থানার ক্যামেরায় এ বার চোখ রাখবে লালবাজার
পুলিশের উপরে পুলিশেরই নজরদারি!
বিভিন্ন থানায় কী হচ্ছে, তা দেখতে এখন থেকে আর থানায় যেতে হবে না পুলিশকর্তাদের। লালবাজারে বসেই পুলিশের বড় কর্তারা দেখে নিতে পারবেন প্রতিটি থানায় কী হচ্ছে। থানার অফিসারেরা ঠিক মতো কাজ করছেন কি না, তা যেমন দেখা যাবে, তেমনই থানায় আসা সাধারণ মানুষের সঙ্গে পুলিশকর্মীরা কেমন আচরণ করছেন, তা-ও থানায় লাগানো ক্যামেরার সাহায্যে দেখা যাবে।
লালবাজার সূত্রের খবর, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কলকাতা পুলিশের এলাকা বেড়েছে। বর্তমানে কলকাতা পুলিশের অধীনে আছে কমবেশি ২০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা। থানার সংখ্যাও বেড়ে হয়েছে ৬৫। পুলিশ জানিয়েছে, প্রতিটি থানায় পুলিশের আধুনিকীকরণ প্রকল্পের টাকায় লাগানো হয়েছে চারটি করে ক্যামেরা। থানার ভিতরে সেরেস্তার পাশাপাশি ক্যামেরার নজরদারিতে থাকছে লক-আপ এবং ওসি-র ঘরও। থানার প্রবেশপথে থাকছে একটি ক্যামেরা। এক সঙ্গে দশটি ক্যামেরার ভিডিও-র মাধ্যমে ছবি দেখতে পাবেন পুলিশকর্তারা। সে জন্য প্রতিটি থানায় ইতিমধ্যেই ৪২ ইঞ্চি টিভি মনিটর বসানো হয়েছে।
লালবাজারের কর্তারা জানান, ওই চারটি ক্যামেরার সাহায্যেই পুরো থানার ভিতরে এবং বাইরে কী কী ঘটছে, তা দেখা যাবে। সব থানায় ক্যামেরা লাগানো হয়ে গিয়েছে। তবে সব থানার সঙ্গে লালবাজারের ক্যামেরার মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন করা যায়নি। চলতি মাসের মধ্যেই সেই কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের কর্তারা। এর ফলে খুব সহজেই লালবাজারের কর্তারা চাইলে থানার সর্বশেষ পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখে নিতে পারবেন।
লালবাজার সূত্রের খবর, এর আগে ২০০৮ সালে কলকাতা পুলিশ ঠিক করেছিল, আধুনিকীকরণ প্রকল্পের অধীনে কলকাতা পুলিশের সব গাড়িতেই জিপিএস বসানো হবে। উদ্দেশ্য ছিল, নজরদারির পাশাপাশি পুলিশের কোনও গাড়ি ব্যক্তিগত কাজের জন্য খাটছে কি না এবং গাড়ির অবস্থান কোথায় তা-ও লালবাজারে বসে জেনে যাওয়া। কিন্তু ওই প্রকল্প সফল হয়নি। শুধুমাত্র রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড এবং হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াডের কিছু গাড়িতে জিপিএস বসানো হয়। বাদ থেকে যায় থানার ওসির গাড়ি থেকে অন্য সব গাড়ি। এ বছর অবশ্য কলকাতা পুলিশের বেশ কয়েকটি থানা আধিকারিকের গাড়িতে লাগানো হয়েছে ক্যামেরা। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই ক্যামেরা দিয়ে কোন এলাকায় কী ঝামেলা হচ্ছে, তা লালবাজারে বসে দেখবেন কর্তারা।
পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১১ সালে কলকাতা পুরসভার সংযোজিত এলাকা কলকাতা পুলিশের অধীনে এসেছে। কলকাতা পুলিশের সদর দফতর লালবাজার থেকে ঠাকুরপুকুর, নাদিয়াল বা রাজাবাগানের মতো থানায় যেতে সময় লাগে কম করে দেড় থেকে দু’ঘণ্টা। ফলে জরুরি কোনও বৈঠকে থাকলে সেই সব থানার আধিকারিকদের লালবাজারে ডেকে পাঠানো যায় না। পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে পুলিশ কমিশনার কোনও জরুরি বার্তা তাঁর অধীনস্থ কর্মীদের দিতে চাইলে লালবাজারের কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে দিয়ে থাকেন।
এ বার থেকে লালবাজারের পুলিশকর্তারা সরাসরি ওই ক্যামেরার সাহায্য নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শহরের প্রতিটি থানার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে জরুরি নির্দেশ দিতে পারবেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই ভিডিও কনফারেন্সে ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনারেরাও যোগ দিতে পারবেন। এ জন্য ইতিমধ্যেই আটটি ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনারদের অফিসে বসানো হয়েছে ক্যামেরা। তাঁরা তাঁদের অধীন থানার আধিকারিকদের সঙ্গেও ভিডিও কনফারেন্স করতে পারবেন।
লালবাজার সূত্রের খবর, গত বুধবার কলকাতা পুলিশের আটটি ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনারদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা করেন লালবাজারের কর্তারা। ওই কনফারেন্সে প্রায় দশটি থানার আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা শুক্রবার বলেন, “বুধবারের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আমরা ওই প্রকল্পের সূচনা করেছি। আগামী দিনে সব থানাকে নিয়ে ওই ভিডিও কনফারেন্স করা হবে। এতে যেমন সময় বাঁচবে, তেমনই থানার অফিসারেরা আমাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে তাঁদের সমস্যার কথা জানাতে পারবেন।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.