উদ্যোগী পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন
বন্যা দুর্গত এলাকার পুনর্গঠনে একশো দিনের প্রকল্পে কাজ
কাঁসাই নদীর বাঁধ ভেঙে বন্যার জলে ডুবে বাড়ি-ঘর ভেঙেছে, নষ্ট হয়েছে ধানের খেত, পানের বরজ, বাহারিপাতার চাষ ও মাছের ভেড়ি-পুকুর। ধীরে-ধীরে বন্যার জল নামার পর তা দেখে দিশেহারা লোকজন। এই পরিস্থিতিতে পাঁশকুড়া, তমলুক ও নন্দকুমার ব্লকের বন্যা কবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির রোজগারের ব্যবস্থা করতে একশো দিনের কাজের প্রকল্প রূপায়ণে জোর দিচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের বক্তব্য, বন্যা কবলিত এলাকাগুলিতে গত দু’মাসে একশো দিনের প্রকল্পে কোনও কাজ করা যায়নি। ফলে প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পিছিয়ে পড়েছে এলাকাগুলি। এ দিকে, বন্যা কবলিত গ্রামগুলির রাস্তাঘাট বন্যায় ভেঙেছে। জলে ডুবে নষ্ট হয়ে গিয়েছে বনসৃজনের গাছপালা, বিদ্যালয়, অঙ্গনওয়াড়ির ভবন-সহ বিভিন্ন গ্রামীণ পরিকাঠামো। একশো দিনের প্রকল্পে পুনর্গঠনের কাজ করলে একই সঙ্গে তিন উদ্দেশ্য সাধন হবেমজুরির মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে টাকা আসবে, এলাকার পুনর্গঠন হবে, গতি আসবে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে।
ইতিমধ্যে বন্যা কবলিত এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বিভিন্ন কাজের পরিকল্পনা তৈরি করে স্কিম জমা দিতে বলা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অজয় পাল বলেন, “বন্যা কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের আয়ের সুযোগ বাড়াতে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বিভিন্ন পরিকাঠামো পুনর্নির্মাণের কাজ করার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। জব কার্ডধারীদের অন্তত ১০০ দিনের কাজের ব্যবস্থা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। যাঁদের এখনও জব কার্ড নেই তাঁদের দ্রুত জব কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।”
প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যা কবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলি একশো দিনের কাজের প্রকল্পে প্রথমে মাটি, ইটের টুকরো ফেলে উঁচু করা হবে। এরপরে ওই সব রাস্তা কংক্রিটের করা হবে। রাস্তা তৈরি ও সংস্কারের এই কাজে প্রচুর শ্রমদিবস তৈরি করা যাবে বলে আশা প্রশাসনের। একশো দিনের কাজে বনসৃজনেরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে, পুনর্নির্মাণ করা হবে ক্ষতিগ্রস্ত শৌচাগার। এ ছাড়াও ওই এলাকায় দরিদ্র পরিবারের ইন্দিরা আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির জন্য নিচু জমি উঁচু করা, ব্যক্তিগত পুকুর খনন, ফলের বাগান তৈরি প্রভৃতি কাজ হবে একশো দিনের প্রকল্পে। বৃহস্পতিবার বন্যা কবলিত তমলুক ব্লকের বিডিও অফিসে ১০০ দিনের কাজের ভারপ্রাপ্ত জেলা আধিকারিক এই বিষয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতদের প্রধান ও নির্মাণ সহায়কদের নিয়ে বৈঠক করেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি আর্থিক বছরে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত জেলায় গড়ে ৩০ দিনের কাজ হয়েছে। আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে বন্যা কবলিত পাঁশকুড়া, তমলুক ও নন্দকুমার ব্লকের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জবকার্ডধারী বাসিন্দারা যাতে কমপক্ষে ১০০ দিন কাজ পান, সেজন্য বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, বর্তমানে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে অদক্ষ শ্রমিকদের ন্যূনতম দৈনিক মজুরি ১৫১ টাকা, অর্ধদক্ষ শ্রমিকদের মজুরি ২২৬.টাকা ৫০ পয়সা, দক্ষ শ্রমিকদের মজুরি ৩০২ টাকা। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে অতিরিক্ত কাজের সুযোগ পেলে বাড়তি আয়ের সুযোগ হবে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ওই সব দরিদ্র পরিবারগুলি কিছুটা হলেও আর্থিক দিক থেকে উপকৃত হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.