শেষ পর্যন্ত এ বার রাজ্যে বাড়তি লোকসভা আসন দাবি করার পথেই হাঁটতে চলেছে বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। সেই সঙ্গে তারা যে তিনটি আসনে এখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, তার মধ্যে দু’টিতেই নতুন মুখ এনে ময়দানে নামছে তারা। প্রার্থী বাছাইয়ের কাজে খানিকটা এগিয়ে গিয়ে বাম শরিকদের মধ্যে ফ ব-ই প্রথম লোকসভা ভোটের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু করে দিচ্ছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই বাড়তি আসনের নাম ও সম্ভাব্য প্রার্থী ঠিক করে বামফ্রন্টের কাছে দাবি পেশ করবেন ফ ব নেতৃত্ব।
কোচবিহার ও পুরুলিয়া লোকসভা আসন এখন ফ ব-র দখলে। এ ছাড়াও, বামফ্রন্টের মধ্যে ফ ব-র ‘কোটা’ হিসাবে তারা লড়ে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত আসনে। এই তিন জেলার সম্পাদকমণ্ডলীকেই রাজ্য দফতরে ডেকে লোকসভার জন্য প্রস্তুতি বৈঠক সেরে নিয়েছে দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী। পুরুলিয়ার সাংসদ নরহরি মাহাতোই এ বার ফের প্রার্থী হবেন বলে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের আলোচনায় ঠিক হয়েছে। বারাসতের প্রার্থী হিসাবে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নেতৃত্ব শুক্রবারই রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মোর্তাজা হোসেনের নাম জমা দিয়েছেন। যে হেতু সম্ভাব্য নাম একটিই, তাই মোর্তাজার উপরেই রাজ্য নেতৃত্বের সিলমোহর পড়ার সম্ভাবনা। আর কোচবিহারের সাংসদ নৃপেন রায়কে ফের প্রার্থী করার পক্ষপাতী নয় দল। নতুন প্রার্থী কে হতে পারেন, চলতি মাসের শেষেই জেলা নেতৃত্ব তা ঠিক করতে বসবেন। আগামী ৬-৭ ডিসেম্বর রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী ও ৮ ডিসেম্বর রাজ্য কমিটির বৈঠকে বাড়তি আসন ও প্রার্থী তালিকার ব্যাপারে দলের অবস্থান চূড়ান্ত হওয়ার কথা।
পরম্পরাগত তিনটি আসনের বাইরে এ বার মুর্শিদাবাদ, মালদহ বা উত্তর দিনাজপুর থেকে সম্ভব হলে দু’টি বা নিদেনপক্ষে একটি বাড়তি আসন চায় ফ ব। যে তিনটি আসনে ফ ব লড়ে, প্রত্যেকটিতেই সামনে কঠিন লড়াই। দলের একমাত্র রাজ্যসভার সাংসদ বরুণ মুখোপাধ্যায়ের মেয়াদও আগামী মার্চে শেষ হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে লোকসভায় ওই তিনটির মধ্যে কোনও আসন না-জিতলে দিল্লিতে ফ ব-র কেন্দ্রীয় দফতর বলে কিছু থাকবে না! কারণ, একটি সাংসদ-বাংলোই দীর্ঘ দিন ধরে তাদের দফতর। রাজধানীতে নতুন ‘নেতাজি ভবন’ তৈরির জন্য যদিও অর্থ সংগ্রহে নেমেছেন অশোক ঘোষেরা, তবু সে কাজ কবে বাস্তবায়িত হবে ঠিক নেই। সেই জন্যই জয়ের সম্ভাবনা আছে, এমন অন্তত একটি আসন চাইছেন ফ ব নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য অবশ্য বলছেন, “অতীতে আমরা চারটি আসনেই লড়তাম। আমাদের পাঁচটি আসন দেওয়া হয়েছিল ১৯৭৭ সালে। শেষ পর্যন্ত তার মধ্যে একটিতে সে বারই সিপিএম লড়েছিল। কিন্তু কলকাতার একটি আসন বেশ কয়েকটা লোকসভা ভোটে বামফ্রন্টের মধ্যে আমাদের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল। আমাদের হারের পরে সিপিএম সেই আসনটি নিয়ে নেয়।” |