পাঁচ মাস পার, কামদুনিতে ফুটবল ম্যাচ করল পুলিশ
পাঁচ মাস আগে যে গ্রামে গণধর্ষণের পরে খুন করা হয়েছিল কলেজছাত্রীকে, বৃহস্পতিবার সেই কামদুনিতে পুলিশের আয়োজিত ফুটবল প্রতিযোগিতায় খেললেন গ্রামবাসীদের একাংশ। আজ, শুক্রবার, ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র কামদুনি যাচ্ছেন ফাইনাল ম্যাচের পুরস্কার দিতে। এলাকার এক তৃণমূল নেতা দাবি করেন, ওই খেলা থেকে বাছাই ছেলেরা কলকাতার বড় ক্লাবে খেলার সুযোগ পাবে।
বৃহস্পতিবার ছিল কামদুনির ছাত্রীর মৃত্যুদিন। গত মাসের মতো, এ বারও তৃণমূল-প্রভাবিত শান্তিরক্ষা কমিটি, আর কামদুনি প্রতিবাদী মঞ্চ আলাদা মিছিল করল। মৌসুমী কয়ালের নেতৃত্বে প্রতিবাদী মঞ্চের মিছিলে শরিক হল রাজ্যের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক সংগঠন এবং বিজেপিও। পুলিশের ব্যারিকেডে কামদুনি মোড়ের শহিদবেদীতে মোমবাতি, প্রদীপ জ্বালিয়ে মৃত ছাত্রীকে স্মরণ করল দু’পক্ষই।
শান্তিরক্ষা কমিটির মিছিল। কাছেই তখন চলছে কামদুনি প্রতিবাদী মঞ্চের
উদ্যোগে আয়োজিত মৃতার স্মরণসভা। —নিজস্ব চিত্র।
গত ৭ জুন গণধর্ষণের পরে খুন করা হয় কামদুনির দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে। তারপর থেকে দোষীদের শাস্তি ও এলাকায় নিরাপত্তার দাবিতে প্রতি মাসের ৭ তারিখ মিছিল করে প্রতিবাদী মঞ্চ। গণধর্ষণ ও মৃত্যুর পর গ্রামবাসীরা ওই মঞ্চ তৈরি করেছিলেন, দ্রুত বিচারের জন্য রাজ্য সরকারের উপর চাপ তৈরির উদ্দেশে। তখন তাঁদের সঙ্গে সামিল ছিলেন মৃতার বাবা-মা এবং দুই ভাইও।
মৃতার পরিবার সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে রাজ্য সরকারের দেওয়া চাকরি গ্রহণ করলে প্রতিবাদী মঞ্চের সঙ্গে তাঁদের দূরত্ব তৈরি হয়। পাল্টা সংগঠন তৃণমূল-প্রভাবিত শান্তিরক্ষা কমিটিতে যোগ দেয় মৃতার পরিবার। ৬ অক্টোবর কামদুনিতে রাজ্যের বেশ কয়েক জন মন্ত্রীর উপস্থিতিতে রক্তদান শিবির করে শান্তিরক্ষা কমিটি। কিন্তু পরদিন, ৭ অক্টোবর প্রতিবাদী মঞ্চ আয়োজিত মিছিল-সমাবেশে সামিল হন অনেকে।
এ বার আগেভাগেই ৭ নভেম্বর মিছিল ও স্মরণসভার আয়োজন করে শান্তিরক্ষা কমিটি। সেই সঙ্গে ফুটবল ম্যাচেরও আয়োজন হয়। যোগ দেয় কামদুনি ও আশেপাশের এলাকার আটটি দল। ওই মাঠ থেকেই কমিটির মিছিল যায় কামদুনি মোড়ে। সেই সময় কামদুনি প্রাথমিক স্কুলের সামনে জড়ো হয়েছে প্রতিবাদী মঞ্চ। নীরবতা পালনের পরে সেখানে মৃতার ছবিতে ফুল ছড়িয়ে দেন মঞ্চের সভাপতি ভাস্কর মণ্ডল, কামদুনি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ মুখোপাধ্যায়রা।
কামদুনি প্রতিবাদ মঞ্চের মৌনী মিছিল। বৃহস্পতিবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ।
শান্তিরক্ষা কমিটির স্মরণসভায় ছিলেন বারাসতের তৃণমূল নেতা অরবিন্দ দাশগুপ্ত। দিদির ছবিতে মোমবাতি জ্বালায় মৃতার দুই ভাই। অরবিন্দবাবু বলেন, ‘‘ওই ফুটবল খেলা থেকে বাছাই খেলোয়াড়দের ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র কলকাতার ভাল ক্লাবে প্রশিক্ষণ ও সুযোগের ব্যবস্থা করবেন।’’ দু-পক্ষ একই সঙ্গে প্রতিবাদ সভা, মিছিল করা গেল না কেন তার উত্তরে জেলা মহিলা তৃণমূল নেত্রী, দুর্গানগরের বাসিন্দা রিঙ্কু দে বলেন, ‘‘ওদের ওখানে সব তো বহিরাগত।’’
প্রতিবাদী মঞ্চের গ্রামবাসীদের পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্রীদেরও দেখা যায়। মৌসুমী কয়াল বলেন, ‘‘আমাদের দাবি, দোষীদের ফাঁসি, এলাকায় নিরাপত্তা। আর এমন ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাব।’’
কমিটির এক সদস্যের মোটর সাইকেলে তখন মঞ্চের মিছিলের পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছেন মৃতার দুই ভাই।

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.