লাইন সারাতে গিয়েই ট্রেনের ধাক্কায় মৃত ২
রেললাইন মেরামতের কাজ করতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে দুই ট্র্যাকম্যানের। তাঁদের নাম বাচ্চু যাদব (৪৩) ও রমাকান্ত রায় (৫৩)। প্রথমজনের বাড়ি বিহারে ও অন্যজনের উত্তরপ্রদেশে।
বর্ধমান জিআরপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা নগাদ ওই দু’জন বর্ধমান-হাওড়া রুটে গাংপুরের কাছে ডাউন মেন লাইনের ৪৮ নম্বর গেটের কাছে রেলের ট্র্যাক সারানোর কাজ করছিলেন। তখনই একসঙ্গে ডাউন শিপ্রা এক্সপ্রেস ও আরও দু’টি ট্রেন এসে পড়ে। ফলে সরে যাওয়ার কোনও সুযোগ না পেয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তাঁরা।
বর্ধমান স্টেশনে ট্র্যাকম্যানদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিভিন্ন স্টেশনে লাইন মেরামতের কাজে ব্যস্ত ট্র্যাকম্যানেরা দলে দলে বর্ধমান স্টেশনে ভিড় জমান। স্টেশন ম্যানেজার ও জিআরপি থানার সামনে ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। কিছুক্ষণের জন্য বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে রেল পরিষেবাও। পরে পূর্ব রেলের আধিকারিকেরা হাওড়া থেকে বর্ধমানে এসে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। কর্মরত অবস্থায় ট্র্যাকম্যানদের নিরাপত্তার আশ্বাস পেয়ে বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়। ইস্টার্ন রেল মেনস্ ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক শুভাশিস রায়ের দাবি,“ট্র্যাকম্যানদের সবসময়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। তাঁদের কোনও নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই। নির্দিষ্ট ভাবে ডিউটির সময়ও নেই। অন্ধকারে সামান্য আলো নিয়েও লাইনে বসে তাঁদের কাজ করতে হয়।” তিনি আরও জানান, এঁরা কাজ করার সময় দুদিক থেকে কোনও ট্রেন আসছে কী না তা দেখার জন্য একজন করে লুকআউটম্যান থাকার কথা। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কেউ থাকেনা। শুভাশিসবাবুর অভিযোগ, ট্র্যাকম্যানদের আধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। এমনকী ট্রাকম্যানদের দিয়ে কি ম্যানের কাজও করানো হচ্ছে বলে তাঁর দাবি। সাধারণত, কি ম্যানেরা লাইনের নাটবল্টু খুলে দেওয়ার পরে ট্র্যাকম্যানেরা লাইন মেরামত করেন। কিন্তু তাঁরা না থাকায় অনেকক্ষেত্রেই দুর্ঘটনা ঘটে ও ট্রাকম্যানদের জীবন যায় বলে তাঁর অভিযোগ। মৃত দুই ট্র্যাকম্যানের সহকর্মী অনিরুদ্ধ কুমার ও সৌরভ আলিও বলেন, “ট্রেন যাতে নিরাপদে লাইনের উপর দিয়ে চলতে পারে, সেটা সুনির্দিষ্ট করি আমরা। কিন্তু আমাদেরই কোনও নিরাপত্তা নেই। কোনও পোশাক বা আধুনিক যন্ত্রপাতিও দেওয়া হয় না।”
হাওড়া থেকে আসা সিনিয়র ডিভিশন্যাল ইঞ্জিনিয়র অজয় কুমারের অবশ্য দাবি, “ট্র্যাকম্যানদের সাবধান হয়ে চোখ-কান খুলে কাজ করা উচিত। দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। তবে পূর্ব রেলের বিভিন্ন স্টেশনে প্রযুক্তিগত আধুনিকীকরণের কাজ চলছে। ট্র্যাকম্যানদেরও সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।” মৃত ট্র্যাকম্যানদের পরিবারকে ১৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
কিন্তু লুকআউটম্যানদের ঘটনাস্থলে রেখে ট্রেন আসছে কি না, তা দেখার কাজে ব্যবহার করা হয় না কেন? অজয় কুমার বলেন, “পূর্ব রেলে রিভার্স লাইন অর্থাৎ পরস্পরছেদী লাইনের সংখ্যা কম। তাই লুকআউটম্যানের প্রয়োজনও কম।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.