শেষ মুহূর্তে ছটের জন্য জায়গা পেতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। শিলিগুড়ির মহানন্দা ঘাটে একটা একশো বর্গফুট জায়গার জন্য জন্য দাম চাওয়া হচ্ছে ১০ থেকে ২০ হাজার। এমনই অভিযোগ তুলেছেন পুজো দিতে চাওয়া কয়েক জন। যদিও মহানন্দা ঘাট ছট পুজো কমিটি বা শিলিগুড়ি পুরসভার পক্ষ থেকে এমন কোনও ঘটনার কথা জানা নেই বলে জানানো হয়েছে। তবে শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত এ দিন জানিয়েছেন কেউ তাঁদের কাছে নির্দিষ্ট করে এ ধরনের অভিযোগ করলে তাঁরা কড়া ব্যবস্থা নেবেন। মেয়র বলেন, “আমি ও আমাদের লোকেরা সারা দিনই পুরসভার বিভিন্ন ঘাটে উপস্থিত ছিলাম। আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ জানায়নি। কোনও সমস্যা থাকলে আমাদের কাছে জানাতে হবে। তা হলে আমরা ব্যবস্থা নেব।”
ঘাটের জায়গা ভাড়ার বিষয়টিই অস্বীকার করেছেন মহানন্দা ঘাট ছটপুজো কমিটির সম্পাদক সন্তোষ গুপ্ত। তিনি বলেন, “ঘাট বিক্রির কথা জানি না। দূর্গাপূজার পর থেকেই ঘাট দখল করা শুরু হয়। যাঁরা ছটপুজো করতে চান তাঁরা খুঁটি পুঁতে নিজেরাই ঘাট দখল করেন। এরপর তাঁরা ঘাট বিক্রি করেছেন কিনা তা আমার জানা নেই।” পুজো করতে চাওয়া কয়েকজন বৃহস্পতিবার মহানন্দা ঘাটে আসেন তাঁরা অভিযোগ করেন, ১০০ বর্গফুট জায়গার জন্য তাঁদের কাছ থেকে এক জন ১০ হাজার আবার এক জন ১৫ হাজার টাকা চায়। কেউ কেউ আরও একটু বড় জায়গার দাম চেয়েছে ২০ হাজারও। সুভাষ সিংহ নামে ঝংকার মোড়ের এক বাসিন্দা বলেন, “আমি বাইরে থাকি। ছটপুজোর মরসুমে বাড়ি আসি। তাই দেরিতেই ঘাট দখল করতে আসতে হয়। এত টাকা চাইলে পুজো করাই মুশকিল হয়ে পড়বে।” সঞ্জীব মণ্ডল নামে সেবক রোডের এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, তাঁর কাছেও ১৫ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে বলে।
অন্যদিকে এক ঘাট দখলকারী, নাম না প্রকাশের শর্তে জানালেন, জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মাসেই পরের বারের ঘাট দখলের কাজ হয়ে যায়। পুজো কমিটি থাকলেও আসলে এক শ্রেণির দালাল এই পুরো ঘাট দখল ও রীতিমত জায়গা বিক্রি করেন। তাঁরাই পরে তা চড়া দামে বিক্রি করেন। মোটামুটি ছোট জায়গা ৫ হাজার, ও বড় জায়গা হলে তা ১০ হাজারে বিক্রি হয়। এই জায়গা বেশ কয়েকবার বিক্রি হয় বলেও জানান ওই ব্যক্তি। এঁরা আবার এই জায়গাকে কয়েকটি ভাগে বিক্রি করে ১৫ থেকে ২০ হাজারে বিক্রি করেন। ফলে ছোট ছোট জায়গা পেতে হিমশিম খেতে হয় সাধারণ মানুষকে। প্রতিবাদ করেও কোনও লাভ হয় না। কারণ এক শ্রেণির রাজনৈতিক নেতারাও এর সঙ্গে যুক্ত আছেন বলেও জানান তিনি। আর দুপয়সা লাভের জন্য তাঁরা একাজ করেন বলেও জানান। পাশাপাশি ছট উপলক্ষে শিলিগুড়ির মহানন্দা পাড়া ঘাটের পাশাপাশি, তিনবাত্তি মোড়, নৌকাঘাট, চম্পাসারি, মাটিগাড়ার বালাসন, বুড়ি বালাসন নদীঘাটে বিশেষ পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সহকারী পুলিশ কমিশনার বিশ্বনাথ হালদার। |