|
|
|
|
|
|
|
খেলাধুলা ২... |
|
|
ব্যারেটোর বাড়িতে ইলিশ সুয়োকা খোঁজেন মালাইকারি |
কলকাতায় খেলতে এসে ওঁদের কেউ হাফ-বাঙালি, কেউ কোয়ার্টার।
ঘরে ঘরে আড্ডা জমালেন তানিয়া রায়। |
বাঙাল বনাম ঘটি!
ইলিশ বনাম চিংড়ি!
ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগান!
এই লড়াই বাংলা-বাঙালির চির কালের। কিন্তু ব্রাজিলীয় হোসে ব্যারেটোর ইলিশ প্রীতি বাঙাল-ঘটির লড়াইকে এক বিন্দুতে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
ফুটবল জীবনের বেশি সময়টা মোহনবাগানে কাটালেও ব্যারেটো কিন্তু বেশি খুশি হন পদ্মার ইলিশ পাতে পড়লেই। এমনকী ডার্বি ম্যাচ জেতার পরও তাঁর বাড়িতে চিংড়ি নয়, সেলিব্রেশন হত ইলিশ দিয়েই।
দক্ষিণ কলকাতার অনোয়ার শাহ রোডে এক শপিং মলের লাগোয়া আবাসনের চার নম্বর টাওয়ারের চৌত্রিশ তলার ‘এল’ ফ্ল্যাট। সেখান থেকে প্রায় দিন ভেসে আসে ইলিশের গন্ধ। আর সে ফ্ল্যাট কোনও খাদ্যরসিক বাঙালিবাবুর নয়, ওখানেই থাকেন বাগানের আদরের সবুজ-তোতা। তাঁর স্ত্রী ভেরোনিকা, দুই মেয়ে নাতালিয়া, ইসাবেলা আর ছেলে জন।
ভোরোনিকা ভরপুর ঘরনি। ঘর সাজানোর প্রচণ্ড শখ। শহর ঘুরে ‘ইন্টিরিয়র ডেকরেশনের’ জিনিসপত্র কেনা ওঁর নেশা। ওঁদের টিপটপ ফ্ল্যাটে ডোকরা থেকে ব্রাজিলের বিখ্যাত পুতুলের ছড়াছড়ি।
ব্যারেটো যদি ইলিশে মজেন, চিংড়ির প্রেমে তবে কে? ‘দাদাগিরি’-র ‘গুগলি’র মতো শোনালেও এটা কিন্তু এক্কেবারে ‘ফ্ল্যাট ডেলিভারি’। মালাইকারিতে হাবুডুবু খাচ্ছেন জাপানি সুয়োকা।
সুয়োকার ডেরা ল্যান্সডাউনের শিশুমঙ্গল হাসপাতালের অল্প দূরেই। ঘরনি চিজুকে নিয়ে এ বার পুজোয় ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলেন সুয়োকা। সেদিন চিজুর পরনে ছিল শিফনের শাড়ি। কলকাতায় আসার পর বাঙালি মেয়েদের শাড়ি পরতে দেখে পুজোয় আগে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে দু’টি শাড়ি কিনে ফেলেছেন সুয়োকার জাপানি বৌ। |
ভেরোনিকার রান্নাঘরে। |
সেই শাড়ি পরে সুয়োকার হাত ধরে চিজু বাবুবাগান, তালতলা, সিংহি পার্কের ঠাকুর দেখতে দেখতে ঢুকে পড়েছিলেন একটি বাঙালি রেস্তোরাঁয়। সুয়োকার প্রবল শখ স্ত্রীকে চিংড়ির মালাইকারি খাওয়ানোর। কিন্তু পুজোর বাজারে চিংড়ির মালাইকারি ততক্ষণে শেষ।
শেষ পর্যন্ত ভেটকি ফ্রাই অর্ডার করেছিলেন বটে, কিন্তু নিজের পছন্দের ডিশ চিজুকে খাওয়াতে না পারার আফশোস এখনও যায়নি জাপানি মিডিওর। বললেন, “যখন মোহনবাগানের হয়ে খেলতে এসেছিলাম তখন প্রথম খেয়েছিলাম। তারপর থেকে যত বার কলকাতায় এসেছি তত বারই হোটেলে গিয়ে মালাইকারি খেয়েছি।” সুয়োকা পত্নী অবশ্য ভেটকির ফ্রাইয়েরই ‘দিওয়ানি’ হয়ে গিয়েছেন। এখন বাঙালি কাউকে পেলেই তাঁকে ধরে ফ্রাই বানানোর রেসিপি চাইছেন।
ব্যারেটো, সুয়োকা থেকে ওকোলি ওডাফা, র্যান্টি মার্টিন্স। পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে কলকাতায় খেলতে আসা বিদেশিদের অন্দরমহলে ঢুঁ মারলে এমন অদ্ভুতুড়ে গল্প পাবেনই পাবেন।
বাংলার রীতি-নীতি, সংস্কার, খাওয়াদাওয়া, পোশাকআশাক এমনকী দুর্গাপুজো, কালীপুজোও বাঙালি বাড়ির গণ্ডি পেরিয়ে হই হই করে ঢুকে পড়েছে এই সব জাপানি, ব্রাজিলিয়ান, নাইজিরীয়দের ঘরেও!
