শ্রমিকের ছদ্মবেশে সুপারি কিলারকে ধরে ফেলল পুলিশ
তিন সিপিএম কর্মী খুনে অভিযুক্ত এক দুষ্কৃতীকে রবিবার দুপুরে ধরল গোপালনগর থানার পুলিশ। নাম বিলাল মণ্ডল। উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরের চামটা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাড়ি ওই এলাকাতেই। অভিযোগ, বিলালের নামে মোট ২৪টি অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। টাকা নিয়ে মানুষ খুন করাই ছিল তার পেশা।
২০০৬ সালের ২৭ মার্চ চামটার সিপিএম নেতা খগেন মণ্ডল নিজের বাড়িতে বোমার আঘাতে খুন হন। পরের বছর ১০ জুন আকাইপুর পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান সুভাষ বিশ্বাসকে মোটরবাইকে বাড়ি ফেরার পথে কুপিয়ে খুন করা হয়। ওই বছরে স্থানীয় নওদা এলাকায় বুদো নামে এক সিপিএম কর্মী খুন হন। পুলিশের দাবি, তিনটি খুনের পিছনেই বিলালের হাত ছিল। সুভাষবাবুকে খুনের জন্য এক দম্পতির কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা সে নিয়েছিল বলে দাবি পুলিশের। এছাড়াও তার নামে ডাকাতি, চুরির মতো নানা অভিযোগ রয়েছে। ওই তিনটি খুনে অভিযুক্ত বিলালের সঙ্গীরা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি ভোগ করলেও এত দিন বিলাল পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল। সোমবার তাকে বনগাঁ আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, বছর ঊনত্রিশের বিলালের কিশোর বয়স থেকেই অপরাধমূলক কাজকর্মে হাতেখড়ি। নিজের একটি দলও বানিয়েছিল সে। দশ বছর ধরে পুলিশ তার নাগাল পায়নি। ইতিমধ্যে গোপালনগর, চাকদহ, গাংনাপুর এলাকায় নিজের প্রভাব বিস্তার করে সে। যদিও সে দেখতে কেমন, তা নিয়ে পুলিশের কোনও ধারণা ছিল না। শুধু এইটুকু তথ্য ছিল যে তার চোখ কটা।
ধৃত বিলাল মণ্ডল।—নিজস্ব চিত্র।
গোপালনগর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি থানায় খবর আসে, চামটা গ্রামে আসতে পারে বিলাল। এমনিতে সে এক জায়গায় বেশি দিন থাকত না। গোপালনগর থানার ওসি দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ৫ জন পুলিশকর্মী শ্রমিকের ছদ্মবেশে চামটায় নজর রাখতে শুরু করেন। রবিবার তাঁরা এক রোগা পাতলা চেহারার নিরীহ দেখতে যুবককে মোটরবাইকে গ্রামে আসতে দেখেন। কটা চোখ দেখে সন্দেহ হওয়ায় তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে জেরায় ভেঙে পড়ে সে সব স্বীকার করে বলে পুলিশের দাবি।
এক পুলিশ অফিসারের কথায়, “বিলালকে দেখে বোঝার উপায় নেই, সে এতগুলো অপরাধে জড়িত। তার কোনও নেশা নেই। ঠাণ্ডা মাথায় অনায়াসে মানুষ খুন করে। সাধারণত সুপারি কিলাররা টাকার বিনিময়ে খুন করে। কিন্তু বিলাল নিয়মিত দোকানদার, ঠিকাদারদের কাছ থেকে তোলা তুলত। এলাকায় কেউ জমি বাড়ি কিনলে, তারও ‘হিস্সা’ থাকত। কোনও জায়গাতেই সে বেশি দিন থাকত না। ঘন ঘন মোবাইল নম্বর বদলাত। খুব ঘনিষ্ঠ ছাড়া তার মোবাইল নম্বরের হদিস কেউ জানত না। গাংনাপুরের এক সময়ের ত্রাস বোম্বাট খুন হওয়ার পরে এলাকার দখল নেয় বিলাল।”
পুলিশের দাবি, গোপালনগরের কল্যাণপুর, আদিত্যপুর এলাকায় দু’টি বড় ডাকাতির ঘটনায় বিলাল যুক্ত। চলতি বছরের মার্চেও চাকদহের বিষ্ণুপুর এলাকায় এক যুবক খুনে তার নাম উঠে আসে। তার মোবাইল থেকে পাওয়া নম্বর দেখে দলের অন্যদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.