সেচ এবং কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে দীর্ঘ দিন আগে তৎকালীন রাজাদের উদ্যোগে কাটা হয়েছিল বিশাল বিশাল দিঘি। কিন্তু সংস্কারের অভাবে মজে যেতে বসেছে ওই সব দিঘি। অথচ সংস্কারের ব্যাপারে প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের। এর ফলে প্রয়োজনের সময় জমিতে সেচের জল পাচ্ছেন না এলাকার চাষিরা। মার খাচ্ছে কয়েকশো বিঘা জমির উৎপাদন। সমস্যাটি ময়ূরেশ্বর থানা এলাকার।
প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন আগে ঢেকার রাজা রামজীবন বহিরাগত এবং স্থানীয় মজুরদের নিয়ে ‘কাজের বদলে খাদ্য’ প্রকল্পের আদলে সেচ এবং কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে ময়ূরেশ্বরের ঢেকা এবং রামকৃষ্ণপুর মৌজায় রামসায়র, রানি-ভবানী, বুড়োদিঘি, চেঁচুড়ে দিঘি-সহ বেশ কিছু বড় জলাশয় এবং পুকুর কাটিয়েছিলেন। |
চেঁচুড়ে দিঘি-সহ ওই সব পুকুরের বেশ কিছু সংস্কার করা হলেও রামসায়র, রানি ভবানী এবং বুড়োদিঘির সংস্কারের কোনও উদ্যোগ নেয়নি প্রশাসন। এর ফলে ওই সব দিঘির জলধারণ ক্ষমতা অনেকটাই কমে গিয়েছে। তাই প্রয়োজনের সময় সেচের জল নিতে গিয়ে মাছচাষের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কায় দিঘি মালিকদের সঙ্গে চাষিদের বিরোধ বাধে বলে অভিযোগ। অথচ দিঘিগুলো সংস্কার করা হলে রবি এবং বোরো মরসুমে তো বটেই, অনাবৃষ্টির সময় কয়েকশো বিঘে জমিতে সেচের জল মিলত বলে স্থানীয় চাষিদের দাবি। রামকৃষ্ণপুরের বঙ্কিম বাগদি, ঢেকার তারাপদ মণ্ডলরা বলেন, “রাজা যে উদ্দেশ্যে দিঘিগুলি খনন করিয়েছিলেন, প্রশাসনিক উদ্যোগের অভাবে সেচের সেই সুযোগটাই মাঠে মারা যেতে বসেছে। সংস্কার হলে দিঘিগুলিতে মাছ চাষের পাশাপাশি বছরে তিন বার চাষের জন্য সেচের জল মিলত।
ঢেকা পঞ্চায়েতের প্রধান, তৃণমূলের মিঠু গড়াইয়ের দাবি, “আমরা একক ভাবে পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় আসার পরই দিঘিগুলি সংস্কারের চিন্তাভাবনা শুরু করেছি। দিঘিমালিকেরা সম্মতি দিলে পঞ্চায়েত সমিতির সহযোগিতায় ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে দিঘিগুলি সংস্কারের প্রস্তাব নেওয়া হবে।” ময়ূরেশ্বর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের কল্যাণী দাস বলেন, “পঞ্চায়েতের প্রস্তাব পেলে আমরাও দিঘি সংস্কারের ব্যাপারে যথাযথ সহযোগিতা করব।” |