বেসরকারি চ্যানেলের অডিশনকে কেন্দ্র করে স্টুডিও ভাঙচুরের ঘটনায় শঙ্কর মান্না নামে এক যুবককে গ্রেফতার করল দমদম থানার পুলিশ। তাঁর বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে। পুলিশ জানায়, শঙ্কর তাঁর বান্ধবীর অডিশনের জন্য বুধবার দমদমের পূর্ব কমলাপুরের এইচএমভি স্টুডিওতে আসেন। অভিযোগ, ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছে, শঙ্কর স্টুডিও ভাঙচুরে যুক্ত ছিলেন। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজেও তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
বুধবার সন্ধ্যায় দমদমের এইচএমভি স্টুডিওতে একটি বেসরকারি চ্যানেলের অডিশনে গণ্ডগোলকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর হয়। উন্মত্ত জনতা স্টুডিওর তিন নম্বর গেট খুলে শু্যটিংয়ের জায়গায় ঢুকে পড়েন। ভাঙা বাঁশের টুকরো নিয়ে ক্যামেরা, মনিটর, প্রজেক্টার, এলসিডি টিভি, অন্যান্য যন্ত্রাংশ এবং মেক আপ রুমের বিভিন্ন জিনিস ভাঙতে শুরু করেন। স্টুডিওর বাইরে এইচএমভি-র ৮টি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। পদপিষ্ট হয়ে গুরুতর জখম হয় দুই শিশু। আহত হন আরও চার জন।
অভিযোগ, মাস কয়েক আগে দমদমের ক্রাইস্ট চার্চ স্কুলের ভাঙচুরে যেমন পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা ছাড়াও বাইরের লোকজন ঢুকে পড়েছিলেন, তেমনই বুধবারের ঘটনাতেও অডিশন দিতে আসা মহিলারা ছাড়াও বহু বহিরাগত এসে ভাঙচুর করেন। পুলিশ জানিয়েছে, বহিরাগতদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। অবশ্য প্রশ্ন উঠেছে, বুধবার ওই স্টুডিওর অডিশনে কত মহিলা আসতে পারেন, তার সঠিক তথ্য চ্যানেল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানিয়েছিল কি না। |
ওই চ্যানেলের বিজনেস হেড সুজয় কুট্টি বলেন, “অডিশনের জন্য দমদম থানায় অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। সব রকমের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে লিখিত ভাবে অনুরোধও জানানো হয়েছিল।” যদিও ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান দেবাশিস বেজ বলেন, “অনুমতি ছিল ঠিকই, কিন্তু সব তথ্য সঠিক ভাবে পাইনি। চ্যানেল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যে কিছু অসঙ্গতি ছিল।”
পুলিশ জানিয়েছে, অডিশনের দিন প্রচুর মহিলার জমায়েত হওয়ায় সকাল থেকেই ওই স্টুডিওর তিন নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকায় বহু পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এমনকী, অডিশনের আগের রাতেও পুলিশ টহল দিয়েছে। এলাকার কাউন্সিলর বরুণ নট্ট বলেন, “অডিশনের আগের রাতেই কয়েক হাজার মহিলা প্রতিযোগী তাঁদের অভিভাবকদের সঙ্গে স্টুডিওর সামনে লাইন দিয়েছিলেন। আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের খাবারের ব্যবস্থাও করি। অডিশন নেওয়া হবে না, এ রকম একটা খবর সন্ধ্যার দিকে রটে যেতেই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।”
আরও প্রশ্ন উঠেছে, এত সংখ্যক মহিলা প্রতিযোগী যেখানে জড়ো হয়েছিলেন, সেখানে পর্যাপ্ত মহিলা পুলিশ ছিল কি? স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, যথেষ্ট মহিলা পুলিশ না থাকায় যখন গণ্ডগোল চরমে ওঠে, তখন পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। যদিও দমদম থানার পুলিশ জানিয়েছে, শুধু দমদম থানার পুলিশই নয়, ব্যারাকপুর কমিশনারেটের হেড কোয়ার্টার থেকেও মহিলা পুলিশ পাঠানো হয়। দমদম থানা সংলগ্ন নিমতা ও এয়ারপোর্ট থানা থেকেও পুলিশ নিয়ে আসা হয়।
|