এখন ঘন ঘন জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করছেন। আর সাংসদ কোটার টাকায় কাজের খোঁজ নিচ্ছেন। সাংসদ কোটার ৭.৫ কোটি টাকার কাজ না হওয়ায় জেলাশাসককে দুষছেন। বা সাংসদ কোটার টাকার কাজ লোকসভা ভোটের আগে শেষ করতে প্রশাসনকে চাপ দিচ্ছেন।
নিজের জন সমর্থন কমে গিয়েছে মানতে নারাজ মৌসম। তিনি বলেন, “আমি ব্যস্ত থাকলেও মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলাম। যাঁরা বলছে আমার জনসমর্থন কমেছে, আসলে তারা ভয় পেয়েই এ সব বলছেন।”
জনসংযোগ বাড়াতে মাস খানেক আগে চাঁচলে বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন মৌসম। সেই বাড়ি থেকে দুর্গাপুজোর সময়ে মণ্ডপে ঘুরে ঘুরে জনসংযোগ করেছেন তিনি। কখনও বুলবুলচন্ডিতে কালীপুজো মেলায় গিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে পাঁপড় ভাজা খেয়েছেন, কখনও গাজলে সাঁওতালদের ছাতা উৎসবে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে আদিবাসী নৃত্যেও যোগ দিয়েছেন তিনি। এ বার তার এই জনসংযোগে ২৪ ঘণ্টার সফরসঙ্গী তাঁর স্বামী। সহধর্মিনীর জনসমর্থন ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর মির্জা কায়েশ বেগ বলেন, “লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত মালদহ ছেড়ে কোথাও যাচ্ছি না।”
তবে রাতদিন বুথে বুথে ঘুরেও মৌসম তাঁর হারিয়ে যাওয়া জনসমর্থন ফিরে পাবেন কি না, তা নিয়ে দলের কর্মীরাই সংশয়ে। তাঁদের বক্তব্য, এক সময়ে সিপিএমের খাস তালুক গাজল বিধানসভা কেন্দ্রকে মৌসম ভেঙে চুরমার করে গত লোকসভায় সেখান থেকে পাঁচ হাজার ভোটে লিড নেন। অথচ এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে গাজল বিধানসভায় কংগ্রেস তৃতীয় স্থানে। সিপিএমের থেকে কংগ্রেস ১০ হাজার কম ভোট কম পেয়েছে। একই ভাবে গত পঞ্চায়েতে হরিশ্চন্দ্রপুর এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি বিরোধী শূন্য ছিল। কংগ্রেস একক ভাবে পঞ্চায়েত সমিতি দখল করে। সেই হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ও ২ কংগ্রেসের হাতছাড়া। যাঁর হাত ধরে চাঁচল ১ ব্লকে মৌসম লোকসভায় ১৭ হাজার ভোটে লিড নেন, সেই ব্লক কংগ্রেস সভাপতি সচ্চিদানন্দ চক্রবর্তী দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
শনিবার জেলা কংগ্রেস সভাপতি আবু হাসেম খান চৌধুরী কোতুয়ালিতে বৈঠক ডাকেন। তাতে রতুয়ার ১৫ অঞ্চল সভাপতি হাজির হলেও কংগ্রেস বিধায়ক ও তাঁর দুই অনুগামী ছিলেন না। তা নিয়ে দলে জল্পনা শুরু হয়েছে।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.