ডান হাত দিয়ে ধরা বাঁ হাত। জখম সেই হাত থেকে গলগল করে রক্ত বেরোচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে টালা ব্রিজের কাছে ওই দৃশ্য দেখে স্বভাবতই অবাক হয়েছিলেন বাসস্টপে অপেক্ষারত যাত্রীরা। জানা যায়, চলন্ত বাসে ছিনতাইয়ে বাধা দিয়ে দুষ্কৃতীর ধারালো অস্ত্রে জখম হয়েছেন ওই যুবক।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে টালা ব্রিজের উপরে। আহত ওই যুবকের নাম জিতু তিওয়ারি। তাঁর বাড়ি কাশীপুরের খগেন চ্যাটার্জি রোডে। তিনি ধর্মতলায় একটি দোকানে কাজ করেন। পুলিশ জানায়, জিতুর বাঁ হাতের ক্ষতস্থানে আটটি সেলাই পড়েছে। জিতুর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা যায়নি।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, জিতু এ দিন সকালে কাশীপুরের চিড়িয়ামোড় থেকে ৭৮ রুটের একটি বেসরকারি বাসে ওঠেন। ভিড় থাকায় পিছনের দরজার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।
এ দিন বাড়িতে বসে জিতু বলেন, “বাসটি পাইকাপাড়া ছাড়ার পরেই টের পাই, কেউ আমার পিছনের পকেট থেকে মানিব্যাগটি তুলে নিতে চাইছে। আমি ঘুরে দেখি, এক যুবক আমার পিছনে দাঁড়িয়ে ওই কাজ করছে। আমি চিৎকার করে এক ধাক্কা মারি ছেলেটিকে। তাতে ওই যুবক কিছুটা পিছিয়ে যায়।” |
তাঁর অভিযোগ, ওই সময়ে বাসের অন্য যাত্রীরা কন্ডাক্টরকে বলেন বাস থামাতে। কিন্তু চালক বাসটি থামাননি।
পুলিশের কাছে জিতু অভিযোগ করেন, টালা ব্রিজের উপরে বাসটি থামার ঠিক আগে তিনি টের পান, তাঁর বাঁ হাতের কব্জির ঠিক উপরে ওই যুবক ধারালো কোনও অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছে। জিতু চিৎকার শুরু করলে ভিড় ঠেলে চলন্ত বাস থেকে নেমে পালিয়ে যায় ওই যুবক।
জিতু বলেন, “আমার হাত দিয়ে এত রক্ত বেরোচ্ছিল যে, ওই দুষ্কৃতীর পিছনে আর ধাওয়া করতে পারিনি।” বাসের অন্য যাত্রী বা কন্ডাক্টর, কেউই ওই দুষ্কৃতীকে ধরার চেষ্টা করেননি বলে জিতুর অভিযোগ। ঘটনার পরে টালা ব্রিজের কাছে পুলিশ কিয়স্কে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও পুলিশ দুষ্কৃতীকে ধরতে তৎপর হয়নি বলে প্রতক্ষ্যদর্শীদের একাংশের অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পরে বাসের অন্য কয়েক জন যাত্রীর সাহায্য নিয়ে হাসপাতালে যান জিতু। দিনেদুপুরে যাত্রী-বোঝাই বাসে এমন ঘটনা ঘটায় হতবাক ওই যুবক। তিনি বলেন, “প্রতি দিন বাসে যাতায়াত করি। দিনের বেলায় এ রকম ঘটনা ঘটবে, ভাবতেও পারিনি।” |