বৈঠক পূর্বে
বোরো চাষে সাহায্যে মিনিকিট বিলির সিদ্ধান্ত
ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের বোরো ধান চাষে সাহায্যের জন্য বিনামূল্যে প্রায় ৬০ হাজার প্যাকেট বীজধান ও সার দেবে কৃষি দফতর। বন্যা পরবর্তী পুনর্গঠনের কাজ নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় তমলুকে জেলাশাসকের দফতরে সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতে প্রশাসনিক বৈঠকে পাঁশকুড়া, তমলুক, নন্দকুমার ব্লকের বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, তমলুক ও নন্দকুমার ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও জলমগ্ন। জল অত্যন্ত ধীরগতিতে নামায় ওই সব এলাকায় এখনও প্রায় ১০০টি ত্রাণ শিবির চলছে। সেখানে ২৪ হাজার দুর্গত বাসিন্দা রয়েছে। এ দিন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় জলমগ্ন এলাকায় পাম্প মেশিন বসিয়ে জল দ্রুত বের করার জন্য সেচ দফতর ব্যবস্থা নেবে। এছাড়াও জলমগ্ন এলাকায় বিভিন্ন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চলা সরকারি ত্রাণ শিবিরগুলি আগামী রবিবার পর্যন্ত খোলা থাকবে। আগামী সোমবার থেকে ওই সব বিদ্যালয়গুলিতে পঠনপাঠন শুরু করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে। তাই প্রয়োজনে বিকল্প জায়গায় ত্রাণ শিবির স্থানান্তর করার কথাও বলা হয়। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত গরীব পরিবারগুলিকে আগামী একমাস ধরে চাল, ডাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এজন্য গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি গরীব পরিবারের তালিকা তৈরি করবে। পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সাগর সিংহ বলেন, “বন্যা কবলিত এলাকার জল দ্রুত বের করার জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলিতেই এলাকার অধিকাংশ ত্রাণ শিবিরগুলি চলছে। ওই বিদ্যালয়গুলিতে দ্রুত পঠন পাঠন শুরু করতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে কিছু ত্রাণ শিবির স্থানান্তর করা হবে। বন্যা কবলিত এলাকার জল নামলেই পানীয় জলের নলকুপ সংস্কারের কাজ শুরু করা হচ্ছে।” জলমগ্ন এলাকায় যে সমস্ত স্কুল পড়ুয়াদের বইপত্র ক্ষতি হয়েছে তাঁদের সবাইকে বিনামূল্যে বই, খাতা, পেন দেওয়া হবে বলে আগেই জানিয়েছেন তমলুকের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। এছাড়াও তমলুক ও নন্দকুমার ব্লকের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সমস্ত বিদ্যালয় পড়ুয়াকে স্কুলব্যাগও দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
শুভেন্দু বলেন, “বিদ্যালয়গুলিতে পড়ুয়াদের পঠন পাঠন দ্রুত শুরুর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয় ভবনগুলি সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্য করা হবে।”
এ দিনের বৈঠকে বোরো চাষ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। দ্রুত জল না নামলে বোরোচাষের বীজতলা তৈরি করতে গভীর সঙ্কটে পড়বে কৃষকরা। তাই যেসব এলাকায় আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জল কমবে না সেখানে সেচ দফতর পাম্প বসিয়ে জল বের করার জন্য ব্যবস্থা নেবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বোরোচাষে কৃষকদের সাহায্যের জন্য তমলুক ব্লকে ২৭ হাজার, পাঁশকুড়া ব্লকে ১৮ হাজার ও নন্দকুমার ব্লকে ১৫ হাজার মিনিকিট বিনামুল্যে বিলি করা হবে। প্রতিটি মিনিকিটে থাকবে ৬ কিলোগ্রাম উন্নতমানের বীজধান ও ১০ কিলোগ্রাম এনপিকে সার। এছাড়াও কৃষকদের সাহায্যের জন্য ভর্তুকি দামে বীজধান সরবরাহ করা হবে। এজন্য কৃষি দফতর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। জেলা পরিষদের কৃষি-সেচ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ বুদ্ধদেব ভৌমিক জানান, বন্যা কবলিত এলাকা ছাড়াও জেলার যেসব এলাকায় অতি বর্ষণের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মিনিকিট দিয়ে সাহায্য করা হবে। এজন্য সব মিলিয়ে জেলায় মোট ১ লক্ষ ৮৫ হাজার মিনিকিট বিলি করা হবে। এছাড়াও জেলার ৬টি সরকারি কৃষি খামারে বোরোধানের বীজতলা তৈরি করা হবে। যেসব এলাকায় জল নামতে দেরি হওয়ার কারণে কৃষকরা বীজতলা তৈরি করতে পারবে না, সেইসব এলাকায় গরীব কৃষকদের বীজতলা দিয়ে চাষে সাহায্য করা হবে। এ ছাড়াও পান ও ফুল চাষিদের সাহায্যের জন্যও পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.