কাওয়াখালির অনিচ্ছুকদের জমি ফেরাবে এসজেডিএ
শিলিগুড়ির উপকন্ঠে কাওয়াখালি উপনগরী প্রকল্পে অনিচ্ছুকদের জমি ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এসজেডিএ)।
শনিবার এসজেডিএ-র বোর্ড মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে বিষয়টি পাঠানো হয়েছে। এসজেডিএ সূত্রের খবর, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল তা দেখছেন। সেখান থেকে অনুমোদন পেলেই জমি ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। যাঁরা ক্ষতিপূরণ নেননি, এ রকম অন্তত ৫১ জন জমি ফেরত পাবেন। পুনর্বাসন প্রকল্পে শুধু আর্থিক ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন, এমন ২১০ জনকে জমি দেওয়া হবে। প্রকল্পের এলাকায় হরিচাঁদ মার্কেটে অন্তত ৬০০ ব্যবসায়ী রয়েছেন। সেই বাজারের ২.১৪ একর জমিও ফেরত দেওয়া হবে।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “অনিচ্ছুকদের জমি ফিরিয়ে দেব বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের অনুমতি মিললেই জমি ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে।” যিনি এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান থাকাকালীন ওই জমি নেওয়া হয়েছিল, সেই সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য অবশ্য দাবি করেন, বিষয়টি ‘হাস্যকর’। তাঁর বক্তব্য, “কারও জমি জোর করে নেওয়া হয়নি। কাওয়াখালিতে যে ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ দেওয়া হয়েছিল, তা দেশে কোথাও কখনও দেওয়া হয়নি। প্রকল্পের জন্য ৩০২ একর অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। জমিহারাদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ ছাড়া জমি ও অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশই সেই প্যাকেজ নিয়েছেন। এখন যাঁদের জায়গা ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলা হচ্ছে, তাঁদের জমি মাত্র ১০-১১ একর।”
বিরোধীদের একাংশের বক্তব্য, যে হরিচাঁদ বাজারের জমি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে সেখানকার অন্তত ৫০ জন ব্যবসায়ী নৌকাঘাট মোড় লাগোয়া শিলিগুড়ি পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। যাঁরা জমি ফেরত পাবেন, তাঁদের কয়েক জনও ওই ওয়ার্ডেই থাকেন। আগামী ২২ নভেম্বর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে উপনির্বাচন থাকায় নির্বাচনী বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। সে ক্ষেত্রে, এখন এই ঘোষণায় ভোটারদের প্রভাবিত করা হচ্ছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী অবশ্য বলেন, “অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমাদের সরকার বছরভর মানুষের স্বার্থে কাজ করে। ভোটের রাজনীতির কথা মাথায় রেখে কিছু করা হয় না।”
বাম জমানায় ২০০৪ সালে এসজেডিএ-র উদ্যোগে উপনগরী প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছিল। সে সময়ে বিরোধী তৃণমূল এবং কংগ্রেস জমিহারাদের পাশে দাঁড়ায়। কংগ্রেস নেত্রী দীপা দাশমুন্সির উদ্যোগে অবস্থান মঞ্চ তৈরি হয়। তৃণমূলের তরফে পশ্চিমবঙ্গ কৃষি, জমি, জীবন ও জীবিকা রক্ষা কমিটি গড়ে লাগাতার আন্দোলন শুরু হয়। বর্তমানে মন্ত্রী গৌতমবাবু ওই কমিটির সভাপতি। ভূমিহারাদের বিভিন্ন সংগঠনের তরফে প্যাকেজের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর আর্জি জানানো হয়েছিল। প্যাকেজে জমিহারাদের আর্থিক ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি প্লট বিলি এবং পরিবারে ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। পুনর্বাসনের জায়গায় রাস্তা, জল ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়। তবে কিছু জমির মালিক প্যাকেজের ক্ষতিপূরণ নেননি। তাঁরা জমি ফেরতের দাবিতে মামলাও করেন। তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে সরকার জমি ফেরতের আশ্বাস দিলে মামলা প্রত্যাহার করে নেন।
এসজেডিএ সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রশাসনের তরফে আংশিক ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন এমন ২১০ জনকে দিতে হবে ৪ একর জমি। প্রকল্পের এলাকায় খাসজমিতে বসবাসকারী আরও কিছু বাসিন্দা রয়েছেন। তাঁরাও জমি দাবি করছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকের জমি আদৌ ছিল কি না তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঠিকনিকাটা-কাওয়াখালি ল্যান্ড ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম কর্মকর্তা মণি বিশ্বাস জানান, ইতিমধ্যেই অ্যাডভোকেট জেনারেল তাঁদের ডেকে কথা বলেছেন। অনিচ্ছুকদের জমি ফেরত দিতে বর্তমান সরকারের এই প্রচেষ্টাকে তাঁরা স্বাগত জানিয়েছেন।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.