কংগ্রেস-নির্ভর হবে না তৃতীয় ফ্রন্ট সরকার, মন্তব্য ইয়েচুরির
বাইরে থেকে কংগ্রেসের সমর্থন ছাড়াই এ বার তৃতীয় ফ্রন্টের সরকার তৈরি হতে পারে বলে আশা করছেন সিপিএম নেতৃত্ব। কিন্তু সেই তৃতীয় ফ্রন্টে কারা থাকবে, কী নীতি হবে, তার সব কিছুই লোকসভা নির্বাচনের পর ঠিক হবে বলে মত সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরির। পলিটব্যুরো সদস্যের বক্তব্য, “কংগ্রেস ও বিজেপির বাইরে বিকল্প খোঁজার একটা রাজনৈতিক মন্থন শুরু হয়েছে। কিন্তু তা কী আকার নেবে, তা এখনই বলা মুশকিল।”
পশ্চিমবঙ্গ-কেরল-ত্রিপুরা মিলিয়ে লোকসভায় দলের আসন বাড়বে কি না, তা নিশ্চিত নয়। সিপিএম নেতৃত্ব খুব ভাল করেই জানেন, তৃণমূল বামেদের তুলনায় বেশি আসন নিয়ে আসতে পারলে আঞ্চলিক দলগুলির জোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তখন সিপিএমের অবস্থা হবে শাঁখের করাতের মতো। এক দিকে, শুধু তৃণমূল আছে বলে সেই জোটের বিরোধিতা করা সম্ভব হবে না। আবার তৃণমূলের সঙ্গে একই জোটে থাকাও মুশকিল। তাই এখনই বিকল্প জোটের চেহারা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাবাণীতে যেতে চাইছেন না সিপিএম নেতারা।
ইয়েচুরির ব্যাখ্যা, যে জোট সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, সেই জোট তৈরি হয়েছে নির্বাচনের পরে। ভি পি সিংহ, নরসিংহ রাও, বাজপেয়ীর এনডিএ, মনমোহনের ইউপিএ, সব জোটই তৈরি হয়েছে ভোটের পরে। গুজরালের তৃতীয় ফ্রন্টের সরকারের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছিল। কিন্তু তৃতীয় ফ্রন্ট সরকারের দুর্বলতা ছিল, তা বেশি মাত্রায় কংগ্রেসের বাইরে থেকে সমর্থনের উপর নির্ভরশীল ছিল। ইয়েচুরির মতে, “এ বার আর সেই পরিস্থিতি তৈরি হবে না। জনমত সমীক্ষায় বিশ্বাস না থাকলেও দেখা যাচ্ছে, ওই সমীক্ষাগুলোয় কংগ্রেস, বিজেপি-র থেকে অন্যদের মিলিত আসন বেশি দেখাচ্ছে। অন্যরাই ঠিক করবে, বাইরে থেকে কার সমর্থন নেওয়া হবে।”
সিপিএম সূত্রের খবর, দলের মধ্যেই এই তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনের চেষ্টা, মুলায়ম সিংহ যাদবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। গত ৩০ অক্টোবর তালকাটোরা স্টেডিয়ামে সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী সম্মেলনের আয়োজনে সিপিএমের পাশাপাশি মুলায়মও অন্যতম প্রধান ভূমিকা নিয়েছিলেন। কিন্তু মুজফ্ফরনগরের গোষ্ঠী সংঘর্ষে অখিলেশ-সরকার যে ভাবে ব্যর্থ হয়েছে, তাতে সংখ্যালঘুদের মধ্যে সমাজবাদী পার্টির কতখানি বিশ্বাসযোগ্যতা রয়েছে, তা নিয়ে দলে প্রশ্ন রয়েছে। ঠিক যেমন পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘুদের মধ্যে সিপিএমের ভোটব্যাঙ্ক মজবুত নয়। পাশাপাশি আগামী লোকসভা নির্বাচনে মুলায়মের ফল খুব একটা ভাল হবে না বলেই অনেকের মত। সে ক্ষেত্রে তাঁর সঙ্গে গিয়ে সিপিএমের কী লাভ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
লোকসভায় এখন বামেদের মোট আসন ২৪টি। সিপিএম নেতারা আশা করছেন, কেরলে দলের আসন বাড়বে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে কী হবে, তা নিয়ে পলিটব্যুরো নেতৃত্বের যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। ইয়েচুরির বক্তব্য, “এমন নয় যে দলের ভিত নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পুরসভা নির্বাচনেও আমরা ৩৯ শতাংশ ভোট পেয়েছি। কিন্তু সেটা ভোটের ফলাফলে প্রতিফলিত হচ্ছে না।” কোঝিকোড় পার্টি কংগ্রেসে দল সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, আগে দলের নিজস্ব শক্তি মজবুত করতে হবে। নিজেদের শক্তি না থাকলে বিকল্প জোট করা যাবে না। আর জোট করা গেলেও অল্প শক্তি নিয়ে বামেদের নীতি রূপায়ণ করা যাবে না। আঞ্চলিক দলগুলিকে পার্টি কংগ্রেসের দলিলে ‘সুবিধাবাদী’ বলেও আখ্যা দেওয়া হয়েছিল।
এখন তা হলে ফের বিকল্প জোট গঠনের চেষ্টা কেন? ইয়েচুরি বলেন, “পার্টি কংগ্রেসের সেই সিদ্ধান্ত এখনও রয়েছে। কিন্তু নির্বাচন এসে গিয়েছে।” তাঁর বক্তব্য, অতীতে যারা সুবিধাবাদী ভূমিকা নিয়েছিল, আগামিদিনে তারা ফের সেই পথে হাঁটবে না বলে আশা করা যায়। অন্য দলগুলিকেও বুঝতে হবে, শুধু ক্ষমতায় আসার জন্য বিকল্প জোটের কথা বললে মানুষ তা গ্রহণ করবে না।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.