অ্যাম্বুল্যান্স ধর্মঘট, বিপাকে রোগীরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কৃষ্ণনগর |
মন্ত্রীর সিদ্ধান্ত, হাসপাতাল চত্বরে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স রাখা যাবে না। সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার কৃষ্ণনগরের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের সামনে যে সব বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স রাখা থাকত, সেগুলির মালিক ও চালকেরা অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘট ডেকেছেন। দেখা মেলেনি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অ্যাম্বুল্যান্স ও শহরের অন্য বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সগুলিরও। দিনভর যে কারণে নাকাল হয়েছেন বেশ কয়েকজন রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকজনেরা।
হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দত্ত জানান, প্রতিদিন গড়ে এই হাসপাতাল থেকে দশ জন করে রোগীকে কলকাতা বা কল্যাণীতে ‘রেফার’ করা হয়। কিন্তু হাসপাতালের নিজস্ব অ্যাম্বুল্যান্সের সংখ্যা মাত্র একটি। তাই ‘রেফার’ করা রোগীদের নিয়ে যেতে ভরসা বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সই। তিনি বলেন, “এই দিন বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স ধর্মঘট ডাকায় ‘রেফার’ করা সত্ত্বেও বেশ কয়েকজন রোগী হাসপাতালেই রয়ে গিয়েছেন। তবে কয়েকজন রোগীর পরিবারের লোকজন অন্য গাড়ি ভাড়া করে তাঁদের নিয়ে গিয়েছেন।”
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের প্রতিমন্ত্রী তথা এই হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা বলেন, “আমি কেবল বলেছি, হাসপাতাল চত্বরে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড় করিয়ে রাখা চলবে না। রোগী নিয়ে এলে বা নিয়ে যেতে হলে তারা হাসপাতাল চত্বরে ঢুকবে, কিন্তু তারপরে বেরিয়ে যেতে হবে।” কেন এমন সিদ্ধান্ত? পুণ্ডরীকাক্ষবাবু বলেন, “হাসপাতালের পরিষেবা ঠিকঠাক রাখতেই বুধবার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া, ওই অ্যাম্বুল্যান্সগুলি এমন ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে, যাতে অন্য জায়গা থেকে আসা অ্যাম্বুল্যান্স হাসপাতালে ঢুকতে বাধা পায়।” কিন্তু এখন রোগীরা কী করবেন? পুণ্ডরীকাক্ষবাবুর বক্তব্য, “কৃষ্ণনগরে আরও অনেক অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে। সেগুলির সাহায্য নিতে পারেন।”
ওই অ্যাম্বুল্যান্সগুলির চালক ও মালিকেরা জানান, নিরুপায় হয়েই তাঁরা ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁদের দাবি, বাইরে গাড়ি রাখার জায়গা নেই বলেই বাধ্য হয়ে তাঁরা হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্স রাখেন। জেলাশাসক পিবি সালিম বলেন, “সাংসদ বা বিধায়ক কোটা থেকে দেওয়া টাকায় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবীর সংস্থার কাছে যে সব অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে, সেগুলি আমরা ব্যবহার করব।”
বর্ধমানের পূর্বস্থলীর বাসিন্দা প্রতিভা দাস চোট পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাঁকে এই দিন ‘রেফার’ করা হয় কলকাতায়। কিন্তু তাঁর বাড়ির লোকজন শেষে ভাড়া গাড়ি জোগাড় করে প্রতিভাদেবীকে নিয়ে গিয়েছেন। তাঁর স্বজন দীপক দাসের কথায়, “কোথা থেকে অ্যাম্বুল্যান্স মিলবে, বুঝতে পারিনি। বাধ্য হয়েই গাড়ি ভাড়া করে রোগীকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।” |