টাটকা দেখাতে রাসায়নিক আলুতে, ক্ষতির আশঙ্কা
বেশির ভাগ ক্রেতাই বাজারে গিয়ে হাতে করে দেখে টাটকা ও ভাল আলু বেছে, ধুলো ঝেড়ে তারপর থলিতে ভরতে পছন্দ করেন। অনেকক্ষেত্রেই আলু বাছার পর ক্রেতার হাতের রং হয়ে যায় হলুদ রঙের ধুলোয় ভর্তি। কিন্তু সেই ধুলো যে আসলে ক্ষতিকারক রাসায়নিক সেটা অনেকেই জানেন না।
কালনা মহকুমার স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, কালনা মহকুমার ১ ও ২ ব্লকে ব্যাপক পরিমাণে জ্যোতি আলু উৎপন্ন হয়। প্রতি বছরই নভেম্বর থেকে জানুয়ারি-ফ্রেবুয়ারি মাস পর্যন্ত চলে জমিতে আলু গাছ লাগানো ও তোলার কাজ। জমি থেকে আলু তোলার পর সেগুলি মজুত করা হয় হিমঘরে। হিমঘর থেকে যখন আলু বের করা হয়, তার পরেই শুরু হয় আলু রং করার প্রক্রিয়া।
আলু ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, হিমঘর থেকে আলু বের করা থেকে রং করা পর্যন্ত রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়া। হিমঘর থেকে আলু বের করার সময় আলুগুলি থাকে ভিজে ও কালচে। তখন সেগুলি বিক্রি করার অবস্থায় থাকে না। সেই ভিজে আলু রাখা হয় কোনও ছায়ার নীচে। ব্যবহার করা হয় ‘শেড’। স্থানীয় লিচুতলা, নিভূজি বাজার, গোয়ারা, মধুপুর, বুলবুলিতলা-সহ এলাকায় হিমঘর লাগোয়া প্রায় শ’খানেক এই ধরনের শেড রয়েছে। শুকিয়ে যাওয়ার পরে বড় আলুর থেকে ছোট ও দাগি আলু আলাদা করা হয়। আলু ঝাড়াই বাছাইয়ের পরে যোগাযোগ করা হয় এই রাজ্য ও ভিনরাজ্যের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। জেনে নেওয়া হয় যে আলু পাঠানো হবে সেগুলিতে রং মেশাতে হবে কি না? যদি রং মেশাতে বলা হয় তাহলে সেই রং গাঢ় হবে না হাল্কা সেটাও জেনে নেওয়া হয়। এর পর ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুযায়ী শুরু হয় রং মেশানো।
বস্তায় রাসায়নিক ভরে রং করা হচ্ছে আলুর গায়ে। —নিজস্ব চিত্র।
আলু ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রং বলতে মেশানো হয় হলুদ রঙের এক প্রকার রাসায়নিক গুঁড়ো। কালনা ২ ব্লকের জিউধারা এলাকার আলু ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, “আলুতে মেশানো রং এলাকায় ‘অ্যালামাটি’ নামে পরিচিত। রং করার ফলে আলুর গায়ে দাগ থাকলেও সেটি বোঝা যায় না। কালনার নান্দাই পঞ্চায়েতের আলু ব্যবসায়ী ঈদের আলি মোল্লা বলেন, “মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ, উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জ, শিলিগুড়ি, মালদহ-সহ নানা এলাকায় এই রং করা আলুর চাহিদা রয়েছে। তবে কলকাতা, দুর্গাপুর, আসানসোলের মতো শহরের ক্রেতারা রঙ ছাড়া আলু চেয়ে নেন।” ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আলুতে রং করার জন্য তাঁদের অতিরিক্ত খরচ করতে হয়। বর্তমানে ২০ কেজি রঙের বস্তার দাম ২০০ টাকা। এতে ১০০ বস্তা আলুতে রং করা যায়। এই রং মূলত আসে উত্তরপ্রদেশ থেকে।
এই রং স্বাস্থ্যর পক্ষে কতখানি ক্ষতিকর? মহকুমা কৃষি আধিকারিক স্বপন মারিক বলেন, “অ্যালামাটি নামে পরিচিত হলেও এটি আসলে এক ধরনের গুঁড়ো কেমিক্যাল। যেটা স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর।” তাঁর পরামর্শ, “বাজার থেকে রং মেশানো আলু কেনার পর ক্রেতাদের উচিত সেই আলু ভাল করে ধুয়ে তার পর রান্নার কাজে ব্যবহার করা।” তবে কৃষি কর্তারা জানিয়েছেন, হিমঘর থেকে আলু বের করার পরে তার গায়ে যে আস্তরণ থাকে, রং করার পর সেটিও শুকিয়ে যায়। এর ফলে আলুর পচার সম্ভাবনা কম থাকে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.