কলকাতার অফিসপাড়ায় তৈরি হবে আধুনিক বহুতল পার্কিং স্পেস। দিল্লির ধাঁচে এক লপ্তে বহু গাড়ি রাখার প্রকল্প হবে এ শহরে। কিরণশঙ্কর রায় রোডে রাজ্য সরকারের জমিতে হবে প্রকল্পটি। কী ভাবে এটি করা যেতে পারে, তার প্রস্তাব চাওয়া হয়েছে দিল্লির তিন নামী নির্মাণ সংস্থার কাছে। শহরে গাড়ি রাখার সমস্যার সমাধানে কলকাতা পুরসভাও চারটি পার্কের নীচে পার্কিং স্পেস তৈরির কথা ভাবছে।
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (পার্ক ও উদ্যান) দেবাশিস কুমার এ ব্যাপারে বলেন, “হাজরা পার্ক, ট্র্যাঙ্গুলার পার্ক, গাঁজা পার্ক ও শ্রদ্ধানন্দ পার্কের নীচে এগুলি তৈরির জন্য শীঘ্রই ‘এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট’ দেওয়া হবে। প্রকল্পগুলি পাবলিক-প্রাইভেট-পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলে তৈরি করার কথা ভাবা হচ্ছে।”
রাজ্য সরকারের প্রকল্পটিতে অন্তত ৬০০ গাড়ি রাখার ব্যবস্থা হবে। পরিকল্পনার রূপায়ণের জন্য নিউ সেক্রেটারিয়েট ভবনের অদূরে প্রাচীন ‘পঞ্চায়েত ভবন’-এর ভিতরের ঘরগুলি ভাঙার কাজ শুরু করেছে পূর্ত দফতর। প্রায় ২৩ হাজার বর্গফুট আয়তনের ওই জমির সর্বোচ্চ কতটা অংশ গাড়ি রাখার জন্য কী ভাবে ব্যবহার করা যায়, তা জানতে চাওয়া হয়েছে অভিজ্ঞ সংস্থার কাছে।
নিউ সেক্রেটারিয়েট ভবন ছাড়াও হাইকোর্ট এবং বেশ কিছু বাণিজ্যিক সংস্থার অফিস থাকায় কিরণশঙ্কর রায় রোড ও সংলগ্ন এলাকায় গাড়ি রাখার সমস্যা রয়েছে।
পূর্ত দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “প্রস্তাবিত প্রকল্পের জন্য কত টাকা খরচ হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে সেই টাকা তোলা হবে গাড়ি রাখার মাসুলের বিনিময়ে। যৌথ উদ্যোগে প্রকল্পটি করার কথা ভাবা হচ্ছে।” নিউ সেক্রেটারিয়েট ভবনের মাঝের ফাঁকা অংশেও অপেক্ষাকৃত ছোট বহুতল পার্কিং স্পেস তৈরির কথা ভাবছে রাজ্য। কলকাতার ব্যস্ত জায়গায় গাড়ি রাখতে প্রথম বহুতল প্রকল্পের পরিকল্পনা হয় ১৯৯৯ সালে। সে বছর পুরসভা একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে এ বিষয়ে সমঝোতা করেছিল। ২০০১ সালে প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা খরচ করে তৈরি হয় রডন স্ট্রিটের পার্কিং প্লাজা। এর পরে ২০০৭-এ প্রায় ১৫ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি হয় প্রকল্প। কম্পিউটার-নিয়ন্ত্রিত ‘বিল্ড ওন অপারেট ট্রান্সফার’ পদ্ধতিতে নিউ মার্কেটে প্রায় ২৫০ গাড়ি রাখার পাশাপাশি শ’খানেক বাণিজ্যিক বিপণিও তৈরি হয়। গত এক দশকে গাড়ির সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে শহরে। কিন্তু সেই অনুপাতে রাস্তা এবং গাড়ি রাখার জায়গা বাড়েনি। তাই এ ধরনের ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য প্রশাসন ও পুরসভা। |