চুরি করা বাইক বাংলাদেশে পাচার করার অভিযোগ বাড়তে থাকায় উদ্বেগে রয়েছে কোচবিহার জেলা পুলিশ। গত তিন মাসের মধ্যে পুলিশ পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। যাদের মধ্যে ৪ জনই জেলার পশারিহাটের বাসিন্দা মনিব রায়ের খুনের ঘটনায় জড়িত। ৩১ মে কোতোয়ালি থানার পসারিহাটে রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ মনিবকে গুলি করে খুন করে তার বাইক নিয়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। ওই ঘটনার তদন্তে নেমেই বাইক পাচারকারী চক্রের হদিস পেয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানতে পারে, বাইক চুরির উদ্দেশ্যে মনিব রায়ের পথ আগলে দাঁড়ায় দুস্কৃতীরা। দুষ্কৃতীদের বাধা দেওয়ায় তাঁকে গুলি করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতেদের জেরা করার পরে পুলিশ জেনেছে, সিতাই এবং দিনহাটা দিয়ে বাংলাদেশে বাইক পাচার করা হচ্ছে। জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি থেকে চুরি হওয়া মোটর বাইক পাচারের জন্য কোচবিহারে নিয়ে আসা হচ্ছে বলেও পুলিশ সূত্রে খবর মিলেছে। জেলা পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়াল বলেন, “সম্প্রতি বাইক চুরিকে কেন্দ্র করে একটি খুনের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে নানা তথ্য জানা গিয়েছে। বাইক পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।” তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা আরও জানতে পেরেছেন, বাইকের ইঞ্জিন লাগিয়ে বাংলাদেশে মোটর চালিত ভুটভুটি বা জলযান তৈরির প্রবণতা খুবই বেশি। সে কারণে বাংলাদেশে বাইকের ইঞ্জিনের চাহিদা তুঙ্গে। কোনও একটি খ্যাতনামা কোম্পানির পুরোনো বাইক বাংলাদেশে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়। চোরাই বাইক পাচার চক্রের হাতে আসার পরে সেগুলির যন্ত্রাংশ খুলে বস্তায় ভরে বাংলাদেশে পাচার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। দিনহাটার, গীতালদহে একটি বড় অংশে সীমান্তে কাঁটা তারের বেড়া নেই। সেই এলাকা দিয়েই মোটর বাইক পাচার চলে বলে অভিযোগ। সিতাইয়ে কাঁটাতারের উপর দিয়েই বাইকের যন্ত্রাংশ সীমান্তের ওপারে চালান করার অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি পাচার চক্রের আরও একটি দলের ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেই ঘটনায় উদ্ধার হয়েছে ৫টি মোটর বাইকও। গত ৬ মাসে জেলায় অন্তত ২০টি বাইক চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। |