বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চার নম্বর লাফেই
হোঁচট মঙ্গলযানের
ওনা দেওয়ার এক সপ্তাহও না পেরোতেই বাধার মুখে মঙ্গলযান!
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানিয়েছে, রবিবার রাতে পৃথিবী থেকে দূরত্ব বাড়াতে গিয়ে যান্ত্রিক সমস্যায় পড়ে মহাকাশযানটি। তবে এর ফলে যানটির কোনও ক্ষতি হয়নি। আজ, মঙ্গলবার ভোর পাঁচটায় ফের দূরত্ব বাড়ানোর কাজ শুরু করবেন ইঞ্জিনিয়ারেরা।
৫ নভেম্বর শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে মঙ্গলের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল ইসরোর যান। তবে ভারতের কাছে অতি-শক্তিশালী রকেট না থাকায় এক লাফে পৃথিবীর অভিকর্ষ টান ছাড়িয়ে লাল গ্রহের উদ্দেশে রওনা দিতে পারেনি সে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, পৃথিবীর অভিকর্ষ বল কাটিয়ে বেরোনোর জন্য মহাকাশযানটির গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে ১২ কিলোমিটার হতে হবে। এই গতিবেগ দেওয়ার জন্য উৎক্ষেপণের পর থেকে ২৫ দিন পৃথিবীর চার পাশে চক্কর দেবে যানটি। চক্কর কাটতে কাটতেই মঙ্গলযানে থাকা ইঞ্জিন পাঁচ বার চালু করে ধাপে ধাপে গতিবেগ বাড়ানো হবে তার।
ইসরো জানিয়েছে, উৎক্ষেপণের পর থেকে রবিবার পর্যন্ত তিন বার এই পদ্ধতিতেই পৃথিবীর সঙ্গে দূরত্ব বাড়ানো হয়েছে মঙ্গলযানের। রবিবার রাতে ছিল তার চতুর্থ লাফ। এবং তাতেই বাধার মুখে পড়েছে সে। অথচ লাল গ্রহের পথে পাড়ি দিতে এই চতুর্থ ধাপটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেন?
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের বাধা কাটিয়ে বেরোনোর জন্য মঙ্গলযানকে পৃথিবীর সব থেকে বেশি দূরের কক্ষপথে (১ লক্ষ কিলোমিটার) দিন কুড়ি চক্কর কাটানোর পরিকল্পনা করেন ইসরোর কর্তারা। এর আগে তিনটি লাফ দিয়ে পৃথিবী থেকে ৭১ হাজার ৬২৩ কিলোমিটার পৌঁছেছিল মঙ্গলযান। ঠিক ছিল সেখান থেকে এক লাফে ১ লক্ষ কিলোমিটার দূরের কক্ষপথে স্থাপন করা হবে তাকে। এই জন্য প্রতি সেকেন্ডে ১৩০ মিটার গতিবেগ বাড়ানোর প্রয়োজন ছিল। এই লাফ দেওয়ার সময়ই যান্ত্রিক গোলযোগের মুখে পড়ে যানটি। ফলে প্রয়োজনীয় গতিবেগও বাড়ানো যায়নি। কী ভাবে ঘটল এই গোলযোগ?
ইসরোর এক মুখপাত্রের ব্যাখ্যা, রবিবার রাতে ইঞ্জিনের আপৎকালীন মোটর ব্যবস্থা পরীক্ষা করে দেখছিলেন কন্ট্রোল রুমে বসে থাকা ইঞ্জিনিয়ারেরা। সেই পরীক্ষা করার সময় ইঞ্জিনের দু’টি ভাল্ভ চালু করা মাত্রই জ্বালানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে যানের আর একটি আপৎকালীন ব্যবস্থা, উচ্চতা নিয়ন্ত্রণকারী যন্ত্র (অল্টিটিউড কন্ট্রোল থ্রাস্টার) কাজ করেছে। ফলে রবিবারের জায়গা থেকে ৭ হাজার কিলোমিটার দূরে পাঠানো গিয়েছে মঙ্গলযানকে।
মঙ্গল অভিযানের আগেই যাত্রাপথে নানা বাধা-বিঘ্নের আঁচ করেছিল ইসরো। সে দিক দিয়ে বিচার করেই এই ত্রুটিকে তেমন আমল দিচ্ছে না তারা। ইসরোর অধিকর্তা (জনসংযোগ) দেবীপ্রসাদ কার্নিক বলছেন, “এটা কোনও বড় সমস্যা নয়। পরীক্ষা করার সময় সামান্য কিছু ত্রুটি ধরা পড়েছিল। ঠিক করে নেওয়া হবে। এই ত্রুটি মঙ্গলে পাড়ি দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় সমস্যা তৈরি করবে না।” ইসরো সূত্রের খবর, এই ঘটনায় মহাকাশযানের খুব বেশি জ্বালানিও নষ্ট হয়নি। যদিও কেন এমন ঘটল, তা খতিয়ে দেখার জন্য ইতিমধ্যেই এক দল বিজ্ঞানীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.