সংগঠনকে চাঙ্গা করতে পদযাত্রার পথে কংগ্রেস
কটা কর্মসূচির ঠিকমতো প্রস্তুতির আগেই অন্য কর্মসূচির পরিকল্পনা! তা নিয়েই সরগরম রাজ্য কংগ্রেস।
আগামী ১৮-৩০ নভেম্বর পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে কংগ্রেসের ‘জেল ভরো’ কর্মসূচি ইতিমধ্যেই ঘোষিত। কিন্তু দলের জেলা নেতৃত্বের অনেকেরই অভিযোগ, ওই কর্মসূচির সাংগঠনিক প্রস্তুতি আশাব্যঞ্জক নয়। এর উপরে দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীর পরামর্শে আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে রাজ্য জুড়ে ‘মুক্তি পদযাত্রা’র প্রস্তুতি শুরু করেছে কংগ্রেস। এর মাঝে ২২ নভেম্বর কয়েকটি জেলায় পুরভোট। এই পরিস্থিতিতে পিঠোপিঠি কর্মসূচি নিয়ে আতান্তরে পড়তে হতে পারে বলে আশঙ্কা কয়েকটি জেলার।
তবে কংগ্রেস ছেড়ে যে ভাবে তৃণমূলে চলে যাওয়ার হিড়িক চলছে, তাতে এই ধরনের কর্মসূচি কত দূর সাড়া ফেলবে, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে দলের একাংশে। যদিও ভাঙন-দুর্গত নদিয়া বা বীরভূমের মতো জেলার নেতৃত্ব এখনও বিশ্বাস করছেন, নেতৃস্থানীয় বেশ কয়েক জন ছেড়ে গেলেও কংগ্রেসের কর্মীরা এখনও দলেই রয়েছেন। পরপর কর্মসূচিতে বরং সংগঠনের সুবিধাই হবে।
তবে ভোটের সমস্যা বুঝে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য ‘জেল ভরো’ কর্মসূচিতে কিছু অদলবদলের নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “যে জেলাগুলিতে ভোট রয়েছে, তাদের আপাতত জেল ভরো কর্মসূচি থেকে বাদ রাখা হচ্ছে। ভোট মিটলে সেখানে ওই কর্মসূচি হবে।” তাঁর ব্যাখ্যা, ভোট মেটার পরেই ১ ডিসেম্বর থেকে প্রথম দফার পদযাত্রা শুরু হবে। পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া হয়ে কলকাতার শহিদ মিনারে এসে শেষ হওয়ার কথা ওই পদযাত্রার। সেখানে সভাও হবে।
রাহুলকেও পদযাত্রায় আনার চেষ্টা চলছে বলে জানাচ্ছেন প্রদীপবাবু। তাঁর আশা, “গা ঝাড়া দিয়ে কর্মীদের নিয়ে রাস্তায় নামলে জনসংযোগের পাশাপাশি দলের ভিতও মজবুত হবে। এর সুফল কংগ্রেস পাবে লোকসভা ভোটে।” স্থানীয় নেতৃত্বের পাশাপাশি ওই মিছিলে পর্যায়ক্রমে সামিল হবেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের কেউ, কোনও কেন্দ্রীয় নেতা বা মন্ত্রীরাও। প্রথম দফার পরে বারাসত থেকে বহরমপুর, পুরুলিয়া থেকে বর্ধমান এবং উত্তরবঙ্গে দু’টি পদযাত্রা করার পরিকল্পনা নিচ্ছে কংগ্রেস। তবে তার দিনক্ষণ এখনও স্থির হয়নি।
দলের ভাঙন ঠেকাতে কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে পথে নামানোই যে একমাত্র উপায়, তা বোঝেন জেলা নেতৃত্ব। কিন্তু জেলা স্তরে ধারাবাহিক কর্মসূচির মধ্যে দীর্ঘদিন নেই কংগ্রেস। এই অভিযোগ বিভিন্ন সূত্রে জানার পরেই রাহুল প্রদেশ নেতৃত্বকে পদযাত্রা করে জনসংযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির চেষ্টা করতেও নির্দেশ দিয়েছেন। সেই পরামর্শ মেনেই দলের বিধায়ক, সাংসদদের নিয়ে পাঁচ দফায় রাজ্যের এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ওই পদযাত্রায় রাজ্য সরকারের সন্ত্রাস, অপশাসনের বিরুদ্ধে সরব হবে কংগ্রেস। রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসি-র প্রতিনিধি শাকিল আহমেদ খানের কথায়, “বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে পদযাত্রায় এনে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতির কথা বলা হবে। গণতন্ত্র যে ভুলুন্ঠিত, মানুষকে বোঝাবে কংগ্রেস।”
ভাঙনের বাজারে এই কর্মসূচি কংগ্রেসে কতটা সাড়া ফেলবে, জেলায় জেলায় প্রশ্ন সেটাই। নদিয়ার জেলা সভাপতি শঙ্কর সিংহের দাবি, প্রদেশ নেতৃত্বের আরও তৎপর হতে হবে। তাঁর বক্তব্য, “অগণিত নেতার ভিড় না-করে যাঁরা সংগঠন তৈরিতে দক্ষ নেতা, তাঁদের একজোট করে পথে নামা উচিত কংগ্রেসের। কে দল ছেড়ে গেল, তাতে কংগ্রেসের কিছু যে আসে যায় না, বোঝা যাবে তা হলেই! বোঝা যাবে কংগ্রেসের ভোটাররা এখনও দলের সঙ্গেই রয়েছেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.