সব কিছু ঠিক থাকলে, চলতি সপ্তাহেই জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেসের প্রথম সারির বেশ কয়েকজন নেতা তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন। ২০১৫ সালে জলপাইগুড়ি পুরসভার নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে শহরে নিজেদের সংগঠন মজবুত করার কাজে নেমেছে তৃণমূল।
তৃণমূল সূত্রের খবর, আগামী ১৪ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার শহরের থানা মোড়ে এক জনসভায় ওই দলবদল অনুষ্ঠান হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব ও তৃণমূলের জেলা সভাপতি চন্দন ভৌমিকের ওই সভায় উপস্থিত থাকার কথা। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বেশ কিছু কর্মী-সমর্থকরা সেখানে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন। সৈকতবাবুর সঙ্গে জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা তফসিলি জাতি এবং উপজাতি সেলের আহ্বায়ক সন্দীপ মাহাতোও তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন। পুরবোর্ডের বর্তমান কয়েকজন কংগ্রেস কাউন্সিলরের সঙ্গে তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের কথাবার্তা চলছে।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের কোর কমিটির চেয়ারম্যান গৌতমবাবু বলেন, “যাঁরাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে কাজ করতে চান, তাঁদের তৃণমূলে স্বাগত। মানুষের জন্য কাজ করতে গেলে দলের বিস্তার প্রয়োজন। দলকে এমন ভাবে তৈরি করতে হবে যাতে প্রতিটি এলাকায় ব্যক্তির প্রয়োজনে দল পাশে দাঁড়াতে পারে।”
দলীয় সূত্রের খবর, জলপাইগুড়ি শহর তথা পুর এলাকায় দলের সংগঠন এখনও ‘যথেষ্ট ভাল নয়’ বলে তৃণমূল নেতাদের একাংশ অভিযোগ করেন। ২০১০ সালে ‘পরিবর্তনের হাওয়ায়’ রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূল ভাল ফল করলেও, জলপাইগুড়ি পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল মাত্র ১টি আসনে জেতে। কংগ্রেস একক ভাবে ১৬টি আসন দখল করে। সে কারণেই এ বার ২০১৫ সালে এই শহরে পুর নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে অনেক আগে থেকেই আঁটঘাট বেঁধে নামতে চায় তৃণমূল। পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর সৈকতবাবু দলে যোগ দিলে, আগামী পুরভোটে তাঁকে কোনও বড় দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।
সৈকতবাবুর বক্তব্য, “এইটুকু বলতে পারি, জেলা কংগ্রেসের বৈঠকে আমাকে ডাকা হয় না। অনেক উপেক্ষা যন্ত্রণা জমে রয়েছে। মানুষের জন্য, উন্নয়নের জন্য কাজ করা, দাবি করাই আমার কাছে আন্দোলনের পথ। সে পথেই থাকতে চাই।” সন্দীপবাবু অবশ্য বলেন, “এখনই কোনও মন্তব্য করব না।” এ বিষয়ে জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা পুর চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “গঠনতন্ত্র মেনে গণতান্ত্রিক ভাবেই জেলায় দল পরিচালনা করা হয়। আর সৈকতবাবু জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক। উনি যথেষ্ট দক্ষ এবং ভাল ভাবে দায়িত্ব পালন করে এসেছেন। আমার মনে হয় না উনি এমন একটা ভুল সিদ্ধান্ত নেবেন।” |