দুর্গাপুজোর সময় অতিবৃষ্টির জেরে কজওয়ের একাংশ ভেঙে পড়েছে। দিনের পর দিন সেই ভাঙন ক্রমশ বাড়ছে। সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে যাতায়াতের রাস্তা। ছোট গাড়ি যাতায়াত করলেও বাস চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাঁকুড়ার রানিবাঁধ থানার কতরো গ্রামে ভৈরববাঁকি নদীর উপরে কজওয়ের একাংশ ধসে পড়ায় রানিবাঁধ থেকে বারিকুল যাওয়ার রাস্তায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সমস্যায় পড়েছেন বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। অবিলম্বে ওই কজওয়ে মেরামতির দাবিতে সরব হয়েছেন তাঁরা।
রানিবাঁধ-বারিকুল রাস্তার উপরে কতরো গ্রামের কাছে ভৈরববাঁকি নদী। ওই নদীর উপরে রয়েছে প্রায় ৫০ ফুটের একটি কজওয়ে। সম্প্রতি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কজওয়ের একাংশ ভেঙে পড়েছে। প্রায় ১৫ ফুট লম্বা ও ৮ ফুট চওড়া গর্ত হয়েছে। তার ফলে ছোট গাড়ি কোনও ভাবে যাতায়াত করতে পারলেও বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আর তার জেরে বিপাকে পড়েছেন রানিবাঁধ ও বারিকুল থানা এলাকার অন্তত ৩০-৩৫ টি গ্রামের বাসিন্দারা। |
রানিবাঁধের কতরো গ্রামের কাছে ভাঙা কজওয়ে। ছবি: দেবব্রত দাস। |
রানিবাঁধ থেকে বারিকুল যাওয়ার সোজা রাস্তা এটিই। কতরো, কলাবনি, ধনকুড়া, চালকিগোড়া, দুবরাজপুর, খেজুরখেন্ন্যা, বারিকুল-সহ আশপাশের বহু গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন নানা প্রয়োজনে এই রাস্তায় যাতায়াত করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দুর্গাপুজোর সময় বৃষ্টির জলের তোড়ে ওই কজওয়ের একাংশ ভেঙে যায়। কিছুদিন পরে ফের বৃষ্টিতে কজওয়েটির আরও কিছুটা অংশ ধসে পড়ে। এর পর থেকেই বাস চলাচল বন্ধ। পরে অবশ্য সেতুর পাশ দিয়ে অস্থায়ী রাস্তা তৈরি করে গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে। বাসকর্মীদের দাবি, প্রথম দিকে কিছুটা ঝুঁকি নিয়েও ওই রাস্তায় বাস চালানো হচ্ছিল। কিন্তু, কজওয়ের অনেকটা জায়গা জুড়ে ধসের ফলে যে গর্ত হয়েছে, তাতে বাস চালানোটা রীতিমত বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
কতরো গ্রামের বাসিন্দা বরণ সর্দার, ধনকুড়া গ্রামের রামু সর্দার বলেন, “কিছুদিন আগে ওই সেতুর একাংশ ধসে গিয়েছে। আর বৃষ্টি হলেই ধস বাড়ছে।” তাঁদের ক্ষোভ, এতদিন ধরে ওই সেতুর একাংশ ভেঙে রয়েছে। প্রশাসনকে সব জানানোও হয়েছে। কিন্তু সেতু মেরামতির ব্যাপারে প্রশাসনের কোনও উদ্যোগ আজ পর্যন্ত তাঁদের চোখে পড়েনি। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় রানিবাঁধ বা ফুলকুসমা যাওয়া এখন রীতিমতো কষ্টকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে এলাকার মানুষ জানিয়েছেন। রানিবাঁধের বিডিও সুমন্ত দেবনাথ অবশ্য দাবি করেন, কতরো গ্রামের কাছে ভৈরববাঁকি নদীর কজওয়ের একাংশ অতিবৃষ্টির জেরে ভেঙে পড়েছে। ভেঙে পড়া অংশটি মেরামতির জন্য জেলা পরিষদকে বলা হয়েছে। আপাতত যাতায়াতের জন্য কজওয়ের পাশেই অস্থায়ী রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তীর আশ্বাস, “এলাকার মানুষের অসুবিধা দূর করার জন্য ওই কজওয়েটি সম্পূর্ণ মেরামতির পরিকল্পনা রয়েছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু করা হবে।” |