অবাধ কাঠ পাচার চলছে বক্সায়
ভীর জঙ্গল থেকে পেল্লাই গাছ কেটে গুড়গুড়ি বানিয়ে পাচার করেছে দুষ্কৃতীরা। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে এ ভাবে গাছ চুরি হলেও বন দফতরের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। দিন দুপুরেই জঙ্গলে ঢুকে পড়ছে দষ্কৃতীর দল। চলছে অরন্য নিধণ। এই ঘটনায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে পরিবেশ প্রেমী মহলে।
বছর দেড়েক আগে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে কাঠ পাচার রুখতে কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন খোদ বনমন্ত্রী। তা যে কথার কথাই রয়ে গিয়েছে তা ওই ঘটনাতে স্পষ্ট। পরিস্থিতি এমনই যে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ২৮ মাইল বিটের ৯ নম্বর কম্পার্টমেন্টের একটি রাস্তা ‘চোর বাটো’ বা কাঠ চোরদের যাতায়াতের রাস্তা বলে পরিচিতি পেয়েছে। সেখানে নজরদারির ব্যবস্থা নেই বলেই অভিযোগ। ওই রাস্তা দিয়ে দিন দুপুরে কাঠ পাচার হয়ে চলেছে।
এ ভাবেই ক্রমশ সাবাড় হয়ে যাচ্ছে বক্সার বনাঞ্চল। নারায়ণ দে’র তোলা ছবি।
বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন বলেন, “বছর দেড়েক আগে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ৯ নম্বর কম্পার্টমেন্টের জঙ্গলে গাছ চুরির খবর পেয়েছিলাম। নিজে এলাকা ঘুরে দেখেছি। পর পর গাছ কেটে নিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। নজরদারির নির্দেশ তা কিছুটা কমে। ফের বড় বড় গাছ কাঠ চোরেরা কেটে নিয়ে যাচ্ছে। বনকর্তাদের কাছে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেব।” বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপক্ষেত্র অধিকর্তা ভাস্কর জেভি এ বিষয়ে বলেছেন, “৯ নম্বর কম্পার্টমেন্টে কাঠ চুরি আটকাতে ২৮ মাইল এলাকায় একটি নজর মিনার বানানো হয়েছে। মূলত গাঙ্গুটিয়া ও চিনচুলা চা বাগান এলাকা থেকে কাঠ চোরেরা ঢোকে। তাই ওই সব এলাকায় আরও কড়া নজরদারি শুরু হবে।”
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ২৭ মাইল ও ২৮ মাইল জঙ্গলের মাঝে ৯ নম্বর কম্পার্টমেন্টের ওই ‘চোর রাস্তা’র নানা জায়গায় কাঠের লগ নিয়ে টেনে হিচড়ে নিয়ে যাওয়ার দাগ স্পষ্ট। রাস্তায় বসেই দুষ্কৃতীরা শাল, সেগুনের ছাল ছাড়িয়ে ফেলেছে। নজর পড়ল সদ্য কাটা একটি বিশাল শাল গাছে। সেখানে রীতিমত প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগে ভাত নিয়ে এসে খেয়েছে কাঠ চোরেরা। পাশে পড়ে রয়েছে জলের বোতল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান শাল গাছটি কম পক্ষে ১০০ বছরের পুরোনো। ওই সব এলাকায় কার্যত নজরদারি না থাকায় এক সঙ্গে ২০-২৫ জনের দল ঢোকে। বড় বড় হাত-করাত দিয়ে তারা গাছ সাফ করে নিয়ে যাচ্ছে বক্সার জঙ্গলের। বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ৯ নম্বর কম্পার্টমেন্ট থেকে ২৮ মাইল বিট প্রায় ৫-৬ কিমি দূরে সেখানে ৫ জন বনকর্মী রয়েছে। জঙ্গলে নজরদারি ছাড়াও হাতি তাড়ানোর কাজ করতে হয় তাঁদের। সে জন্য নজরদারির ফাঁক থেকে যায়।
এই প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের চেয়ারম্যান অমল দত্ত বলেন, “বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে গাছ কাটা নতুন ঘটনা নয়। বিষয়টি যে বনকর্মীদের অজানা তাও নয়। রায়মাটাং, পানা, সহ বিভিন্ন জঙ্গলে দেদার গাছ কাটা চলছে। মাঝে মাঝে চা বাগান গুলিতে অভিযান চালিয়ে বন কর্তার বিপুল পরিমানে কাঠ উদ্ধার করেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাঠ চোরেরা ধরা পড়ে না।” নর্থবেঙ্গল ফরেস্ট মজদুর ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি গৌরাঙ্গ ভট্টাচার্য বলেন, “এখন বন দফতরের অবস্থা করুণ। ফরেস্ট প্রোটেকশন কমিটির সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই বন কর্তাদের। নিয়োগ বন্ধ। ফলে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল কাঠ চোরেদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.