অন্যদের থেকে চেহারাটা কিঞ্চিৎ বড়সড়। চলতে-ফিরতে জায়গা লাগে বেশি। তাই বাঘ, পাখির পরে এ বার হাতি। চলাফেরায় আরও স্বাচ্ছন্দ্য আনতে আলিপুর চিড়িয়াখানায় হাতির জায়গা বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।
চিড়িয়াখানায় জায়গা তো বাঁধা। হাতিরা বাড়তি জমি পাবে কী ভাবে?
চিড়িয়াখানা-কর্তৃপক্ষ সোমবার জানান, এখন চিতাবাঘ আর জাগুয়ারদের যে-খাঁচায় রাখা হয়, সেই খাঁচা ভেঙে দিয়ে হাতি রাখার জায়গা বাড়ানোর অনুমতি দিয়েছেন সেন্ট্রাল জু অথরিটি (সিজেডএ) বা কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখান কর্তৃপক্ষ। আলিপুর চিড়িয়াখানায় দু’টির বেশি হাতি রাখা যাবে না বলে সিজেডএ আগেই জানিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু এখন হাতির জন্য সেখানে যে-জায়গা নির্দিষ্ট করা আছে, দু’টি হাতিরও স্বচ্ছন্দে চলাফেরা করার পক্ষে সেটা যথেষ্ট নয় বলে মনে করে সিজেডএ। তারা যাতে হাঁপ ছাড়তে পারে, সেই জন্যই খাঁচা ভেঙে বাড়তি জায়গার ব্যবস্থা হচ্ছে।
তা হলে চিতাবাঘ ও জাগুয়ারের নতুন জায়গা কোথায় হবে?
চিড়িয়াখানা-কর্তৃপক্ষ জানান, সরীসৃপদের খাঁচার কাছাকাছি একটি জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। খাঁচার নতুন নকশাও পাঠানো হয়েছে সিজেডএ-র কাছে। সেই নকশার অনুমোদন এখনও আসেনি। |
আলিপুর চিড়িয়াখানা অন্যত্র সরানোর জন্য চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছিল। চিড়িয়াখানা-কর্তৃপক্ষ জানান, আলিপুর থেকে অন্যত্র সরানোর পরিকল্পনা এখন নেই। তবে সুন্দরবনের ঝড়খালিতে ১০০ একর জায়গা জুড়ে একটি ছোট মুক্ত চিড়িয়াখানা তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। তার জন্য জমিও চিহ্নিত করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের দাবি।
ঝড়খালির প্রস্তাবিত চিড়িয়াখানায় কোন ধরনের জীবজন্তু থাকবে?
সেখানে মূলত সুন্দরবনের জীবজন্তু (সরীসৃপ, জংলি বিড়াল, হরিণ ইত্যাদি) রাখার কথা ভাবা হয়েছে বলে একটি সূত্রের খবর।
এ দিন আলিপুর চিড়িয়াখানায় জলচর পাখি ও বাঘের নতুন আস্তানার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিড়িয়াখানায় সরীসৃপদের জন্য নতুন জায়গা
তৈরির কাজ চলছে। সেই কাজ
দ্রুত শেষ করার জন্য চিড়িয়াখানার সদস্য-সচিব টিভিএন রাও এবং ডিরেক্টর কানাইলাল ঘোষকে অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা একই সঙ্গে কর্তৃপক্ষকে বলেন, চিড়িয়াখানার ভিতরে সৌন্দর্যায়নের কাজও তাড়াতাড়ি সেরে ফেলা হোক। এর জন্য তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়ান তাঁর সাংসদ তহবিল থেকে এক কোটি টাকা দিয়েছেন।
পশুপাখিদের সম্পর্কে খুঁটিনাটি জানতে খুদে পড়ুয়াদের জন্য আগামী বছর থেকে চিড়িয়াখানায় নতুন একটি প্রকল্প চালু করা হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানান। বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে ঠিক কেমন, কোন পাখি কী ধরনের খাবার খেতে ভালবাসে, গন্ডারের দিনযাপন কেমন ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তর সরেজমিনে দেখেই জেনে নেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে নতুন প্রকল্পে।
অন্যান্য রাজ্যের বিভিন্ন চিড়িয়াখানার মতো আলিপুর চিড়িয়াখানাতেও জীবজন্তু দত্তক নেওয়ার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এ-পর্যন্ত এই চিড়িয়াখানার ১৯টি প্রজাতির ৩৭টি পশুপাখি দত্তক নিয়েছেন ২৮ জন নাগরিক। এ দিন তাঁদের হাতে জীবজন্তু দত্তক নেওয়ার শংসাপত্র তুলে দেন তৃণমূল সাংসদ সুব্রত বক্সী এবং ডেরেক ও’ব্রায়ান। |