পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রকে অপহরণ করে দুষ্কৃতীরা ২৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চায় বলে অভিযোগ তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হল চাষি পরিবার। শুক্রবার মাথাভাঙার শিকারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নবীনের দোলা এলাকায় ওই কৃষকের বাড়িতে ফোন করে ওই মুক্তিপণ চাওয়া হয়। পুলিশ জানায়, দক্ষিণ ২৪ পরগণার কালিকাপুর মাদ্রাসার ওই ছাত্রের নাম রাহুল হোসেন। ২৬ অক্টোবর থেকে সে নিখোঁজ রয়েছে। ওই ঘটনায় উদ্বিগ্ন তার পরিবারের সদস্যরা। বিষয়টি তাঁরা এ দিন মাথাভাঙা থানার পুলিশকে জানিয়েছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেছেন, “খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। সব খতিয়ে দেখে দরকারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ওই ছাত্রের বাবা সুলতান মিয়াঁ, মা লাইলি বিবি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।” সুলতানবাবু বলেন,“ছেলে কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ। ভেবেছিলাম সঠিক ট্রেন ধরতে না পারায় ওই বিপত্তি হয়েছে। সবাই মিলে খোঁজ করছিলাম। শীঘ্রই তাঁর দেখা পাব বলে আশা করেছিলাম। ফোন পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছি।”
রাহুলের পরিবার সূত্রে জানা যায়, চার মাস আগে কালিকাপুর মাদ্রাসায় পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হয়। রাহুল ছাড়া তাঁদের গ্রামের আরও কয়েক জন ছাত্র ওই মাদ্রাসায় পড়ে। সেখানে ভর্তি হওয়ার পরে ওই ছাত্রদের সঙ্গেই মাঝে মধ্যে বাড়িতে যাতায়াত করত। রাহুল ঈদের ছুটিতে এবারও দল বেঁধে তাঁরা বাড়িতে ফেরে ছুটি কাটিয়ে গত ২৫ অক্টোবর রাহুল সহ ওই এলাকার ৯ জন ছাত্র একসঙ্গে কালিকাপুর মাদ্রাসার উদ্দেশে রওনা হয়। নিউ কোচবিহার থেকে তাঁরা উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস চেপে শিয়ালদহ যায়। হাসনাবাদ লোকাল ট্রেন চেপে কালিকাপুর মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা। শিয়ালদহ থেকেই দল থেকে আলাদা হয়ে পড়ে রাহুল। আর সবাই মাদ্রাসায় পৌঁছয়। রাহুল অবশ্য পৌঁছয়নি। রাতে রাহুলের মোবাইলে ফোন করে তাঁর পরিবারের লোকেরা জানতে পারে, ভুল ট্রেন ধরে সে অন্যত্র চলে গিয়েছে। সেখান থেকে সে ফেরার চেষ্টা করছে। তার পর থেকে রাহুলের মোবাইলে বড়বাজারের ঠিকানা দিয়ে এক ব্যক্তি তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছে। বিষয়টি তাঁরা মাথাভাঙার পুলিশকে জানিয়ে ভবানী ভবনে গিয়েও সব জানায়।
মাথাভাঙা থানার পুলিশ রাহুলের মোবাইল ফোন টাওয়ার লোকেশন করে জানতে পারে, সে ক্যানিং থানা এলাকায় রয়েছে ক্যানিং থানাতেও যায়। রাহুলের পরিবারের লোকজন এদিন একটি মোবাইল থেকে রাহুলের মায়ের নম্বরে ফোন করে রাম সিং পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি ওই ছাত্রকে অপহরণ করা হয়েছে জানিয়ে ২৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মাথাভাঙার শ্রমিক তৃণমূলের নেতা আলিজার রহমান বলেন, “এ রকম ফোন পেয়ে পরিবারের লোকজন ভেঙে পড়েছে। আমরা তাঁদের পাশে রয়েছি। পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।” |