এবারের পুজোর কথাই ধরুন। ওডাফা আর ব্যারোটো থাকেন একই কমপ্লেক্সে। সেখানে এবার পুজোর উদ্যোক্তারা ওঁদের ধুতি পরে মণ্ডপে যেতে অনুরোধ করেন। প্রবল উৎসাহে দুজনেই তাতে রাজি হয়ে যান। ব্যারেটোর স্ত্রী ভেরোনিকা তো আজকাল বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতে শাড়িই পরছেন।
একাদশীর দিন সকালে মোহনবাগানের অনুশীলনে পৌঁছে রীতিমতো চমকে দিলেন ওকোলি ওডাফা। এগিয়ে এসে বললেন, ‘শুভ বিজয়া।’ তিন বছরে কলকাতায় কাটিয়ে ওডাফাও দিব্যি এখানকার কায়দাকানুন রপ্ত করার পথে!
ওডাফা গল্প করছিলেন, “আমার চার ছেলে পড়ে ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে। ওরা স্কুলের বন্ধুদের থেকে শুনে এসে বায়না করছিল পুজোর সময় ওদেরও নতুন জামা চাই। সেই জামা পরে নিজের কমপ্লেক্সের পুজোয় অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে মিলে খুব মজা করেছে।”
ওডাফার মতোই পুজোর সময় নিজের অভিজ্ঞতার কথা শোনাতে গিয়ে ব্যারেটো বলছিলেন, “নীচের পুজো প্যান্ডেলের পাশে আইসক্রিম, পপকর্ন, চিপসের দোকান বসেছিল। আমার ছেলেমেয়েকে দেখলাম, ওখানে যাচ্ছে আর খাবার কিনে খাচ্ছে। কখনও বা বেলুন আনছে। ছোট থেকে ওরা এখানে আছে, তাই বোধহয় আমার থেকে অনেক বেশি বাঙালি হয়ে গেছে।” |
|
|
পুজোর শাড়ি কিনতে চিজু আর সুয়োকা। |
ছেলের সঙ্গে ওডাফার ব্রেকফাস্ট। |
|
তবে কলকাতা-প্রেমের এই ছবিটা কিন্তু জেমস মোগার কাছে একেবারেই পাবেন না। চলতি মরসুমে ইস্টবেঙ্গলে সই করার সৌজন্যে এখন কলকাতারই বাসিন্দা দক্ষিণ সুদানের এই স্ট্রাইকার। প্রথমবার কলকাতাকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছেন। যাদবপুরের বাসিন্দা মোগার মনে এখনও দাগ কাটতে পারেনি তিলোত্তমা।
এক রবিবার। সল্টলেক স্টেডিয়ামের ঠিক বাইরে কথা হচ্ছিল মোগার সঙ্গে। বলছিলেন, “কলকাতা ভাল বা খারাপ আমি বলছি না। আমার এখানে কোনও বন্ধু নেই। বৌ, দুই ছেলেও দেশে। প্র্যাকটিসের পর বাকি দিনটা একেবারে একা হয়ে যাই। হয়তো কিছু বন্ধুবান্ধব থাকলে এটা হত না। পুণেতে যেমন। বেশ কিছু বন্ধু ছিল। তাই এতটা সমস্যা হয়নি। তা ছাড়া এখানকার ট্র্যাফিক জ্যাম খুব বিরক্তিকর।”
বাড়ির কথা, নিজের ছেলেদের কথায় অসম্ভব আবেগপ্রবণ লাল-হলুদের এই স্ট্রাইকার, “আমার দুই ছেলের নাম রনি আর টনি। ছোট টনি ফুটবল খেলতে পছন্দ করে। বড়র ফুটবলে আগ্রহ কম।”
হঠাৎ বললেন, “আমাদের ওখানে সব মিষ্টি জলের মাছ, জানেন? ওখানকার মাছ খেলে, কলকাতার মাছ আর আপনার ভাল লাগবে না।”
জেমস মোগা কলকাতায় এসেছেন সবে চার মাস। কিন্তু র্যান্টি তো গত বছর থেকে এ শহরে। তবু কলকাতার সঙ্গে এখনও পুরোপুরি মানিয়ে নিতে পারেননি তিনিও। সায়েন্স সিটির কাছে মঠপুকুরে এক পেল্লাই কমপ্লেক্সে থাকেন র্যান্টি-পরিবার।
ওঁর কথায়, “কলকাতা খুব সুন্দর শহর। এখানকার লোকজনও খুব ফ্রেন্ডলি। কিন্তু কোথাও যেন একটা দূরত্ব রয়ে গেছে। তবে গোয়া আমার অনেক কাছের।”
র্যান্টির তুলনায় বরং ওঁর স্ত্রী-ছেলেমেয়েরা বেশি আপন করে নিয়েছে কলকাতাকে। র্যান্টি-ঘরনি তিতিলায়ো গল্প করতে বেশ ভালবাসেন। শখ রয়েছে নিত্য নতুন ডিশ রান্নার। আশেপাশের ফ্ল্যাটে যে সব বাঙালি থাকেন, তাঁদের থেকে বিভিন্ন রেসিপির কথা শুনেছেন। কিন্তু র্যান্টি খেতে পছন্দ করেন না বলে, সে সব আর করে ওঠা হয়নি।
|
কালীপুজোয় র্যান্টি পরিবার। |
কিছুটা আক্ষেপের সুর তাই তিতিলায়োর গলায়, “এখানকার অনেক কিছুই আমাকে খুব অ্যাট্রাক্ট করে। বাঙালিরা তো খুব ভাল রাঁধতে পারেন বলে শুনেছি। বাঙালি ডিশ কোনও দিন খাইনি। বাঙালি রান্না শিখতে ইচ্ছে করে। কিন্তু র্যান্টি যে একেবারেই খাদ্যরসিক নয়।”
জাপানে সবচেয়ে বড় ফেস্টিভ্যাল হল ওশোগাতসু। জাপানি নিউ ইয়ার। এই সময় জাপান পুরো ‘ফেস্টিভ মুড’-এ থাকে। গোটা দেশ সেজে ওঠে। নতুন রং বেরঙের পোশাক পরে সবাই রাস্তায় বেরোয়।
ইস্টবেঙ্গলের জাপানি-তারকা সুয়োকার ঘরণি চিজুর বর্ণনায়, “আপনাদের এখানে যেমন দুর্গা পুজোয় সবাই মজা করে, আমরাও সে রকম ওসোগাতসু-তে। গোয়ায় থাকার সময় কার্নিভাল দেখেছি। ক্রিসমাস পার্টিতে গেছি। কিন্তু দুর্গাপুজো প্রথম দেখলাম, এই ভিড়, আলো, বাজনা, মানুষের উচ্ছ্বাসআমাকে নিজের দেশের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে।”
ব্রাজিলে আবার ফেব্রুয়ারিতে কার্নিভাল হয়। সেটাই ওখানকার সবচেয়ে বড় উৎসব। চলে মাসখানেক ধরে।
মোগা-ওডাফার আবার ক্রিসমাস-ই প্রধান উৎসব। নিজেদের আলাদা উৎসব থাকলেও পুজোর সময় কিন্তু ওডাফা-ব্যারেটোরাও চুটিয়ে মজা করেছেন।
ঠাকুর দেখা তো ছিলই, সঙ্গে নতুন জামা-কাপড় পরাও। পাশাপাশি ল্যাদ খাওয়া বাঙালির মতো বন্ধুদের বাড়ি গিয়ে দেদার আড্ডা। দুর্গাপুজো শেষ হতে না হতেই নাতালিয়া, ইসাবেলারা কালীপুজোরও আগাম প্ল্যান করে রেখেছিল। বাজি ফাটানো থেকে মোমবাতি দিয়ে বাড়ি সাজানো--- কোনওটাই যাতে বাদ না যায়।
