উত্তর দিনাজপুরের রূপাহার থেকে ডালখোলা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ৬০ কিমির সংস্কার নিয়ে সংশয়ে বাসিন্দারা। জেলা প্রশাসন এবং জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ দু’তরফেই দ্রুত সড়ক মেরামতির আশ্বাস দেওয়া হলেও, ব্যবসায়ী সংগঠন থেকে শুরু করে পরিবহণ সংগঠন ডান-বাম রাজনৈতিক দলের নেতারাও সংস্কার কাজ শুরু হওয়া নিয়ে আশাবাদী নয় বলে জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, সড়ক মেরামতির দাবিতে গত ছয় মাস ধরে টানা আন্দোলন চলার সময়েও বিভিন্ন দফায় প্রশাসন এবং জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়। যদিও সেই মত কাজ শুরু হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ। সে কারণে এবারও সড়কের মেরামতি নিয়ে সংশয়ে ওই সংগঠনগুলি। পরিবহণ মালিক এবং ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা পৃথকভাবে জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে আগামী সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু না হলে ফের আন্দোলনে নামার হুমকিও দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন।
জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া বলেছেন, “জাতীয় সড়ক মেরামতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় ৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে ওই টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে আমাদের জানানো হয়।” জাতীয় সড়ক মালদহ বিভাগে প্রকল্প অধিকর্তা মহম্মদ সইফুল্লার দাবি, “চার লেন রাস্তা তৈরির কাজে জমি অধিগ্রহণে সময় লাগছে। তাই সড়ক মেরামতির কাজ শুরু হতেও সময় লাগছে। এ মাসের মধ্যেই কাজ শুরু করা হবে।”
গত এপ্রিল মাস থেকে রুপাহার থেকে ডালখোলা পর্যন্ত জাতীয় সড়ক পুরোপুরি বেহাল হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। সড়ক জুড়ে অসংখ্য গর্ত। পিচের চাদর উঠে গিয়ে ইট ও পাথর ছড়িয়ে রয়েছে। বেলাহ সড়কে যানজট এবং দুর্ঘটনা নিত্যদিনের সঙ্গী বলে অভিযোগ। যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে পড়েছে বলে পরিবহণ মালিকেরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে দাবি করেছেন। পণ্য পরিবহণে সমস্যা হয়। সড়ক সারানোর দাবিতে গত মে মাস থেকে জেলার নানা এলাকায় একাধিক বার অবরোধ করা, জেলাশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। মালদহে গিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রকল্প অধিকর্তার কাছেও স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। জেলা বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অশোক চন্দ বলেন, “গত ছয় মাস ধরে কত আন্দোলনই হল, প্রতিবারই প্রশাসন ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ দ্রুত সড়ক মেরামতির আশ্বাস দিয়েছিলেন। কোনবারই কাজ হয়নি। আর ভরসা রাখতে পারছি না। আগামী সপ্তাহের মধ্যে মেরামতির কাজ শুরু না হলে জেলাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হবে।” পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্স সম্পাদক জয়ন্ত সোম এবং রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ী বলেন, “প্রশাসন কিমবা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে আর প্রতারিত হতে চাই না। চলতি মাসেও কোনও উদ্যোগ না নেওয়া হলে ব্যবসা বন্ধের ডাক দেওয়া হবে।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুবীর বিশ্বাস বলেন, “দলের তরফে অনির্দিষ্টকাল ধরে জাতীয় সড়ক অবরোধ প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।” জেলা তৃণমূল সভাপতি রাজ্যের পরিষদীয় সচিব অমল আচার্যের হুমকি, “দ্রুত কাজ শুরু না হলে জেলার কেন্দ্রীয় সরকারি দফতর অনির্দিষ্ট কালের জন্য ঘেরাও করা হবে।” জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দের দাবি, “কেন্দ্রের অর্থে দীপা দাশমুন্সি সড়ক মেরামতি শুরুর চেষ্টা চালাচ্ছেন।” |