|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
অভিনয় দর্পণ |
পাঁচ হাজার বছরের পুরনো ভারতবর্ষের থিয়েটার থেকে কেউ যদি নাট্যাভিনয়ের আধুনিকতা রপ্ত করতে চান, কী ভাবে তিনি শুরু করবেন? ভারতীয় থিয়েটারের অতীত, বর্তমান, সাম্প্রতিক ঘেঁটে একজন শিক্ষার্থী কোথা থেকে অভিনয়ের আধুনিকতা নির্ণয় করবেন? এ সমস্ত প্রশ্নের উত্তর মিলবে অমল আল্লানা সম্পাদিত ঢাউস বইটিতে। দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা ও নিয়োগী বুকস বের করেছে দ্য অ্যাক্ট অব বিকামিং/ অ্যাক্টরস টক (৩০০০.০০)। অমল বইটি শুরুই করেছেন ই. আলকাজি’র ষাটের দশকের ‘দ্য ড্রামাটিক ভিশন’-এর মুখবন্ধ দিয়ে, তাতে আলকাজি উপরোক্ত প্রশ্নগুলিই নিরসন করার চেষ্টা করেছেন। গোটা বইটিতে যেগুলি খুব উল্লেখযোগ্য ভাবে উপস্থিত তা হল আমাদের ভারতীয় থিয়েটার কী ভাবে পশ্চিমি প্রভাব থেকে জাতীয় আধুনিকতায় পৌঁছেছে। শুধু তাই নয়, এই যে পুরাকাল থেকে এ কালে নতুনত্বে আসার ইতিহাসটা যেমন ধরা পড়েছে, তেমনই স্বাধীনতার আগে যে রকম ভাবে থিয়েটারে আত্মদর্শন ও আত্মপ্রকাশ ঘটত অভিনেত্রীদের, তাও ধরা পড়েছে। এখন স্বাধীনতা-পরবর্তী যুগে, বিশেষত সাম্প্রতিক সময়ে আরও নতুন ভাবে সে আত্মদর্শন ও আত্মপ্রকাশের সুযোগ ঘটছে। থিয়েটারে টেকনোলজির চ্যালেঞ্জ এখন আরও একটি নতুন বিষয় হয়ে উঠেছে। অমল তাঁর নিজস্ব প্রতিবেদনে এই ব্যাপারগুলো নিয়েই মূলত আলোচনা করেছেন।
বইটিকে সাজিয়েছেন কয়েকটি পর্বে। প্রথম পর্বে আছে অভিনেতার সামাজিক আত্মপরিচয়, বাস্তবতার জন্ম, অভিনেতার শিক্ষা ইত্যাদির সঙ্গে গিরিশচন্দ্র ঘোষ, বিনোদিনী দাসী, বাল গন্ধর্ব প্রমুখ নাট্যব্যক্তিত্বদের থিয়েটার নিয়ে আলোচনা। আলোচনাগুলি এগিয়েছে দু’ভাবে, কেউ নিজে লিখেছেন নিজেকে নিয়ে এবং থিয়েটার নিয়ে আবার কেউ কেউ লিখেছেন কোনও কোনও নাট্যব্যক্তিত্বকে নিয়ে। এ ভাবেই দ্বিতীয় পর্ব এবং তৃতীয় পর্ব জুড়ে আছেন শম্ভু মিত্র, তৃপ্তি মিত্র, জোহরা সেগল, শ্রীরাম লাগু, উৎপল দত্ত, উত্তরা বাওকার, সুরেখা সিক্রি, মনোহর সিংহ, ওম শিবপুরী, হেইসনাম সাবিত্রী, মায়া কৃষ্ণারাও, বি জয়শ্রী, নাসিরুদ্দিন শাহ প্রমুখ।
নাসিরুদ্দিন তাঁর সাক্ষাৎকারে অভিনয়ের অনুপুঙ্খ অনুভূতি ও মুদ্রা নিয়ে কথা বলেছেন। বলতে বলতে ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামায় তাঁর শিক্ষার সঙ্গে সিনেমায় পাওয়া তাঁর অভিনয়ের শিক্ষার কথা আলোচনা করেছেন। তিনি যখন প্রথম ক্যামেরার সামনে আসেন, তখন শ্যাম বেনেগাল তাঁকে শিখিয়েছিলেন যে, দর্শক তাঁকে দেখছে ক্যামেরার চোখ দিয়ে। যেখানে থিয়েটারে দর্শক দেখে সরাসরি তাদের নিজেদের চোখ দিয়ে। অতএব ফিল্মে অভিনয়ের সময় ক্যামেরা বা ক্যামেরার লেন্সকেই দর্শক মনে করে অভিনয় করে যেতে হবে। |
|
|
|
|
|