এ বার রঘুনাথপুরে শিল্পের দাবিতে তৎপর হল স্থানীয় তৃণমূলও। বৃহস্পতিবার নিতুড়িয়ার সড়বড়িতে তৃণমূলের উদ্যোগে আয়োজিত এক বৈঠকে একটি নতুন কমিটি গড়া হয়েছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘রঘুনাথপুর শিল্প উন্নয়ন কমিটি’।
কমিটি নেতৃত্বের দাবি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের পাশাপাশি কমিটিতে অনেক অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্বেরাও থাকছেন। ফলে, এটা কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলের কমিটি নয়। যদিও বাস্তব হল, এই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন রায়বাঁধ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান, তৃণমূলের গুনারাম গোপ, নিতুড়িয়া এলাকার তৃণমূল নেতা নির্মল রাউত, রঘুনাথপুর ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রদীপ মাজি এবং রঘুনাথপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মদন বরাট। মোদ্দা কথায়, কমিটির মাথায় থাকা প্রত্যেকেই শাসকদলের নেতা।
ঘটনাচক্রে, ডিভিসি-র তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প-সহ রঘুনাথপুরে শিল্প চেয়ে সভা করার কথা বৃহস্পতিবারই ঘোষণা করেছে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফ। আজ, শনিবার রঘুনাথপুরে সেই সভা থেকে ডিভিসি-সহ এলাকার প্রস্তাবিত শিল্পপ্রকল্পগুলি দ্রুত রূপায়ণের দাবি তোলা হবে। তার ঠিক আগেই এলাকায় শিল্প সংক্রান্ত বিষয়ে নতুন কমিটি গড়ল তৃণমূল।
শুক্রবার কমিটির কিছু প্রতিনিধি রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসকের সঙ্গে দেখা করে ডিভিসি-র প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরু করানোর আবেদন জানান। পাশাপাশি কমিটির তরফে এ-ও দাবি করা হয়েছে, প্রস্তাবিত ‘ওয়াটার করিডর’ এলাকার শতাধিক জমি-মালিক ক্ষতিপূরণের চেক নিতে সম্মত হয়েছেন। প্রশাসন ওখানে বিশেষ শিবির করে চেক বিলির বন্দোবস্ত করুক। প্রশাসন সূত্রের খবর, আগামী ১৩ ও ১৫ নভেম্বর নিতুড়িয়ার রায়বাঁধ ও গুনিয়াড়া পঞ্চায়েত অফিসে চেক বিলির শিবির করার অনুমোদন চেয়ে জেলাশাসকের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে মহকুমা প্রশাসন।
সদ্য গঠিত কমিটির সভাপতি গুনারামাবাবু এবং সম্পাদক নির্মলবাবুর বক্তব্য, “এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে ডিভিসি-র প্রকল্পের সমস্যা মেটানো জরুরি। আমরা ইতিমধ্যেই অনিচ্ছুক জমি-মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের তেক নেওয়ার ব্যাপারে রাজি করানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছি।” ঘটনা হল, বৃহস্পতিবার রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ডিভিসি-র চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ সেন। দু’এক দিনের মধ্যেই সমস্যা মিটে যাবে বলে বৈঠকের পরে আশা প্রকাশ করেন তাঁরা। তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পকে ঘিরে তৈরি হওয়া জট ছাড়াতে জমিহারাদের কয়েকটি দাবি মেনে নেওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। জোর দেওয়া হবে সামাজিক সুরক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পেও।
সব মিলিয়ে প্রকল্পটিকে ঘিরে একটা আশার আলো দেখা দিয়েছে। ‘রঘুনাথপুর শিল্প উন্নয়ন কমিটি’-র এক নেতার দাবি, “শিল্পমন্ত্রীর ওই বৈঠকের কথা জানিয়ে আমরা এলাকায় জমি-মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। ডিভিসি-র অবস্থানের তাঁদের কথাও জানিয়েছি। তাই অনেকে চেক নিতে রাজি হচ্ছেন।” নতুন কমিটি গঠন প্রসঙ্গে রঘুনাথপুরের তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি বলেন, “শিল্প চেয়ে এলাকার উন্নয়নে যাঁরা ইতিমধ্যেই সামিল হয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁরা শিল্প রক্ষার্থে কমিটি গড়ে অনিচ্ছুক জমি-মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান সূত্র বের করতে উদ্যোগী হয়েছেন। জনপ্রতিনিধি হিসাবে তাদের আমি প্রয়োজনীয় সাহায্য করব।” |