পূর্বে পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষোভ
২০ টাকায় জ্যোতি আলু বাজারে
রকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি মূল্যে আলু বিক্রি হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন বাজারে। খোদ জেলা সদর তমলুক শহরের বড়বাজারে জ্যোতি আলু সরকার নির্ধারিত ১৩ টাকার বদলে বিক্রি হচ্ছে ১৬-১৭ টাকা কেজি দরে। আর চন্দ্রমুখী আলু ১৫ টাকার পরিবর্তে ১৮-২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এগরা, কাঁথিতে জ্যোতি আলুই বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। অথচ বেশি দামে আলু বিক্রির অভিযোগ মানতে নারাজ পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এমনকী পাশের পশ্চিম মেদিনীপুরেও যেখানে বেশি দামে আলু বিক্রির জন্য ধর-পাকড় চলছে, সেখানে পূর্বে এখনও এক জনকেও ধরা হয়নি। পুলিশ-প্রশাসনের এই উদাসীন ভূমিকায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে জেলায়। এগরার এক স্কুলশিক্ষক বলেন, “সকালে সংবাদপত্রে দেখতে পাচ্ছি কলকাতা-সহ রাজ্যের অন্য জেলাগুলিতে বেশি দামে আলু বিক্রির জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাশের জেলাসদর মেদিনীপুর শহরে দু’টো কাউন্টারে সরকারি দামে আলু বিক্রি হচ্ছে। অথচ, আমাদের জেলায় কোথাও কোনও উদ্যোগ নেই। সবাই যেন ঝিমিয়ে রয়েছে।”
বেশি দামে যে আলু বিক্রি হচ্ছে, তা মেনে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরাও। তমলুকের বড়বাজারের ব্যবসায়ী শচীন হাজরা বলেন, ‘‘আমরা যে দামে আলু কিনে এনেছি, তাতে এর চেয়ে কম দামে আলু বিক্রি করা সম্ভব নয়। তার উপর এখন আবার পাইকারি ব্যবসায়ীরা আমাদের আলু দিতে চাইছেন না। প্রশাসন আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও কিছু করার নেই।”
জেলার অন্যত্র অবশ্য আরও বেশি দামে আলু বিক্রি হচ্ছে। নন্দকুমার ব্লকের ব্যবত্তারহাটে মঙ্গলবার চন্দ্রমুখী আলু ২০ টাকা কেজি দরে কিনেছেন বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা অরূপকুমার ভৌমিক। কাঁথি বাজারে জ্যোতি আলু ২০ টাকা ও চন্দ্রমুখী ২৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এগরায় বুধবার জ্যোতি আলু ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। মেচেদায় জ্যোতি আলু ১৮ ও চন্দ্রমুখী ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বাজারে।
জেলার বিভিন্ন জায়গায় যে বেশি দামে আলু বিক্রি হচ্ছে, তা মেনে নিয়েছে জেলা কৃষি বিপণন দফতর। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিক খগেন্দ্রনাথ ঘোড়াই বলেন, “একটু বেশি দামেই আলু বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রশাসনের তরফে চেষ্টা করা হচ্ছে। মূলত পরিকাঠামোর সমস্যার জন্য এখানে সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।”
জেলা পুলিশ সুপার সুকেশ কুমার জৈন অবশ্য বলেন, “জেলা এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের তরফে প্রতিদিন একাধিক দল বিভিন্ন বাজারে গিয়ে আলুর দাম নিয়ে খোঁজ নিচ্ছে। সব জায়গাতেই সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি হচ্ছে। কোথাও বেশি দাম নেওয়ার অভিযোগ পাইনি।” পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার যে অভিযোগ উঠেছে তা নিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, “বেশি দামে আলু বিক্রির অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা জেলার ওড়িশা সীমানা এলাকায় নিয়মিত নজরদারিও রাখছি। তবে গ্রেফতার করলেই কি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে?” বস্তুত বুধবারও জেলা পুলিশের চারটি দল বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালায়। কিন্তু পুলিশ দেখলেই পালাচ্ছেন আলু ব্যবসায়ীরা। এদিন সন্ধ্যায় নোনাকুড়ি বাজারে পুলিশের একটি দল হানা দিলে পালিয়ে যান আলু ব্যবসায়ীরা। তা দেখে স্থানীয় এক বাসিন্দার প্রতিক্রিয়া, “এ বার সমস্যায় পড়ব আমরা। আজ যা হল, তাতে বাজারে আলু বিক্রেতারা আসবেন না আর। সরকারি ভাবে আলু বিক্রিও হচ্ছে না। যা গতিক, তাতে আলুর বদলে পেঁপে দিতে হবে ঝোলে।”
তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আমাদের জেলার অধিকাংশ বাজারেই সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি হচ্ছে। হলদিয়ার দুর্গাচক-সহ কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বেশি দামে আলু বিক্রির বিষয়টি নজরে এসেছে। যেখানে বেশি দামে আলু বিক্রি হচ্ছে সেখানে পুলিশ-প্রশাসনকে আরও সক্রিয় হতে অনুরোধ করেছি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.