সিপিএম পরিচালিত পুরসভাগুলি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ‘জলকর’ নিচ্ছে। কিন্তু করের সিদ্ধান্ত পুরসভার একেবারে নিজস্ব বিষয়। শুধুমাত্র নির্দেশিকা দেওয়া কিংবা আবেদন করা ছাড়া রাজ্য সরকার এ বিষয়ে কিছু করতে পারে না। তবে এই সকল পুরসভার দায়িত্ব তৃণমূলের হাতে এলে জলকর নেওয়া বন্ধ করা হবে। শনিবার বরাহনগরে একটি জল-প্রকল্পের উদ্বোধনে এমনই দাবি পুরমন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিমের।
তিনি বলেন, “তৃণমূল পরিচালিত পুরসভাগুলির কোথাও জলকর নেওয়া হয় না। কিন্তু সিপিএম পরিচালিত কামারহাটি, হালিসহর পুরসভায় জলকর নেওয়া হচ্ছে। অথচ আমরা কিছু করতে পারছি না।” পুরমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে নিয়ে নতুন করে কাজিয়া তৈরি হয়েছে।
সিপিএম পরিচালিত পুরসভাগুলির একাংশের দাবি, সরকারের সম্মতিতেই জলকর নেওয়া হচ্ছে। যেমন কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান তমাল দে বলেন, “জলকর নেওয়ার শর্তেই জল-প্রকল্প তৈরি হয়েছে। সে মোতাবেক কাজ করা হচ্ছে। তখন রাজ্য সরকারের তরফেই জলকর নিতে বলা হয়েছিল। এখন মন্ত্রী কী করে এই কথা বলছেন, জানি না।”
|
এ দিন বরাহনগর জুটমিলে প্রায় ১৪ কাঠা জমিতে জল-প্রকল্প চালু করেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সাংসদ সৌগত রায়, এলাকার বিধায়ক তাপস রায়, বরাহনগর পুরসভার চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক, ভাইস চেয়ারম্যান রামকৃষ্ণ পাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। জল বিভাগের ভারপ্রাপ্ত রামকৃষ্ণবাবু জানান, এই প্রকল্প থেকে ৭টি ওয়ার্ডে (৩৪, ৩১, ৩২, ৪, ৫, ৬, ৭ ও ২৯-এর আংশিক) দৈনিক ১.৫ মিলিয়ন গ্যালন জল সরবরাহ হবে। কেএমডিএ ৬.৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প তৈরি করেছে। ৭০ হাজার মানুষ উপকৃত হবেন। পুরসভার দাবি, ওই ৭টি ওয়ার্ডে আগে জল সরবরাহ করা হত না।
পুরমন্ত্রীর দাবি, রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পরে বর্তমান সরকার বরাহনগরের মতো মোট ২৩টি জল-প্রকল্পের কাজ হাতে নিয়েছিল। তার মধ্যে ৯টি প্রকল্প চালু হয়েছে, ১২টির কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে পানিহাটি, বালি প্রমুখ পুরসভা রয়েছে। দ্রুত সেগুলি চালু হবে। আরও ৯টির কাজ শুরু হবে। তবে বরাহনগরে শুধু জল-প্রকল্পই নয়, ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজও শেষ হয়েছে। দ্রুত সেটিও চালু করা হবে। মাত্র আট মাসে এই জল-প্রকল্পের কাজ হয়েছে। মন্ত্রীর দাবি নিয়েও তৈরি হয়েছে কাজিয়া। বরাহনগর পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের অশোক রায় বলেন, “আমাদের আমলে শুরু হওয়া প্রকল্প শেষ করে নিজেদের বলে দাবি করছেন মন্ত্রী। লোকসভা, পুরসভা নির্বাচন, ঠিকাদারের গাফিলতি-সহ একাধিক কারণে সে প্রকল্প শেষ করা যায়নি। ২০১০-এ শুরু করে ২০১৩-র নভেম্বরে কাজ শেষ করল তৃণমূল। অথচ মন্ত্রীর দাবি, আট মাসে কাজ হয়েছে।” |