বছরখানেক আগে জোকা ১ ও ২ নম্বর পঞ্চায়েত এলাকা কলকাতা পুরসভার অধীনে এসেছে। এলাকাটি ১৪২,১৪৩ ও ১৪৪ এই তিনটি ওয়ার্ডে ভাগ করা হয়। কিন্তু ওয়ার্ডগুলিতে কাউন্সিলর নির্বাচন হয়নি। প্রত্যেক ওয়ার্ডের জন্য এক জন স্পেশাল অফিসার নিয়োগ করেছে পুরসভা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, নানা পুর-পরিষেবা পেতে সমস্যা হচ্ছে। স্পেশাল অফিসারদের কাছে অভিযোগ জানিয়ে সুফল মেলেনি বলেও তাঁরা জানান।
পুরসভা সূত্রে খবর, জোকা ১ ও ২ নম্বর পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ৭০ হাজার মানুষের বাস। ডায়মন্ড পার্ক ও আনন্দপল্লি এলাকায় তিনটি ওয়ার্ডের জন্য প্রশাসনিক অফিস তৈরি হয়েছে। ডায়মন্ড পার্কেই স্পেশাল অফিসাররা বসেন।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভার আওতায় আসার পরে নানা পরিষেবা পেতে সমস্যা হচ্ছে। তপশিল শংসাপত্র, বিপিএল সনাক্তকরণ, বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা পেতে সমস্যা হচ্ছে। পঞ্চায়েতের অধীনে থাকার সময়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর এই এলাকায় সাড়ে চার হাজার বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ দিয়েছিল। পুরসভার অধীনে আসার পরে এলাকায় জলের চাপ কমতে থাকে। বাসিন্দারে অভিযোগ, এক বছরের মধ্যে এখানে পানীয় জলের অনেক বেআইনি সংযোগ নেওয়া হয়েছে। তাই চাপ কমে যাচ্ছে। স্পেশাল অফিসারের কাছে অভিযোগ জানিয়ে সুরাহা মেলেনি। তা ছাড়া ওই অঞ্চলের জল সরবরাহের পরিকাঠামো এখনও পুরসভার অধীনে আসেনি। অন্য দিকে, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরও ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করছে না বলে অভিযোগ। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “এলাকাটি পুরসভার আওতায় চলে যাওয়ার পরে আমরা আর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করছি না।”
সমস্যা হচ্ছে নিকাশি নিয়েও। এ বারের বর্ষায় তিনটি ওয়ার্ডেই জল দাঁড়িয়ে ছিল। দিন সাতেক পরে পুরসভা পাম্প চালিয়ে জল বার করে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
ওই তিনটি ওয়ার্ড মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। এলাকার সাংসদ সুব্রত বক্সী। বাসিন্দারা জানান, কাউন্সিলর না থাকায় কোনও শংসাপত্র পেতে এই দুই জনপ্রতিনিধির স্বাক্ষর দরকার হয়। এর জন্য শোভনবাবুর বেহালার বাড়িতে, মেয়রের অফিসে বা তৃণমূল ভবনে গিয়ে সুব্রতবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। এতে অযথা সময় ব্যয়ের পাশাপাশি হয়রানিও হয় বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। ১৪২ নম্বর ওয়ার্ডে এক বাসিন্দা বলেন, “শোভনবাবু ও সুব্রতবাবু দু’জনই খুব ব্যস্ত। ছোটখাটো কাজের জন্য ওঁদের কাছে যাওয়াটাও খুব অস্বস্তিকর।”
শোভনবাবু বলেন, “স্পেশাল অফিসাররা সব বিষয়েই নজরদারি করছেন। স্পেশাল অফিসারদের সুপারিশ অনুযায়ীই এই এলাকায় উন্নয়নের কাজ করা হচ্ছে। বিছিন্ন ভাবে কিছু সমস্যা হয়তো হয়েছে। তবে বাসিন্দাদের সব রকম ভাবে সাহায্য করা হচ্ছে।” |