ছত্তীসগঢ় থেকে পরশু খাতা খুলছে না-ভোট
ভোটযন্ত্রে এত দিন শুধু পছন্দই জানানো যেত। এ বার বোতাম টিপে অপছন্দ জানানোরও দিন এসে গেল। অর্থাৎ, কোনও প্রার্থীকেই পছন্দ না-হলে ভোট-মেশিনকে এক লহমায় সেটাও জানিয়ে দেওয়া যাবে। এ দেশের ভোট-প্রক্রিয়ায় নতুন ব্যবস্থাটির যাত্রা শুরু হচ্ছে আগামী সোমবার, ছত্তীসগঢ় থেকে।
সোমবার, অর্থাৎ পরশু ছত্তীসগঢ়ে বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এ ভাবে অপছন্দ প্রকাশের সুযোগ তাই প্রথম পাচ্ছেন ওই রাজ্যের ভোটারেরা। পিঠোপিঠি বিধানসভার ভোট নেওয়া হবে আরও চারটি রাজ্যে দিল্লি, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও মিজোরামে। সেখানেও ভোটযন্ত্রে একই ব্যবস্থা মজুত থাকবে। সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছে, ভারতীয় জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী যত নির্বাচন হবে, সব ক্ষেত্রে ব্যালটে বা বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রে অপছন্দ প্রকাশের সুযোগ রাখতে হবে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে নির্বাচন কমিশন বৈদ্যুতিন ভোটগ্রহণ যন্ত্র (ইভিএম)-এ তার সংস্থান রাখছে। যন্ত্রে ‘না ভোট’ দেওয়ার বোতামের অবস্থানও নির্দিষ্ট করা হয়েছে। কী রকম?
নির্বাচন কমিশনের খবর: ইভিএমের শেষ বোতামটির পাশে কোনও প্রার্থীর নাম বা প্রতীক থাকবে না। ওটাই আসলে ‘না-বোতাম।’ মানে, অপছন্দ জ্ঞাপনের বোতাম। তাতে লেখা থাকবে ইংরেজি বর্ণমালার চারটি অক্ষর NOTA (নোটা)। যা আসলে ‘নান অফ দ্য অ্যাবাভ’ (অর্থাৎ, উপরের কেউ না)-এর শব্দসংক্ষেপ। ‘নোটা’র উপরে সারি দেওয়া বোতামগুলির পাশে যথারীতি থাকবে বিভিন্ন দলীয় বা নির্দল প্রার্থীর নাম-প্রতীক। তাঁদের কাউকেই পছন্দ না-হলে ‘নোটা’ টিপে ভোটার নির্দ্বিধায় তাঁর রায় জানিয়ে দিতে পারবেন।
এবং ইংরেজি বুঝতে অনেকের অসুবিধে হতে পারে, এটা মাথায় রেখে ‘নোটা’ বোতামের বাঁ দিকে ‘নান অফ দ্য অ্যাবাভ’ বাক্যটাই লেখা থাকবে স্থানীয় ভাষায়। লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে ব্যবহৃত ইভিএমে ‘নোটা’ বোতামের রং হবে আলাদা আলাদা। লোকসভায় কালো-সাদা, বিধানসভায় গোলাপি-সাদা।
ভোটারের অপছন্দ অবশ্য আগেও জানানো যেত। তবে পদ্ধতি এত সহজ ছিল না। বুথের প্রিসাইডিং অফিসারের থেকে নির্দিষ্ট ফর্ম নিয়ে তা পূরণ করে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া খামে ভরে ওই অফিসারের কাছেই জমা দিতে হতো। আর পুরো ব্যাপারটা সারতে হতো বুথে উপস্থিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এজেন্টদের সামনে। এতে মতামতের গোপনীয়তা রক্ষা করা কঠিন বলে বারবার অভিযোগ উঠেছে। বস্তুত কোনও ভোটারের কোনও প্রার্থীকেই পছন্দ না-হয়ে থাকলে সেটা জানানোর জন্য ভোটকেন্দ্রে যাওয়াটা তাঁর পক্ষে শ্রমসাধ্য, সময়সাপেক্ষ ও অনেক ক্ষেত্রে বিপজ্জনক হয়ে উঠছিল। ইভিএমে স্রেফ একটা বোতাম টিপে কাজটা করা গেলে এই সমস্যা তো দূর হবেই, উপরন্তু তা গণতন্ত্রের সাফল্যের বার্তাও দেবে বলে অনেকের মত।
নির্বাচনী ফলাফলে ‘না-ভোটের’ প্রভাব কেমন হবে? কমিশন-সূত্রে বলা হচ্ছে, প্রতি বুথের ভোট গোনা শেষ হলে প্রতি প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের অঙ্ক যেমন জানাতে হবে, তেমনই প্রকাশ করতে হবে অপছন্দের ভোটসংখ্যা। গোটা কেন্দ্রে মোট ভোটের কত শতাংশ ‘নোটা’য় পড়েছে, তা-ও নথিভুক্ত করা হবে। কিন্তু যদি দেখা যায় নোটায় যত ভোট পড়েছে, কোনও প্রার্থী একক ভাবে তত ভোট পাননি?
কমিশনের ব্যাখ্যা: প্রার্থীদের জয়-পরাজয়ে এর প্রভাব পড়বে না। সর্বাধিক ভোট পাওয়া প্রার্থীকেই বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
প্রার্থীদের হলফনামা দাখিলের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন নতুন নিয়ম চালু করছে। হলফনামার পুরোটাই প্রার্থীকে পূরণ করতে হবে, কিচ্ছু ফাঁকা ছাড়বেন না। কমিশন-সূত্রের বক্তব্য, এত কাল অনেকে হলফনামায় জানতে চাওয়া সব তথ্য দিতেন না। তাই স্থির হয়েছে, কোনও তথ্যের জায়গা ফাঁকা দেখলেই রিটার্নিং অফিসার সে দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রার্থীকে নোটিস দেবেন। তার পরেও জ্ঞাতব্য তথ্য জমা না-পড়লে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হিসেবে গণ্য হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.