শিশুসন্তানকে আটকে রেখে শ্বশুরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার নালিশ নিয়ে পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন তরুণী। তার জেরেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মিলে তাঁকে পিটিয়ে খুন করেন বলে অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ায় গুড়দহ গ্রামে খাদিজা বিবি (২১) নামে ওই তরুণীর মৃত্যু হয়। খুনের অভিযোগে তাঁর স্বামী মনিরুল মণ্ডল ও শ্বশুর আব্দুল লতিফ মণ্ডলকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মনিরুলের মা আয়েশা বিবি-সহ আরও পাঁচ অভিযুক্তের খোঁজ চলছে।
দুপুর ১২টা নাগাদ বাদুড়িয়া থানায় গিয়ে খাদিজা অভিযোগ করেছিলেন, স্বামী-শ্বশুরবাড়ির লোক তাঁকে পিটিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু তাঁর তিন বছরের ছেলে তাহিদকে আনতে দেয়নি। পুলিশ তাহিদকে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়। মনিরুল থানায় কথা দেয়, স্ত্রীর উপর আর অত্যাচার করবে না। স্ত্রী-সন্তানকে বাড়িতে ফেরায়।
রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ গ্রামবাসীর মারফত থানায় খবর আসে, খাদিজা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু ঘটনাস্থলে পুলিশ দেখে, খাদিজার দেহ বাড়ির বারান্দায় শোয়ানো। মৃতার দাদা রাজিবুল মণ্ডলের অভিযোগ, খাদিজা থানায় যাওয়ায় মনিরুল ও তার বাড়ির লোকেরা তাকে মারধর করে। অসুস্থ হয়ে পড়লে রাত ৮টা নাগাদ তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু খাদিজা মারা যায়। এর পরেই মনিরুল খাদিজার দেহ বাড়িতে নিয়ে এসে দাবি করে, সে গলায় দড়ি দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বছর চারেক আগে বাদুড়িয়ার উত্তর দিয়াড়া গ্রামের খাদিজার সঙ্গে গুড়দহ গ্রামের মনিরুলের বিয়ে হয়। কিন্তু আয়েশা বিবি খাদিজাকে পুত্রবধূ হিসেবে মানতে পারেননি। প্রথম দিকে মনিরুল স্ত্রীর পাশে থাকলেও কিছু দিন পর থেকে সে-ও পণের দাবিতে অত্যাচার শুরু করে বলে অভিযোগ। এই নিয়ে কয়েক বার এলাকায় সালিশি সভা হয়েছিল। পুলিশ শ্বশুরবাড়ির লোকদের সতর্কও করে। লাভ হয়নি।
বাদুড়িয়া থানার ওসি কল্লোল ঘোষ অবশ্য বলেন, “ঠিক কী ভাবে খাদিজার মৃত্যু হয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পেলে তা বলা সম্ভব নয়। আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ |