স্বামীর অবৈধ সম্পর্কের কথা কানে গিয়েছিল স্ত্রী-র। সেই কারণে স্ত্রী-কে খুন করার অভিযোগ উঠল স্বামী এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে।
উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায় বধূহত্যার দু’টি পৃথক ঘটনার তদন্তে নেমে খুনের কারণ হিসেবে স্বামীর অবৈধ সম্পর্কের কথা জেনে ফেলাকেই অন্যতম প্রধান কারণ বলে মনে করছে পুলিশ। দু’টি ঘটনাতেই শনিবার দুই বধূর স্বামী-সহ চার জন করে মোট আট জনকে ধরেছে পুলিশ। দু’টি ক্ষেত্রেই অভিযুক্তদের ১৪ দিন জেল-হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। শুক্রবার বাদুড়িয়াতেই অন্য একটি ঘটনায় স্ত্রীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগে গ্রেফতার হন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
পাঁচ বছর আগে বাদুড়িয়ার ঈশ্বরীগাছার আফরোজা খাতুনের (৩০) সঙ্গে কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী সাহিফুদ্দিন আরিফের বিয়ে হয়। দম্পতির তিন বছরের মেয়ে রয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, বিয়ের সময়ে পণ দিয়েছিলেন আফরোজার বাবা সারাফ আলি মণ্ডল। তাঁর দাবি, শ্বশুরবাড়ি গিয়ে আফরোজা জানতে পারেন, তাঁর স্বামীর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। আফরোজা প্রতিবাদ করলে শুরু হয় নির্যাতন। নতুন করে পণের দাবিও তোলা হয়। এ নিয়ে বাদুড়িয়ার কারিগরপাড়ায় আফরোজার শ্বশুরবাড়ির এলাকায় কয়েকবার সালিশি সভা বসালেও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। সারাফ আলির বক্তব্য, পরিস্থিতির চাপে মেয়ের নামে বড় অঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিট করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাতে ‘নমিনি’ হিসেবে নাম ঢোকানোর জন্য চাপ দিচ্ছিলেন তাঁর জামাই। তা নিয়ে নতুন অশান্তি বাধে। ২৭ অক্টোবর আফরোজার গায়ে আগুন লাগানো হয় বলে অভিযোগ। শুক্রবার রাতে এক বেসরকারি হাসপাতালে আফরোজা মারা যান। সারাফ আলির অভিযোগের ভিত্তিতে আফরোজার স্বামী সাহিফুদ্দিন, দেওর সামিউল আরিফ, শ্বশুর আবদুল ওয়াব মণ্ডল এবং শাশুড়ি সাহানারা বিবিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে ওই পরিবারটির দাবি, আফরোজা আত্মহত্যা করেছেন।
চন্দ্রকোনার বেউড় গ্রামের ঘটনাটিতেও অবৈধ সম্পর্কের ছায়া। সেখানে মুখে বিষ ঢেলে কাকলি বারিক (৩৭) নামে এক বধূকে খুনের অভিযোগ উঠেছে স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর চোদ্দো আগে ঘাটালের আলুই গ্রামের কাকলির সঙ্গে বেউড়ের বাসিন্দা ব্যবসায়ী কাঞ্চন বারিকের বিয়ে হয়। দম্পতির তিনটি সন্তান। মৃতার দাদা সুশান্ত মণ্ডলের অভিযোগ, “কাঞ্চনের সঙ্গে স্থানীয় এক মহিলার অবৈধ সম্পর্ক জানাজানি হতেই শুরু হয় গণ্ডগোল। প্রতিবাদ করায় কাকলিকে মারধর-সহ নানা অত্যাচার করত কাঞ্চন। মঙ্গলবার কাকলির মুখে বিষ ঢেলে দেয় কাঞ্চন-সহ শ্বশুরবাড়ির অন্য সদস্যেরা।” বুধবার ঘাটাল হাসপাতালে মারা যান কাকলি।
শুক্রবার কাঞ্চন-সহ মোট সাত জনের নামে খুনের মামলা দায়ের করেন সুশান্তবাবু। শনিবার বেউড়গ্রাম থেকে কাঞ্চন-সহ চার জন ধরা পড়েন। বাকিদের খোঁজ চলছে। |