র্যান্টির দুই ছেলে জেমস আর এমানুয়েল। মেয়ে ব্লেসিং। তিনজনই বাবার কাছে বায়না করে এবার গুচ্ছের বাজি কিনেছিল কালীপুজোয়। তা নিয়ে আর পাঁচ জন দায়িত্ববান বাবার মতোই দুশ্চিন্তায় ছিলেন বাড়ির কর্তা। “গত বার ওরা এখানকার সবাইকে কালীপুজোয় বাজি ফাটাতে দেখেছে। এ বার তাই বায়না করে বাজি কিনেছিল। কিন্তু এই আগুন নিয়ে বাচ্চাদের লাফালাফি আমার বেশ ভয়ই লাগে,” বলছিলেন র্যান্টি।
ব্যারেটো আবার নিজের চৌত্রিশ তলার ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশ জুড়ে বাজির রোশনাই দেখতে বেশি পছন্দ করেন। ব্রাজিলের কার্নিভালেও বাজি ফাটে। তবে এই শহরের মতো এত শব্দ থাকে না।
ব্যারেটো বললেন, “বাজি ফাটানোর চেয়ে, বাজি দেখতে আমার বেশি ভাল লাগে। প্রতিবারের মতো এ বারেও কালীপুজোর রাতে সবাইকে নিয়ে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়েছিলাম বহুক্ষণ। গোটা শহরটা আলোয় ঝলমল করে। দুর্দান্ত লাগে।’’
লাল-হলুদের জাপানি মিডিও তো ঢাকের আওয়াজে মুগ্ধ। “মন ভাল করে দেওয়ার মতো বাজনা। দুর্গা পূজোয় শুনেছিলাম। এখনও কানে লেগে আছে,” বলছিলেন সুয়োকা।
কলকাতার সঙ্গে সখ্য গড়ে না উঠলেও ঢাকের আওয়াজ মন কেড়েছে মোগারও। বললেন, “একটা পুজোয় গেস্ট করে নিয়ে গিয়েছিল। ওখানেই প্রথম ঢাক দেখলাম। বাজাতে চেষ্টাও করেছি। কিন্তু ভাল করে পারিনি। ঢাকের আওয়াজটা খুব মজার। ঢিংকু নাকুর, নাক্কু নাকুর...,” বলেই হো হো করে বাচ্চা ছেলের মতোই হেসে উঠলেন মোগা।
এই মুহূর্তে যে সব বিদেশি কলকাতা মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এই শহরকে কাছ থেকে দেখেছেন ব্যারেটো। কলকাতা তাঁর কাছে ‘সেকেন্ড হোম’। “আসলে এই শহরের সঙ্গে ব্রাজিলের অনেক মিল। ব্রাজিলের মতো এখানকার লোকেরা খুব ফ্রেন্ডলি। আই রিয়েলি লভ কলকাতা,” বলছিলেন ব্যারেটো। |
এডে চিডি |
উগা ওপারা |
কলকাতায় গঙ্গার ঘাটের দিকটায় যেতে খুব
ভাল লাগে। একবার মনে আছে, কোনও
একটা
দরকারে গঙ্গার পাড় ধরে যাচ্ছিলাম। তখন
সূর্য ডুবতে চলেছে প্রায়। নদীর জল লাল
হয়ে গিয়েছিল। অদ্ভুত মায়াবী লাগছিল। |
এখানকার মানুষ এত ফুটবল পাগল,
এখানে আসার আগে আমি ভাবতেও
পারিনি। কলকাতায় যখন থাকব না
তখন
এই ফুটবল উন্মাদনা খুব মিস করব।
সঙ্গে কলকাতার ডার্বি ম্যাচও। |
পেন ওরজি |
কাতসুমি |
কলকাতার পুরি-সবজি আমার দারুণ
লাগে। তার সঙ্গে এখানকার আরেকটা
সম্পূর্ণ অন্য ব্যাপার আমার খুব প্রিয়।
এ শহরে এত রকম ধর্মের মানুষ একসঙ্গে
