সাকুল্যে বরাদ্দ ৩ টাকা ৫১ পয়সা। সব্জি, মশলা এমনকী জ্বালানিও সেই টাকায় কিনতে হয় বলে এমনিতেই মিড-ডে মিল নিয়ে হিমশিম খায় স্কুলগুলি। তাই সব্জির অনেকটা জায়গা জুড়ে এত দিন ছিল শুধুই ‘সস্তার আলু’। সম্প্রতি সেই আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় মহা বিপদে পড়েছেন শিক্ষকরা। কোথাও আলু ছাড়াই খিচুড়ি হচ্ছে, কোথাও বাজারে আলু না পেয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে মিড-ডে মিল।
রাজ্য সরকার আলুর দাম ১৩ টাকায় বেঁধে দিলেও কলকাতা-সহ জেলার বাজারগুলিতে ২০-২২ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে এখনও। কোথাও আবার আলুই নেই বাজারে। এই অবস্থায় ভাইফোঁটার পরে স্কুল খুলে মিড-ডে মিলের জোগাড় করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন কর্তৃপক্ষ। কারণ আলুর দাম বাড়ুক বা কমুকমিড-ডে মিলের বরাদ্দ বাঁধা। অনেক লড়াইয়ের পর প্রাথমিকে ৩ টাকা ৩৩ পয়সা থেকে বেড়ে মিড-ডে মিলের বরাদ্দ হয়েছে ৩ টাকা ৫১ পয়সা (পঞ্চম-অষ্টম শ্রেণির ক্ষেত্রে একটু বেশি)। এখন আলু যত দামেই কেনা হোক না কেন, একটি পয়সাও বেশি মিলবে না সর্বশিক্ষা মিশন থেকে।
তাই কেউ কুমড়োর ঘণ্ট রাঁধছে তো কোনও স্কুল সয়াবিন দিয়ে সারছে মিড-ডে মিল। |
জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া পাতকাটার বক্সিপাড়া বিএফপি প্রাথমিক স্কুলের মেনু তালিকা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার ভাতের সঙ্গে আলু-সয়াবিনের ঝোল ও একটা ভাজা থাকার কথা। তরকারি আর ভাজাতে অন্তত ১০ কেজি আলু প্রয়োজন ছিল। এদিকে, সকালে গ্রামের বাজারে ২২ টাকা দরে আলু বিক্রি হয়েছে। তাই মেনু বদলে হয়েছে শুধু খিচুড়ি। তমলুকের কাখরদা নারায়ণচন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমরেশ সামন্ত জানান, আগে গড়ে দিনে ৯ কেজি আলু আর ৩ কেজি অন্য সব্জি কেনা হত। এ দিন ৬ কেজি আলু আর ২ কেজি সব্জি কেনা হয়েছে। কালনা মহারাজা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রীমন্ত ঘোষ বলেন, “বাজারে সব্জিরও দামও বেশি। তাই সয়াবিন বা অপেক্ষাকৃত সস্তা সব্জি পাতে দেওয়া হচ্ছে।” অনেক শিক্ষক আবার আলু কিনতে ভিড় জমিয়েছেন সরকারি স্টলে। রামপুরহাট বাজারে লাইন দিয়ে সরকারি দরে আলু কেনার পর নিড়িষা প্রাথমিক স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, “কোথাও আলু পাচ্ছি না। এতক্ষণ দাঁড়িয়েও দু’কেজি পেলাম।” বাজারে আলু না পেয়ে এ দিন মিড-ডে মিলই বন্ধ রাখা হয় শালবনি ব্লকের ভাদুতলা হাইস্কুলে। প্রধান শিক্ষক অমিতেশ চৌধুরী বলেন, “আজ প্রথম স্কুল খুলেছে। বাজারে আলুও পাওয়া যায়নি। তাই মিড-ডে মিল বন্ধ।” |