অবৈধ মদের ঠেক ভেঙে দেওয়ায় নেশাগ্রস্তরা গালিগালাজ দিয়েছিল প্রমীলা বাহিনীকে। এর প্রতিবাদে জাতীয় সড়ক আটকে দিলেন প্রমীলা বাহিনীর সদস্যেরা। শুক্রবার হুড়ার লক্ষ্মণপুরে, পুরুলিয়া-বাঁকুড়া ৬০ এ জাতীয় সড়কে কিছুক্ষণ অবরোধ চলে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
লক্ষণপুরে বেশ কয়েকটি অবৈধ মদের ঠেক নিয়ে বাসিন্দাদের বিশেষত এলাকার মহিলাদের অভিযোগ ছিল। কিছু নেশাগ্রস্তর দৌরাত্ম্যে তাঁদের সম্ভ্রণ নিয়ে এলাকায় যাতায়াত করা দায় হয়ে পড়েছিল। এমনকী এলাকার কম বয়েসিরাও ওই সব ঠেকে যাতায়াত শুরু করেছিল বলে অভিযোগ। অতিষ্ঠ হয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এলাকার মহিলারা লাঠি-ঝাঁটা নিয়ে কয়েকটি অবৈধ মদের ঠেকে অভিযান চালান। তাদের হানায় নেশাগ্রস্তরা গ্লাস-বোতল ফেলে পালিয়ে যায়। চম্পট দেয় ঠেকের মালিকরা। পুলিশ গিয়ে ঠেকগুলি ভাঙচুর করে। এর পরেও শুক্রবার সকালে এলাকায় আরও কয়েকটি ঠেকে অবৈধ মদ বিক্রির খবর শোনা যায়। প্রমীলা বাহিনী সেখানে ফের হানা দেয়। সেখানে নেশা করতে আসা লোকজন ওই মহিলাদের গালিগালাজ করে বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের বাদানুবাদে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। পাশের জাতীয় সড়কে গাড়ি আটকে অবরোধ শুরু করেন ওই মহিলারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই গ্রামের উপর পাড়া ও সংলগ্ন এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরে অবৈধ মদের কয়েকটি ঠেক গজিয়ে উঠেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, আগে সেখানে দু’-তিনটি ঠেক থাকলেও দুর্গাপুজোর সময় থেকে ২০-২২টি ছোট ঠেক চলছে। এলাকার মহিলারা জানিয়েছেন, কিছুদিন ধরে অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁচেছে, বাড়ির পুরুষরা গৃহস্থালি জিনিসপত্র বেচে মদ খাচ্ছে। কবিতা বাউরি, কাজরী বাউরি, পূর্ণিমা বাউরি, টুকলি বাউরিদের অভিযোগ, “স্বামীরা ভাতের হাঁড়ি, কাপড়-জামা বিক্রি করে দিচ্ছে। বাধা দিলে ঝগড়া-ঝাঁটি করে তুলকালাম বাধিয়ে দিচ্ছে।”
লক্ষণপুর পঞ্চায়েতের স্থানীয় সদস্য মিঠু বাউরি বলেন, “স্ত্রী-রা প্রতিবাদ করলে স্বামীরা তাদের মারধর করছে। এ ভাবে কতদিন ওরা সহ্য করবে?” ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সাধনা সেনাপতি বলেন, “রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ না করে উপায় ছিল না। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল এলাকার মহিলাদের। বাড়ির কিশোররাও ঠেকগুলিতে যাচ্ছিল। তাই নির্যাতিতা মহিলারা নিজেরাই এই ঠেকগুলি ভেঙে দিয়েছেন।” পুলিশ জানিয়েছে, ঠেকগুলি থেকে বেশ কিছু পরিমাণ অবৈধ দেশি মদ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে তা নষ্ট করে দেওয়া হয়। হুড়ার বিডিও সুব্রত পালিত বলেন, “ওই এলাকায় স্থানীয় মহিলারা কিছু অবৈধ মদের ঠেক উচ্ছেদ করেন। কিছু লোকের মন্তব্যে উত্তেজনা ছড়ালেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই ছিল।” |