মানসিক ভারসাম্যহীন তায় ভবঘুরে। রাস্তার ধারে আবর্জনার স্তূপে এক টুকরো খাবারের খোঁজ করছিলেন তিনি। মধ্য-কুড়ির সেই তরুণীকে ঘুগনি খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে শুক্রবার রাতে মালদহের সামসি এলাকায় একটি সিনেমা হলের পিছনে টেনে নিয়ে গিয়েছিল জনা কয়েক যুবক। তারপর লোকালয়ের মধ্যেই ওই অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গায় তাঁকে ধর্ষণ করে তারা। তাদেরই দু’জনকে হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষাতেও ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। মালদহের পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে। ওই তরুণীকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হবে।”
ওই দিন রাতে মহিলার গোঙানির শব্দে স্থানীয় বাসিন্দারাই প্রথমে খবর দিয়েছিলেন থানায়। খবর পেয়ে পুলিশও দেরি করেনি। তড়িঘড়ি এলাকা ঘিরে ফেলে তল্লাশি শুরু করতেই হাতেনাতেই ধরা পড়ে যায় দুই যুবক। ধৃত জয়প্রকাশ রজক ও রামপ্রসাদ চৌধুরী এলাকারই বাসিন্দা। সামসি রেলগেট এলাকায় পেশায় ধোপা জয়প্রকাশ রজকের দোকানও রয়েছে। ওই ঘটনাকে ঘিরে রাত থেকেই সামসি এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। শনিবার চাঁচল মহকুমা হাসপাতালে তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। তাঁকে কোনও হোমে রাখার ব্যবস্থা করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক দিন ধরেই ওই তরুণীকে সামসি এলাকায় দেখা যাচ্ছিল। সামসি রেল স্টেশনের আশেপাশেই থাকতেন তিনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ওই দিন রাতে, স্টেশন চত্বরে তাঁকে খাবারের সন্ধান করতে দেখে ঘুগনি দেওয়ার লোভ দেখায় ওই যুবকেরা। স্টেশন থেকে ১০০ মিটার দূরে রেলগেটে নিয়ে গিয়ে ঘুগনিও খাওয়ায়। রাত বাড়লে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পেট পুরে খাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সিনেমা হলের পিছনে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। অতঃপর, সেখানে মুখে কাপড় গুঁজে চলে অত্যাচার। ফাঁকা জায়গায় গভীর রাতে গোঙানির আওয়াজ শুনে ভয়ে সেখানে না গিয়ে প্রায় দেড়শো মিটার দূরে সামসি পুলিশ ফাঁড়িতে ফোন করে বিষয়টি জানান এক বাসিন্দা। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে রামপ্রসাদকে ধরে ফেলে। তাকে জেরা করেই জয়প্রকাশের কথা জানতে পারে পুলিশ। ধৃতরা জেরায় তরুণীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। পুলিশ জানায়, ওই তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তাঁর বাড়ি কোথায় তা তিনি জানাতে পারেননি। |