সরকারি বীজে ফলন হয়নি জলপাইগুড়ি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায়
ঝলসায় ক্ষতিগ্রস্ত ধান চাষিরা
রকারের দেওয়া ধান চাষে ফলন না পেয়ে চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। জলপাইগুড়ি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় ধানের শিস বার হলেও ধানের ভেতর চাল না থাকায় কৃষি দফতরের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন কৃষকরা। ধান রক্ষা করতে কৃষি কর্তাদের পরামর্শে প্রচুর টাকার ওষুধ ব্যবহার করলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। ক্ষতিপূরণের দাবিতে সরব হয়েছে ধূপগুড়ি, ফালাকাটা সহ জেলার কয়েকটি এলাকার কৃষকেরা। ধানের ফলন না পেয়ে আলু চাষ কী ভাবে করবেন আর কী ভাবে সারা বছর পরিবারে খাবারের সংস্থান হবে, সে চিন্তা ঘুম কেড়েছে কৃষকদের। রাজ্য কৃষি প্রতি মন্ত্রী বেচারাম মান্না অবশ্য ওই ঘটনা নিয়ে কৃষি আধিকারিকদের তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার কথা জানান। তিনি বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত চাষির পাশে সরকার রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা ব্লক কৃষি আধিকারিকদের কাছে আবেদন করলে রাজ্য ক্ষতিপূরণ দিতে চেষ্টা করবে।”
ঝলসা রোগে আক্রান্ত ধান। ধূপগুড়িতে রাজকুমার মোদকের তোলা ছবি।
সবচাইতে খারাপ অবস্থা ধূপগুড়ি ব্লকের। ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। তার মধ্যে ৬০০ হেক্টর জমিতে কৃষি দফতরের দেওয়া ‘স্বর্ণমাসুরি’ ও ‘স্বর্ণকমল’ প্রজাতির ধান চাষ হয়েছে। অন্য জমির ধান চাষ ঠিক হলেও কৃষি দফতরের বিলি করা দুই শ্রেণির ধান গাছ গুলি ঝলসা রোগে আক্রান্ত হয়। গত ১৫ দিন ধরে ওই অবস্থা চলছে।
ওই গ্রামগুলিতে সোনালি রঙের শিষ বেরলেও ধানের ফলন হয়নি। ফালাকাটা ব্লকের ১০০ হেক্টর জমিতে কৃষি দফতর ওই চাষ করতে দিলেও সেখানে ঝলসা রোগের আক্রমণে বহু জমির ফলন তলানিতে ঠেকেছে। দুই ব্লকের কৃষি আধিকারিক অবশ্য ওই রোগের কারণ হিসাবে ভিন্ন মতামত জানান। ফালাকাটা কৃষি আধিকারিক আবু বক্কর সিদ্দিকি বলেছেন, “বীজের সমস্যার কারণে ওই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে মনে হচ্ছে।” ধূপগুড়ি ব্লক কৃষি আধিকারিক দেবাশিস সর্দার এ জন্য জলবায়ুর তারতম্য দায়ী করেছেন। তাঁর কথায়, “সরকারি বীজ দিয়ে চাষ করা বেশির ভাগ জমিতে এ বার ফলন মার খেয়েছে। আবহাওয়ার তারতম্যের জন্য এই ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।”
মাগুরমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫০ হেক্টর জমিতে সরকারি বীজের ধান চাষ করেছেন ৮২ জন চাষি। প্রতিটি জমির হাল এক। যারা বাজার থেকে বীজ কিনে ধান চাষ করেছেন তারা ঠিক ফলন পেয়েছেন বলে জানান। গ্রামের কৃষি প্রযুক্তি সহায়ক স্বপন সাহা বলেন, “কৃষকরা আমার কাছে কৈফিয়ত চাইছেন। কী ভাবে বোঝাব বুঝতে পারছি না। চাষিরা জানান, জুনে কৃষি আধিকারিক বৈঠক করে অধিক ফলনের ধান বীজের কথা বলেন। সরকার চাষাবাদের জন্য সার ও ওষুধ, এমনকী চাষাবাদের খরচ দেবে বলেএ জানায়। এ ধরনের বিনা খরচে ধান চাষের অভিজ্ঞতা না থাকায় অনেকে উৎসাহিত হয়ে চাষ শুরু করেন। জমির মধ্যে কৃষি দফতর বোর্ড টাঙিয়ে দেয়। গাছ দেখে আশায় ছিলেন কৃষকরা।
তবে ওই ধানের শীষের রং হলুদ হওয়ার পরেই ভুল ভেঙে যায় তাঁদের। এলাকার কৃষক নজরুল ইসলামের ১৫ বিঘা জমি। তিনি অন্য বার বাজার থেকে বীজ কিনে ধান চাষ করলেও এ বার কৃষি আধিকারিকেরা বেশি ধান ফলবে বোঝানোর পরে তিনি নিজের ওই জমিতে স্বর্ণমাসুরি এবং স্বর্ণকমল ধানের চাষ করেছেন। নজরুল বলেন, “আধিকারিকদের কথা শুনে আমার পাশাপাশি গ্রামের বাকিদের ওই ধান চাষ করার জন্য বলি। তাঁরা বলেছিলেন ‘এমনি ধান বিঘায় ২ মন ফললে এই ধান প্রতি বিঘায় ২৫ মন ফলবে’।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.