প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা প্রকল্পে তৈরি হয়েছিল রাস্তা। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় উঠে গিয়েছে পিচ। বেরিয়ে পড়েছে খানাখন্দ। বৃষ্টিতে যা ডোবার আকার নেয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের জামতলা বাজার এবং ক্যানিংয়ের হবির মোড়ের সংযোগকারী ১৪ কিলোমিটার রাস্তাটি এমনই বেহাল। প্রায় পঁচিশ দিন ধরে ওই রাস্তায় বন্ধ বাস, অটো, ট্রেকার চলাচল। ফলে, দুর্ভোগ বাড়ছে যাত্রীদের। চলছে শুধু মোটরভ্যান এবং রিকশা। বেশি খরচ করে যাত্রীরা তাতেই যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রশাসনের নানা মহলে রাস্তা সংস্কারের বিষয়ে আবেদন-নিবেদন করেও কোনও কাজ হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ।
প্রতিদিন ওই রাস্তা ব্যবহার করেন বারুইপুর মহকুমার মেরিগঞ্জ, কোচিয়ামারা, ক্যানিংয়ের হেড়োভাঙা, গোলাবাড়ি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। ওই রাস্তা ধরে বারুইপুরের জামতলা ও বাসন্তী ঝড়খালি রুটের বাস, ট্রেকার, অটো চলত। রাস্তা খারাপের কারণে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। |
যাত্রীদের বক্তব্য, রাস্তার এমনই হাল যে সাইকেল চালিয়ে যাওয়াই দুষ্কর। ক্যানিংয়ের বাসিন্দা সিরাজুল মোল্লা বলেন, “রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে আবেদন জানিয়েও কোনও সাড়া মেলেনি। রাস্তা সারানোর দাবিতে বহুবার অবরোধ হয়েছে। প্রশাসন রাস্তা সারানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। কিন্তু কবে রাস্তা সারানো হবে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না।” ক্যানিংয়ের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক জয়ন্ত হালদার প্রতিদিন বাসে ওই রাস্তা ধরে কুলতলিতে স্কুলে যেতেন। এখন মোটরভ্যানে চড়ে যাতায়াত করছেন। তাঁর কথায়, “বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন স্কুলে যাওয়াটা নরক-যন্ত্রণা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে সাড়ে ৮টায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে ১০টায় স্কুলে পৌঁছতাম। এখন ৭টায় বেরিয়েও নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে যেতে পারছি না।”
বারুইপুরের জামতলা ও বাসন্তী ঝড়খালি রুটের বাস-চালক রাজু ঢালি বলেন, “রাস্তার যা অবস্থা, তাতে বাস চালানো অসম্ভব। ওই রাস্তায় চালাতে গিয়ে প্রায়ই বাস খারাপ হচ্ছে।” প্রদীপ নস্কর নামে আর এক বাস-চালক বলেন, “ওই রাস্তায় চালাতে গিয়ে প্রায়ই বাসের যন্ত্রাংশ ভাঙছে। এ দিকে, যন্ত্রাংশের দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে মালিকের লোকসান হচ্ছে। রাস্তা সংস্কার না হলে বাস চালানো সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে মালিকেরা বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন।” রাস্তাটি দেখভাল করে জেলা পরিষদ। বারুইপুরের মহকুমাশাসক পার্থ আচার্য বলেন, “ওই রাস্তা যে খারাপ তা জানি। সংশ্লিষ্ট দফতরকে দ্রুত রাস্তা সংস্কারের জন্য বলা হয়েছে।” জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আবু তাহের সর্দার বলেন, “শুধু ওই রাস্তা নয়, জেলার বেশ কিছু রাস্তা খুব খারাপ। প্রবল বৃষ্টির কারণে কোনও রাস্তার কাজ শুরু করা যায়নি। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কয়েকটি রাস্তার কাজ দ্রুত শুরু করা হবে। এ নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা হয়েছে।” |