যে তিনটি উপজাতির জন্য ‘আমুর ফ্যালকন’ বিপন্ন প্রজাতির তালিকাভুক্ত হয়েছিল, সেই নাগা, ওখা আর পাংগতি নাম তিনটিই এখন আমুর সংরক্ষণের ক্ষেত্রে পথিকৃৎ হতে চলেছে। নাগাল্যান্ড বন দফতরের উদ্যোগে তিনটি আমুর ফ্যালকনের পিঠে বেঁধে দেওয়া হয়েছে সোলার প্যানেল আর অ্যান্টেনা—যা আসলে ‘স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং ডিভাইস’। বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা পথ পাড়ি দেওয়া এই পরিযায়ী বাজ পাখির গতিবিধির উপরে নজর রাখতে এমন উদ্যোগ এই প্রথম।
মঙ্গোলিয়া থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা অবধি, প্রতি বছর শরৎ-হেমন্ত-শীতে প্রায় ২২০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয় আমুরের দল। নাগাল্যান্ডে বিশ্রাম করতে নামে তারা। তখনই ওখা জেলায় লক্ষাধিক আমুরকে হত্যা করতেন পাংগতি-সহ আশপাশের গ্রামের গ্রামবাসীরা। এ বছর ডব্লিউটিআই, ন্যাচারাল নাগাস ও রাজ্য বন দফতর আমুর বাঁচাতে উদ্যোগী হয়। গ্রামবাসীদের সচেতন করে তাঁদেরই সংরক্ষণের কাজে লাগান পরিবেশপ্রেমীরা। শিকার নিষিদ্ধ করা হয়। ফলে এ বছর একটিও আমুর হত্যার ঘটনা ঘটেনি। সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এই ঘটনা বিশ্বে চমকপ্রদ উদাহরণ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। |
আমুরের জীবনযাত্রা ও দীর্ঘ যাত্রাপথের উপরে গবেষণার কাজও শুরু করা হয়েছে। হাঙ্গেরির বার্ডলাইফ ইন্টারন্যাশনালের তরফে পিটার ফেহেরভানি ও জাবোলক সয়েল, রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিবেশ প্রকল্পের তরফে নিক উইলিয়াম্স ও ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার তরফে আর সুরেশ ৩ নভেম্বর থেকে ওখায় ঘাঁটি গেড়েছেন। গত কাল দয়াং জলাধারে তিনটি আমুরের পিঠে ‘স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং ডিভাইস’ লাগান তাঁরা। তাদের নাম ‘নাগা’, ‘ওখা’ ও ‘পাংগতি’। ‘নাগা’ পুরুষ বাজ। ‘ওখা’ ও ‘পাংগতি’ স্ত্রী।নজরদারির জন্য ২৮টি আমুরের পায়ে তামার বালা পরানো হয়।
রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল এম লোকেশ্বর রাও জানান, এখন থেকে পাখি তিনটির গতিবিধির উপরে নজর রাখা সম্ভব হবে। ওদের জীবনযাপন প্রণালী ও পরিযোজনের পথ সম্পর্কেও ধারণা হবে। রাও জানান, ‘স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং ডিভাইস’-এর ওজন ৫ গ্রাম। তাই উড়তে অসুবিধা হবে না। |