থাকেন। কারও সঙ্গে কারও বিভেদ নেই। |
খুব বেশি দিন আমি কলকাতায় আসিনি।
এখনও মাঠের বাইরে খুব একটা শহরটাকে
দেখে উঠতে পারিনি। তবে এখানকার
ফুটবল সাপোর্টাররা এত এনথুজিয়াসটিক,
এটা আমাকে অবাক করেছে। |
|
কলকাতায় ব্যারেটোর দৌড় আবার শুধুমাত্র পুজো বা বাজিতে থেমে নেই। প্রচণ্ড হিন্দি ফিল্মের ভক্ত সবুজ তোতা। প্রিয় অভিনেতা? মিঠুন চক্রবর্তী। ওঁর বেশ কিছু হিন্দি সিনেমাও দেখে ফেলেছেন তিনি। “আমার এক বন্ধু পাশে বসে ইংলিশে অনুবাদ করে দেয়। মিঠুন চক্রবর্তীর বেশ কিছু অ্যাকশন মুভি আমি দেখেছি।” “তাই? কোন সিনেমা?” জানতে চাইলে অবশ্য মাথাটাথা চুলকে একশা। সরল হাসি ছড়িয়ে যায় ওঁর মুখে। কিছুতেই নামগুলো মনে আসে না।
তবে শুধু ব্যারেটো নয়, বলিউডি-প্রেম কিন্তু এঁদের অনেকেরই। ওডাফা যেমন। ওঁর পছন্দের নায়িকার এক নম্বরে ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন। সুয়োকার প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। র্যান্টির ঝোঁক হলিউডে। ওঁর পছন্দ জেনিফার লোপেজকে।
স্ত্রী ভেরোনিকার পাশে বসে ব্যারেটো অবশ্য নিজের পছন্দের নায়িকার কথা বলতে ‘সাহস’ পাননি। তবে হাবেভাবে দিব্যি বুঝিয়ে দিলেন বাঙলি মেয়েদের তাঁর বেশ পছন্দ।
সুয়োকা আবার জাপানিদের সঙ্গে মিল খুঁজে পেয়েছেন বাঙালি মেয়েদের। স্ত্রী চিজুর সামনেই তাঁর খোলামেলা স্বীকারোক্তি, “জাপানি মেয়েরা যেমন খুব মিষ্টি হয়, তেমনই বাংলার মেয়েরাও।”
ওডাফার চোখে আবার, “সব বাঙালি মেয়েই ঐশ্বর্যার মতো সুন্দর। তবে আমার দেশের মেয়েদের সৌন্দর্যও কম নয়। আমার বৌ কিন্তু খুব সুন্দরী। ওর খেলা দেখে প্রথম প্রেমে পড়েছিলাম। তখনও যতটা সুন্দরী ছিল, এখনও ততটাই।”
ব্যারেটো, সুয়োকা, ওডাফা, র্যান্টিরা এমনিতে পুরোপুরি ‘ফ্যামিলি ম্যান’। বৌ-বাচ্চা নিয়ে ভরাট সংসার। আর পাঁচ জন বাঙালি পরিবারের রোজকার জীবনের থেকে কোথাও কি আলাদা এঁরা? চট করে দেখে তো বোঝার উপায় নেই!
সুয়োকার বাড়ি গেলেই যেমন নালিশ শুনতে হয়, “আমার বৌয়ের এখন এতই শাড়ি কেনার নেশা হয়েছে যে আমার পকেট খালি হয়ে যাচ্ছে।”
আবার ব্যারেটোর অন্দরমহলে কান পাতলে শুনতে পাবেন, “দিনে দিনে যা জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, এ বার একটু বুঝে শুনে খরচ করো ভেরো (পড়ুন ভেরোনিকা)।”
এ সবই তো বাঙালি বাড়ির নিত্য দিনের গল্প।
|
ছবি: উৎপল সরকার, শঙ্কর নাগ দাস। |
|
|
|
|
|