নির্বাচিত যে সব প্রতিনিধি দল ছেড়ে যাচ্ছেন, দলের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের পদও ছাড়া উচিত বলে দাবি তুলল কংগ্রেস। সাম্প্রতিক কালে বাম এবং বিশেষত কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলের যোগদানের হিড়িক চলছে। যাঁরা দল বদলাচ্ছেন, তাঁদের বেশির ভাগই কাউন্সিলর বা পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্য। এক দলের হয়ে জিতে অন্য দলে চলে গিয়ে সেই পদ ধরে রাখা ঘোরতর অনৈতিক কাজ বলে কংগ্রেসের মত। এই সমস্যা মোকাবিলায় নির্বাচন কমিশন যাতে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়, সেই দাবিও করেছেন কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া।
প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি মানসবাবুর দাবি, “আগামী দিনে পঞ্চায়েত এবং পুরসভার আইন সংশোধন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর চিন্তাভাবনা করা উচিত। তা না-হলে অনৈতিক রাজনীতি এবং দলবদলুদের খেলা বন্ধ করা যাবে না! পদত্যাগ না-করে যাঁরা অন্য দলে যাচ্ছেন এবং যাঁরা তাঁদের নিচ্ছেন, উভয়েই মানুষকে অপমান করছেন!” তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে আসার সময়ে অরুণাভ ঘোষ বিধায়ক-পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। একই ভাবে দল ছাড়ার সময় বিধায়ক পদও ছেড়ে তৃণমূলে গিয়ে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় উপনির্বাচনে জিতে এসেছিলেন। এই দুই দৃষ্টান্ত সামনে রেখেই মানসবাবুর মন্তব্য, “পশ্চিমবঙ্গে দলবদলুর খেলা আমদানি করেছে তৃণমূলই! তারা তো এত নৈতিকতার কথা বলে! তারা কেন এই অনৈতিক কাজ করছে?”
তৃণমূল অবশ্য দল ভাঙানোর খেলা অব্যাহতই রেখেছে। পদত্যাগের বিষয়টিও তৃণমূল নেতৃত্ব ছেড়ে দিতে চেয়েছেন সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের ‘স্বাধীন মতামতে’র উপরেই। কংগ্রেস পরিচালিত কাটোয়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান অমর রাম, দু’জন প্রাক্তন কাউন্সিলর এবং তাঁদের বেশ কিছু সমর্থক বৃহস্পতিবারই আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তৃণমূল ভবনে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় যখন ওই কংগ্রেস-ত্যাগীদের দলে স্বাগত জানাচ্ছিলেন, তখন তাঁর পাশেই ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। কাটোয়াতেই ২৪ ঘণ্টা আগে যিনি কংগ্রেস কর্মীদের হাত কেটে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন! মুকুলবাবু জানিয়েছেন, কাল, শনিবার কাটোয়ায় তৃণমূলের সভায় আরও কিছু মানুষ তাঁদের দলে যোগ দেবেন।
ভাইস-চেয়ারম্যান দল ছাড়ায় কাটোয়া পুরসভার চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “লোকসভা ভোটে টিকিটের লোভ দেখিয়ে তাঁকে তৃণমূলে নেওয়া হয়েছে শুনছি।” |