সিপিএম-কংগ্রেস তরজায় উন্নয়ন থমকে চাঁচলে
গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৩টি আসনের মধ্যে ৯টি কংগ্রেসের দখলে গেলেও তফশিলি জাতি সংরক্ষণের নিয়মে প্রধান পদ সিপিএমের দখলে যায়। সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও উপপ্রধান পদ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় কংগ্রেসকে। যার জেরে পঞ্চায়েত এলাকায় উন্নয়নের কাজ থমকে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।
সংরক্ষণ নিয়মের জেরে সিপিএম-কংগ্রেস দু’দলের সদস্যদের নিয়ে বোর্ড গঠন হলেও, বাসিন্দাদের অভিযোগ বোর্ড গঠনের পরে প্রধান পঞ্চায়েতের অফিসে আসেননি। প্রধানের অফিসে না আসা নিয়ে কংগ্রেস-সিপিএম দু’পক্ষের মধ্যে তরজা শুরু হয়েছে। বাসিন্দারা অভিযোগ করেন। প্রধানকে দফতরে না পেয়ে সংশাপত্র সহ নানা পরিষেবা নিতে আসা বাসিন্দাদের নাকাল হতে হচ্ছে। মালদহের রতুয়া ১ ব্লকের চাঁদমনি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে এই ঘটনায় উদ্বেগে ব্লক প্রশাসন। চাঁচলের মহকুমা শাসক সঞ্জীব দে বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।” রতুয়া ১ বিডিও নীলাঞ্জন তরফদার বলেন, “ওই পঞ্চায়েতে রাজনৈতিক সমস্যা তৈরি হয়েছে। উন্নয়নের কাজ স্থগিত থাকার বিষয়টি মেনে নেওয়া যায় না। দ্রুত যাতে সমস্যার নিরসন হয় তার জন্য পদক্ষেপ করা হবে।”
প্রশাসন এবং গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে পঞ্চায়েত অফিস ‘সচল’ না হওয়ায় পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজও থমকে গিয়েছে। যেমন বাটনা থেকে হাড়িকোল পর্যন্ত দু’কিলোমিটার রাস্তা কংক্রিটের করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও প্রধানের সম্মতি না মেলায় সেই কাজ থমকে রয়েছে বলে পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা চালু সহ একশো দিনের কাজ প্রকল্পের জব কার্ডের মঞ্জুরি পত্রেও প্রধানের সই জরুরি। আবাসিক শংসা, জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র, গর্ভবতীদের জননী সুরক্ষার টাকা পেতে প্রধানের অনুমোদন জুরুরি বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
দফতরে অনুপস্থিতির কথা মেনে নিয়ে অবশ্য ওই কারণে কংগ্রেসকেই অভিযুক্ত করেছেন সিপিএমের প্রধান হরিবোলা মোশাহার। তাঁর অভিযোগ, “বোর্ড গঠনের সময়ে কংগ্রেস এলাকায় সন্ত্রাস করেছে। সে কারণেই নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে যাইনি। দলের নির্দেশ মেনেই পদক্ষেপ করব।” তবে, সিপিএমের রতুয়া জোনাল কমিটির সম্পাদক জহুর আলম বলেন, “নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেই প্রধানকে পঞ্চায়েতে পাঠানো হয়নি। তবে এবার প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে। প্রধানকে অফিসে যেতে বলা হবে।”
চাঁদমনি ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পদ তফশিলি জাতি সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। কিন্তু কংগ্রেসের কোনও বিজয়ী সদস্য তফশিলি জাতির না হওয়ায়, প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সিপিএমের তফশিলি জাতির সদস্যকে প্রশাসনের প্রধান পদে বেছে নেওয়া হয়। কংগ্রেসের তরফে সিপিএমের নমে পাল্টা অভিযোগ তোলা হয়েছে। জেলা কংগ্রেস নেতা আব্দুল হামিদ বলেন, “সিপিএম উন্নয়ন চায় না বলে প্রধানকে পঞ্চায়েতে আসতে বাধা দিচ্ছে। সন্ত্রাসের মনগড়া গল্প তৈরি করেছে।” কংগ্রেস উপপ্রধান এমদাদুল হক বলেন, “সন্ত্রাসের অভিযোগ ভিত্তিহীন। রাজনৈতিক কারণেই প্রধান পঞ্চায়েতে আসছেন না। প্রতিনিয়ত বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। প্রধানের কাজ আমরা করতে পারিনা। প্রশাসনকে সব জানিয়েছি।”
বার্ধক্য ভাতার তালিকায় নতুন নাম উঠেছে বাসিন্দা আমজাদ আলি ও নুর মহম্মদের। তাঁরা বলেন, “প্রধানের সই না মেলায় আবেদন পত্র পূরণ করতে পারছি না। উপপ্রধান সহ অন্যদের বলেও কাজ হচ্ছে না।” হাড়িকোলের বাসিন্দা জ্যোৎস্না বেওয়া, সমরত বেওয়ারা বলেছেন, “বিধবা ভাতার জন্য প্রায় প্রতিদিন পঞ্চায়েত অফিসে যাচ্ছি। কাজ হচ্ছে না।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.